আমার স্কুলের সব থেকে প্রিয় বন্ধু whats app এ wish করল -- 'Happy Friendship Day'....ধাঁ করে কিছু কথা মনে পড়ে গেল, দুই বন্ধুর মাঝে কত কি না কি ঘটেছিল, বাস্তবের টানা পোড়েন কেমন করে দু জনকে দুই মেরুতে ছিটকে দিল! এক একটা জীবনের ধাপ পেরোলাম। প্রতি ধাপেই একজন করে best friend হতে লাগল। ইংরেজি তে superlative degree-র plural হয় না। তাই আমার জীবনে এক এক ধাপে এক জন করেই ছিল, best friend। ক্রাইসিস অনেক ছিল, কিন্তু ধাপের সংখ্যা আমার মত ছা-পোষা মানুষের খুব কম বলে best friends এর সংখ্যা-ও বেশ কম। হাতে গোনা। ফেসবুক প্রোফাইল এর friends' list কিন্তু বিভ্রান্তিমূলক। ওই সংখ্যা দেখে কিন্তু আমার আসল বন্ধুবর্গ কে judge করা মুশকিলের। আবার এমন একজনও আছেন তিনি আমার খুব কাছের মানুষ কিন্তু ফেসবুকে তাঁকে খোঁজা মানে, খড়ের গাদায় সূঁচ খুঁজে বেড়ানো...পুরো 'ধরি ধরি মনে করি, ধরতে গেলে আর পেলে না' case...মানে facebook দেখে ও সব বোঝা যায় না। হ্যাঁ যা বলছিলাম। এই যে যাঁরা best friends হলেন, তাঁরা কি আমার পরের ধাপে পৌঁছানোর পরেই হাওয়া? না, বরং time test হল। আমি ধন্য হলাম, প্রত্যেকেই আমার পরিবারের এক জন হয়ে উঠলেন খুব নিঃশব্দে। কেউ বেশি কেউ কম রইলেন না। কারণ প্রত্যেকেই আমার কাছে এতই বেশি যে অন্যের সঙ্গে তুলনা করতে যাওয়া বাতুলতা। আমি আজ যা যতটুকুই হয়ে উঠি না কেন, তার সিংহভাগ credit তাঁদের বই কি...বাবা-মা-শিক্ষক এনাদের অনেক দায়বদ্ধতা থাকে। বন্ধুদের থাকে না। অনায়াসে আনন্দ, দুঃখ, হতাশা, প্রত্যাশা সব নিঃসন্দেহে ও নিঃসংকোচে এঁদের ওপর ঢেলে দেওয়া যায়। কখনো মনে হয় নি, কি মনে করবেন তাঁরা, বা তাঁদের কাছে আমি মানুষ হিসেবে সম্মান হারাবো। ভুল করে থাকতেই পারি, মানুষ তো। তাই যারা আমার মধ্যে এক মানবিক বীজ বপন করে খুব সাধারণ স্বাভাবিক মানুষের মত অনুভূতিগুলো দিয়েছেন, বা দিয়ে চলেছেন রোজ, কেউ বলে আর কেউ না বলে, অস্বীকার করার কোনো জায়গাই নেই যে আজও আমি তাঁদের ছাড়া একটি বিরাট শুন্য মাত্র।
তাই আমার স্কুলের বন্ধুকে লিখলাম, তিনটে দিন আমার কাছে আলাদা করে কোনো মানে রাখে না ১. শিশু দিবস, ২. নারী দিবস আর ৩. বন্ধুত্ব দিবস। যাদের ঘিরে আমার জীবনের প্রতি মুহূর্ত কাটছে, তাদের উদ্দেশ্যে আলাদা করে দিন বেছে শ্রদ্ধা জানানো আমার কাছে তাদের অপমানের নামান্তর। বাকি অনেক দিন আছে, যা আমাদের ছেলেবেলায় মনে রাখার প্রয়োজন ছিল না, আজকাল হয়েছে। যেমন এম. আলি-র মত দুর্ধর্ষ ডিজিটাল কার্টুনিস্ট এর ছবি দেখে জানতে পেরেছিলাম গতকাল এক যোগে ছিল ব্যাঘ্র দিবস ও বরষা দিবস, মোহনবাগান দিবসের সাথে। অনেক বন্ধুর জন্মদিন এখনো অজানা। ছবি দেখে জানতে পারি। বা নানা রকমের reminder থেকে। যদি ভুলেও যাই, সম্পর্কের সমীকরণে কি খুব ব্যাঘাত ঘটবে! সত্যি মিথ্যে জানি না, আমার কিন্তু মনে হয়নি কোনোদিন ই এতে খুব কিছু যাবে আসবে। আর যদি মনে থেকে বা পড়ে যায়, আনন্দ করব, খুব। ঠিক যেমন করে এখন লিখছি, খুব আনন্দের সঙ্গে, যে "মিত্রোঁ, (এটা ফরাসী নয়, ভারতীয় শব্দ, যা বিগত কয়েক বছরে জাতীয় স্তরে উন্নীত হয়েছে) তোমাদের সকলের ভার লাঘব করতে আমার এই লেখা যে, আমাকে আজ - Happy Friendship Day-র গুচ্ছের wish না পাঠালেও তোমরা তোমাদের স্বকীয় মহিমায় প্রতিভাত আমার কাছে এক বিশাল দিগন্ত বিস্তৃত রামধনু....যেখান থেকে আমি নিশ্চিন্তে যখন ইচ্ছে যেদিকে ইচ্ছে শরনিক্ষেপ করতে পারব!!!!"
(স্কুলের বন্ধু সন্দীপ দে কে দিনটা মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য আলাদা করে দুই খান গালাগালি পরে দিয়ে নেব)
No comments:
Post a Comment