Sunday, 20 October 2019

বিল্টুর ডায়েরী - তৃতীয় পর্ব

সকাল বেলায় স্কুলের প্রার্থণা ব্যাপারটা খুব মজার। পবিত্র বাইবেল থেকে ফাদার, প্রিন্সিপ্যাল বা টিচার, কেউ একজন পড়ে শোনান নীতিশিক্ষার পাঠ – জীবনে কি ভাবে চলতে হবে তার নিয়ম-কানুন। তার মধ্যে এই ক’বছরে শুনে আসছি, প্রভু যিশু বলে যে ভদ্রলোককে সত্যি বলার জন্য ক্রুশে বিঁধে মেরে ফেলা হয়েছিল, তিনি নাকি এই সাঙ্ঘাতিক সত্যি-টা বলে গিয়েছিলেন যে, “শিশুরাই ঈশ্বর”, আর সেটা ফলাও করে প্রায় রোজ আমাদের প্রার্থণার সময়ে মনে করিয়ে দেওয়া হয়। কারণ-টা ঠিক বুঝি না, যে আমাদের এটা মনে করিয়ে দিয়ে লাভ কি! আমাদের কাছ থেকে ঠিক কি আশা করা হচ্ছে, যে আমাদের সকলের ঈশ্বরের মত ক্ষমতা হবে, না কি এমন আচরণ করবে যাতে আমাদের ঈশ্বর মনে হয়। সব থেকে বড় কথা হল, আমরাই যদি ঈশ্বর হই, সব জেনে শুনে, সারাদিন ধরে লেখা-পড়ার ছুতোয় সবাই মিলে আমাদের পিছনে কেন লেগে থাকে কে জানে! এঁরা নিজেরাই এই সব ভুলে যান। সকাল বেলায় নিজেরা তো কিছু ভুল-ভাল প্রমিস করেই, সঙ্গে আমাদের দিয়েও একগাদা মিথ্যে বলিয়ে নেয়, যা কোনোদিনই হয়ে ওঠা সম্ভব নয়, আর এটাই সবথেকে বড় মিথ্যে প্রমিস, “সদা সত্য বলিবে”। আর তার বাইরে শিশুদের ঈশ্বর ভাবা তো দূর, ভালবাসার বদলে মেরে পাট করে দেওয়ার জোগাড়। আমার মনে হয় এই সব ভেবেই প্রভু যীশু বলেছিলেন, “ঈশ্বর এদের ক্ষমা কোরো! এরা জানে না এরা কি করছে!”

সত্যি-মিথ্যের ব্যাপরটা পুরো মাইন্ড-ব্লোয়িং হজবরল। কোন সত্যি যে কখন পরিস্থিতির চাপে মিথ্যে হয়ে যাবে, আর কোন মিথ্যে যে হঠাৎ সত্যি হয়ে উঠবে তার কোনো ঠিক ঠিকানা নেই। দিব্যি সকলে জানত, সূর্য পৃথিবীর চারিদিকে ঘোরে। হঠাৎ একদিন সেটা মিথ্যে হয়ে গেল। সত্যি-টা পুরো উলটো – পৃথিবীই নাকি সূর্যের চারিদিকে ঘোরে। আর এই যে আমাদের মনে হয় পৃথিবী দাঁড়িয়ে আর সূর্য চারিদিকে ঘুরছে, এ সব নাকি ম্যাজিকের মত, যাকে বলে রিলেটিভিটি।

আমার মাঝে মাঝে মনে হয়, আমি এত ছোট হয়ে যা সহজেই বুঝতে পারি, বড়রা, এত বড় হয়েও কিছু বুঝতে পারে না। বড় হয়ে কি যে হয়েছে এদের সব, জানি না। সহজ ব্যাপার-কে অকারণে জটিল করে তোলে। ভাবটা এমন, সব বুঝে ফেলেছে। আসলে কিন্তু বোঝেনি কিচ্ছু। সব বুঝে ফেললে কি আর এরকম সব গুলিয়ে যায় নাকি! আসলে সবটাই ভান।“বোঝা” মানেই শুধু ইংরেজিতে যাকে বলে কি না, ‘বার্ডেন’ বা ‘লোড’। অত বোঝা নিয়ে ধুঁকছে। মাঠে নেমে যে খেলবে, সেটাও একটা প্ল্যানিং এর মধ্যে পড়ে। মন খুলে যে খেলবে সেটাও পারে না।

মানুষ বেশি বুঝে, বেশি প্ল্যানিং করে ফেলেছে বলেই ‘অঙ্ক’ নামে একটা সাঙ্ঘাতিক বিষয় তৈরী হয়েছে। এর উদ্দেশ্য বা লক্ষ্য একটাই, পৃথিবীর সমস্ত আনন্দে থাকা শিশু-কিশোরদের জীবন থেকে আনন্দ কেড়ে নেওয়া। ভাল-মন্দের একমাত্র মাপকাঠি -- অঙ্ক। এই যে আজ অঙ্ক পরীক্ষা। সাত সক্কাল বেলায় টিচার সেজে, এতগুলো ছোট ছোট মানুষের বুদ্ধি মাপতে এসেছে, একটা কোয়েশচেন পেপার দিয়ে। এদের কি বুদ্ধি!কিন্তু এদের চোখে পড়ে না আমরা আরো অনেক কিছু পারি, অঙ্ক করার বাইরে। বড়দের দিনের পর দিন বোকা বানাই। ধরতেও পারে না। হাসি পায় ভাবলেই।

ধাঁ করে মনে পড়ে গেল। তখন আমার বয়েস সাড়ে তিন বছর মত হবে। বাবা-মা-এর সঙ্গে গিয়েছি কলকাতার এক নামকরা স্কুলে ভর্তি হওয়ার ইন্টারভিউ দিতে। আমি তো আনন্দে আত্মহারা! ‘ইন্টারভিউ’ মানে কি তখনো জানি না। ভেবেছিলাম ‘পিকনিক’ গোছের কিছু একটা আনন্দ-ফুর্তির ব্যাপার হবে বুঝি। অনেক বাচ্চা, আর তাদের বাবা-মা-দের ভিড়। উত্তেজনা ধরে রাখতে পারছি না, কখন ‘ইন্টারভিউ’ দেব। অনেক অপেক্ষার পরে ডাক পড়ল। ঠাণ্ডা ঘরে ঢুকেই বুঝতে পারলাম, আমি এতক্ষন যা ভেবে এসেছি, তার সঙ্গে ‘ইণ্টারভিউ’ ব্যাপারটার কোনো মিল নেই। অনেকটা, সেই চেম্বারের মত, যেখানে নার্সরা এসে আমার হাত-পা চেপে ধরে, আর একজন ডাক্তার এসে, ‘ভ্যাকসিন’ দেওয়ার নামে, গায়ের মধ্যে অকারণে ছুঁচ বিঁধিয়ে দেয়।

বাবা-মা যেন বিনয়ের অবতার। বুঝলাম, এদের যত সাহস আর বীরত্ব আসলে নিজের বাড়ির মধ্যে। ‘গুড মর্নিং’ বলতে বলতে ঢুকে দেখলাম, তিন জন বসে। একজনের সঙ্গে ঠিক হাতি নয়, সিন্ধুঘোটকের খানিকটা মিল আছে।আর একজনকে খরগোশের মত দেখতে হলেও, কথা বললে সিংহের মত আওয়াজ বের হয়। আমার কোনো ধারণা ছিল না, যে কোনো মহিলার গলার স্বর, এরকম হতে পারে। আর একজন পুরো উটপাখি। আমার বলা গুড মর্নিং-এ খুব কোনো কাজ হল বলে মনে হল না।শুধু উটপাখি, মৃদু হেসে ইংরেজীতে জিজ্ঞেস করলেন, আমি চকোলেট খেতে ভালবাসি কি না, আর তা পেতে চাই কি না। মা-এর দিকে অসহায় দৃষ্টি-তে তাকালাম, অনুমতি নিতে। মা-এর চোখে আগুন-ঝরা ‘না’। ধুত! এ সুযোগ কেউ ছাড়ে! আমি উটপাখি-কে ‘হ্যাঁ’ বললাম। একথালা বিভিন্ন রকমের চকোলেট। মুঠো করে পকেট ভরে নিলাম, তার পর আর এক মুঠো। জিভে তো জল চলে এসেছে। সবে একটা খুলে মুখে পুরতে যাব, সিন্ধুঘোটক বলে কি না, তার আমাকে কিছু প্রশ্ন করার আছে। চকোলেট-টা যেন আমি পরে খাই। বেশ বাবা, তাই সই! বাবা-মা-এর দিকে আর তাকাই নি। ও পরে দেখা যাবে। একটা আপেল দেখিয়ে সিন্ধুঘোটক আমকে জিজ্ঞেস করলেন,
- বলত এটা কি?
আমি বললাম
- কলা।
সবাই সবার মুখের দিকে তাকাল। খরগোশ তার সিংহের মত গলায় বলল,
- ভাল করে দেখে বল!
- বলেছি তো! একই কথা ক’বার বলব!
- আচ্ছা! তবে বলত এটা কি?
- ব’লে আমাকে একটা রোবট দেখাল।
বললাম,
- মানুষ।
আবার সবাই অবাক হয়ে তাকাল।
মা বলল,
- ঠিক করে দেখে বল, তুমি জান তো!
সিন্ধুঘোটক বলল,
- I think he does not need your help because you have prepared him well.
আমি বুঝে পেলাম না, যে ভুল টা কি বলেছিলাম আমি। রোজ শুনি, বাবা বলে,
“সঙসারের চক্করে পড়ে আমি আর মানুষ নেই, রোবট হয়ে গেছি”।
আমি সেটাই তো বলতে চেয়েছি! এরা এসব বোঝে না। উল্টে আবার একটা ফালতু প্রশ্ন্:
-আচ্ছা, বলত আকাশের রঙ কি?

এই আগের দিন-ই আমার ড্রয়িং স্যার, সবাইকে গল্প করছিলেন – কে এক লোক ছিল, পাবলো পিকাসো বলে। স্কুলে আঁকার ক্লাসে, আকাশের রঙ সবুজ করে দিয়েছিলেন বলে তাঁর টিচার তাঁকে বকেন। তখন তিনি নাকি বলেছিলেন, “নীল রঙের আকাশ তো প্রকৃতির স্বাভাবিক, নিজস্ব রঙ। তাহলে আমার নিজের কল্পনার, আমার সৃষ্টির আর কি দাম!”
তাঁর মত আর্টিস্ট নাকি পাওয়া ভার্।

ধাঁ করে আমার সে কথা মনে পড়ে যেতেই আমি উত্তরে বললাম,
- সবুজ।
সবাই কেমন একটা হোপলেস হয়ে তাকাল্।
বাবা মুচকে মুচকে হাসছে। মা প্রায় কেঁদে ফেলে সবাই-কে বলল্,
- প্লিজ.. ও জানে সব্...কেন যে এরকম করছে...!
- I think you better leave it on us. To get a chance to study in this school is not easy. And we think you are aware of that and prepared him well accordingly…let’s not waste time. There are many waiting outside…
শুনেই আমার মাথা গেল গরম হয়ে...দেখাচ্ছি মজা...
- তোমার সবথেকে প্রিয় সংখ্যা কোন টি?
- জিরো।
- কেন?
- এটা নিয়ে কোনো ঝামেলা নেই।যোগ-বিয়োগ-গুণ-ভাগ সবেতেই একই উত্তর –জিরো।
- কোথা থেকে শিখলে তুমি?
- বাবা বলেছে।
সবাই বাবার দিকে তাকাল। মা তো পুরো বাবা কে ওখানেই ভস্ম করে দেবে...
বাবা এই প্রথম থমকে গিয়ে বলল,
- ওই মানে মজা করে একদিন...
- We well understand what is fun and what is knowledge for upbringing one child. This is what you do to your child and spoil them all…you must have taken your child’s education more seriously, earlier.
- But he is just three and half…we see well at home so that he is properly educated and becomes a good human being with good values.
- We can see it well, the way he is constantly answering the questions…
আবার আমার ওপর attack…
- তুমি এই স্কুলে কেন ভর্তি হতে চাও?
- আমি চাই না তো, কোনো স্কুলেই ভর্তি হতে। বাবা-মা জোর করে আমাকে দিয়ে এই সব করাচ্ছে।
- স্কুলে না পড়লে লেখাপড়া শিখবে কি করে?
- বাবা-মা আমাকে খুব য্ত্ন করে বাড়িতে পড়ায়। আর জানো... আমাদের বাড়িতে রবীন্দ্রনাথ বলে একজন দাড়িওয়ালা লোকের ছবি আছে। উনি নাকি কোনোদিনই স্কুলে যান নি। কিন্তু সবথেকে বড় প্রাইজ, ‘নোবেল’ না কি একটা পেয়েছিলেন। আবার গরমকালে তার ছবিতে মালা দিয়ে সাজিয়ে, তাঁকে পুজোও করা হয় দেখি।
সবাই চুপ। কি এমন বলে ফেলেছিলাম জানি না। হ্যাঁ, তবে মাথাটা একটু গরম হয়ে গিয়েছিল। এই বুদ্ধি নিয়ে নাকি স্কুল চালায়! সবাইকে বোকা ভাবা? আপেল দেখিয়ে বলা, ‘এটা কি?’ ন্যাকামী! অত বড় একজন মহিলা, উনি জানেন না, ওটা একটা আপেল! আর ভাবছেন, আমিও জানি না ওটা কি। তা নে বাবা, উনিই সবজান্তা! আমি কিচ্ছু জানি না। তাই ইচ্ছে করে বলেছি, ওটা কলা।ইচ্ছে করে ভুল বলেছি। যেমন বাজে প্রশ্ন করবে, তেমনি উত্তর-ও পাবে।

আমাকে বাইরে যেতে বলা হল। শুনতে পেলাম,
- We are really sorryআপনাদের বাচ্চা-কে একটু ম্যানার্স শেখান আর বেসিক নলেজেও বেশ গোলমাল আছে।
কার যে বেসিক নলেজে গোলমাল, তা কে জানে!

বেরিয়ে এসে রাস্তায় মা-এর চোখে জল আর রাগে আমাকে মেরেই ফেলবে এমন একটা ভাব। বাবা বাঁচালো, আমাকে আগলে রেখে। বাড়িতে এসে মা আমাকে জড়িয়ে ধরে খুব কাঁদল। আসলে আমকে খুব ভালবাসে তো! আর বাবা বলল, অনেক ভাগ্য করে এমন ছেলের মা হয়েছ, ওকে বুঝতে আই-কিউ লেভেল টা হাই হতে হবে। ‘আই-কিউ’ টা যে কি জানতাম না বলে ঠিক বুঝ্তে পারিনি না, ওটা প্রশংসা না নিন্দে।

আমিও তখন কেঁদে ফেলেছিলাম। মনে মনে বলেছিলাম, আর এরকম করব না কোনোদিন। আমার বাবা-মা খুব ভাল। আমার জন্যই আজ অকারণে এমন কষ্ট পেল। তবে খুব বাঁচা বেঁচেছি। ওই সব টিচারদের হাতে পড়লে, আমার আজ আর এতদূর পড়াশোনাই হত না।

তবে ওই সেদিনের দল থেকে একজন দলছুট হয়ে আমাদের স্কুলে অঙ্ক টীচার হয়ে এসেছেন বলে মনে হয়। আজকের পরীক্ষার প্রশ্ন দিতে এগিয়ে এলেন তৃষ্ণা ম্যাম। মূর্তিমান বিভীষিকা। নাম-ও লাগসই। সারাদিন ছাত্র-ছাত্রীদের বকা-ঝকা করার জন্য তৃষ্ণায় ছাতি ফেটে যাচ্ছে! আমরা যে কত কম জানি সেটা প্রমান করার জন্যই সারাদিন ব্যস্ত। আরে বাবা, আমরা কম জানি, কম পারি বলেই না তোমাদের কাছে শিখতে এসেছি। সারাদিন ধরে নিজেদের কাছে ধরে রেখেও আমাদের ঠিক করে শেখাতে পারছে না, সেটা কাদের দোষ, আমাদের না কি যাদের আমাদের ঠিক করে মানুষ করে তোলার কথা, তাদের!
আর যার মানুষ করে তোলার কথা, তার কথা শুনলে গা-পিত্তি জ্বলে যায়...

- কি রে এবারে কত পাবি? আগের বারে কুড়িতে আঠেরো পেয়েছিলি কি ক’রে আমি কি তা জানি না নাকি! নেহাত শুভ্র তোর পাশে বসেছিল। পুরো কপি করেছিলি, হ্যাঁ!
আমাদের ক্লাসের শুভ্রকান্তি সব বিষয়েই পড়াশোনায় ভাল। ইয়া মোটা পুরু কাঁচের চশমা।ক্রিকেট ব্যাট ভাল করে ধরতে পারে না। বল ছুঁড়লে বেশিদূর যায় না। ক্যাচ ও করতে পারে না, ঠিকমত। তবে আমার সঙ্গে রোজ টিফিন খায়। আমি রোজ ওকে ডেকে খেলতে নিতাম। একদিন ছুটির পরে ওকে ডাকছিলাম খেলতে। দেখতে পাই নি ওর মা কাছে আছে। সঙ্গে সঙ্গে ওর মা ভীষণ রেগে গিয়ে বিরক্ত মুখে আমকে বললেন,

-তুমি আমার ছেলের সঙ্গে একদম মিশবে না।
আর শুভ্রকে বললেন,
-আজকাল যত বাজে ছেলেদের সঙ্গে তোমার বন্ধুত্ব হয়েছে, না! তাই লেখাপড়া-টা দিন দিন গোল্লায় যাচ্ছে।
বাড়ি ফিরে সেদিন খুব কেঁদেছিলাম। মনে আছে। আমি কি সত্যি-ই অতটা খারাপ?

আর আজ আবার একটা নতুন খারাপ লাগা – আমি নাকি শুভ-র কাছ থেকে কপি করে আগের বারে অঙ্কে কুড়িতে আঠেরো পেয়েছিলাম! এরা মানুষ! নিজেকে এত ছোট লাগছিল! আমার মনটা যেন মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসবে। বুকের মধ্যে কি কষ্ট! এমনিতেই অঙ্ক ব্যাপারটা আমার ভাল লাগে না। বাবা-মা অনেক কষ্টে আমাকে বুঝিয়ে-সুঝিয়ে এই জায়গায় এনে দাঁড় করিয়েছে – যে এত ভাল সাইকেল চালাতে পারে, সাঁতার কাটতে পারে, বল দিয়ে এক বারে দূর থেকে উইকেটে হিট করতে পারে, সে একটা সামান্য অঙ্ক করতে পারে না! এসবের থেকে অঙ্ক অনেক সহজ। দেখলাম, হ্যাঁ, মিথ্যে বলে নি, একটু মাথা ঘামালেই অঙ্কের মত সহজ কিছু হয় না। এসব কিছু না বুঝে আমার টিচার আমাকে এমন কথা বলে দিলেন, যে পরীক্ষার আগেই আমার মাথাটা পুরো ফাঁকা হয়ে গেল। মনে হল – এত কষ্ট করে শেষে এই!

পরীক্ষায় কি লিখলাম কিছু জানি না। শুধু কান্না আসতে থাকল, বুক ঠেলে। পরীক্ষার শেষে বন্ধুরা ডাকতে এল। গেলাম না। মনে হল, কতক্ষণে বাড়ি গিয়ে ঘরের কোনে একটু একা বসে থাকব, একটু একা কাঁদব…। নিকুচি করেছে, অঙ্কের!!!

(চলবে.....)

No comments: