Tuesday, 29 September 2020

ম্যাস্টরমশাই: পর্ব ২

 



(ইংরেজীতে)

-আপনি কি পড়াবেন?

-তৃতীয় লেসন-এর গল্পটা…

-ওটা বেশ কঠিন…

-আমার আবার ওটাই পছন্দ।

- বেশ, শুরু করুন, তবে…

-কতক্ষণ সময় পাব? পড়ানোর জন্য?

-পনেরো মিনিট।

আমার এই নিয়ে রাজ্য সরকার পোষিত ইস্কুলে চাকরী করার জন্য তৃতীয় ডাক। আগের দুই ডাকের প্রথমটিতে সারাদিন নানা সরকারী পদ্ধতি অনুসারে নথি পেশ এবং অন্যান্য সব সমাধা হওয়ার শেষে জানতে পারলাম যে আগে থাকতেই নাকি সেখানে অন্য  আর এক জনের ‘খুঁটি’ বাঁধা ছিল। তখন আমি নানা সংবাদ পত্রে লেখালিখি করে বেশ খানিকটা এগিয়ে পড়েছি। কিন্তু ওই জীবন ও তার মূল্যবোধের সঙ্গে কিছুতেই খাপ খাচ্ছে না – সাংবাদিকের স্বাধীনতা টেঈলরমেড হলে যা হয় আর কি! সঙ্গে আমার অতিকষ্টে  যোগাড় করা খবর মাননীয় সাব-এডিটরের দয়ায় একটু অদল বদল করে অন্যের নামে ছাপা হয়ে যাচ্ছে। কারণ, আমি ঠিক করে তৈলমর্দন করতে পারছি না। উল্টোদিকে সিনগল-মল্ট পৌঁছোচ্ছে তৈলের বদলে। দেখতে পেলাম, অন্যদের কেরীয়ার গ্রাফ কেমন হু হু করে আমাকে ছাপিয়ে চলে যাচ্ছে। ফ্রি-লান্সার হিসেবে একা সুদীপ-দার  আমাকে আগলে চলল। এছাড়া দেবিকার কাছ থেকে পেলাম যথারীতি বাইরের জগতের সঙ্গে লড়ে যাওয়ার পাঠ। ১৯৯৭ সালের নভেম্বর মাস – হাতে দুটো চাকরী, একদিকে কর্পোরেট মিডিয়া আর এক দিকে ছা-পোষা ইস্কুল মাস্টারী। খবরের কাগজে আমার নাম সমেত খবর ছাপা হবে, এই বাই-লাইনে নিজের নাম দেখে দেখে এত হেজে গিয়েছি যে সেটা তখন আর আলাদা করে কোনো  অর্থ বা গুরুত্ব কোনোটাই রাখে না। যা অর্থবহ তা হল কোনটা আমাকে ভাল রাখবে।

 ছোটবেলায় একটা স্বপ্ন দেখতাম, যেমন সব ছোটরাই দেখে যে আসেপাশে বড়দের মত স্বাধীন কবে হব। বড় হতে হতে বুঝেছিলাম, ছোটরাই বরং সবথেকে বেশি স্বাধীন। যত বড় হব জীবন তত আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে পরাধীন তো বটেই, অজগরের মত ধীরে ধীরে আমাকে একটা মাংসপিণ্ডে পরিণত করলেও আশ্চর্য হব না। তাই তুল্যমূল্য বিচার করে দেখলাম, যে হয়ত অনেক কম বেতনের চাকরী, তবে একটা অন্য ভাললাগা আছে। বাবা-মা-দাদু সবাই শিক্ষক। তাই বংশানুক্রমে এই পেশার প্রতি আনুগত্যস্বরূপ সচেষ্ট হলাম। আমাকে এই ব্যাপারে কেউ জোর করে নি। বাবা বলেছিলেন

-         তুমি যা ভাল বোঝ…।

ভেবে দেখলাম, বিকেল সাড়ে চারটের পরে আমি সম্পূর্ণ স্বাধীন। ষাট বছর বয়েস পর্যন্ত চাকরী করতে পারব, অত্যধিক মানসিক চাপ ও সংঘাত-কে ব্যতিরেকেই। সবথেকে বড় কথা দিনের এতটা সময় নিজের। সেই সময়ে আমি ফ্রি-লান্সিং চালিয়ে যেতেই পারি। আর এই চাকরীতে কাউকে আমার কাজের আউটপুটের জন্য কৈফিয়ৎ দিতে হবে না। না থাকবে টার্গেট না ডেডলাইন। সিলেবাস এমনিই শেষ হয়ে যাবে কারণ মানুষ কিছুর জন্য সবটুকু উজাড় করে দিতে পারে, যখন তার মধ্যে সেই বিষয়ে দুটো জিনিস থাকে –প্রথমতঃ, সেই কাজ-কে ভালবাসা আর দ্বিতীয়ত, সেই কাজে তার অপার স্বাধীনতা। দেখলাম, জীবন ও কাজ -- দুটোতেই স্বাধীনতা দেয় এই পেশা। সিদ্ধান্ত নিলাম, সাংবাদিক নয়, শিক্ষকই হব, প্রধানত।

 সে কি আর হব বললেই হওয়া যায়! সরকারী চাকরী বাবা! অত্ত সস্তা নয়। আমার ছোট্মামা আমার সিদ্ধান্ত শুনেই কোথায় একটা কথা বলে ফেল্‌ল দক্ষিণ চব্বিশ পরগণায় মুচিশার কাছে। সেই ইস্কুল আমাকে চাকরীতে নিয়ে নেবে, কিন্তু তার আগে লাখ দুয়েক টাকা দিতে হবে। বাবা আমাকে ভেবে দেখতে বললেন। আমি জানতাম আমার বাবার অত পুঁজি নেই। আমি রাজী হলে হয়ত কোথাও থেকে টাকা জোগাড় করে নিঃশব্দে কাজটা করে দেবেন, নিজের নীতিবিরোধী হলেও। কিন্তু আমি কি এতই নিম্ন মানের, যে শেষে টাকা দিয়ে চাকরী করতে হবে, তাও শিক্ষকতার মত একটি সম্মানীয় পেশায়? এর থেকে নীচ মূল্যবোধ এর হতেই পারে না। তার থেকে সাংবাদিক হওয়াই শ্রেয়। এই অফার গ্রহণ করলে, আমি যাদের পড়াব, তাদের দিকে কোনোদিন চোখ তুলে তাকাতেই পারব না। সারাজীবন অকারণে এক হীনম্মন্যতায় ভুগব, শিরদাঁড়া বিক্রি করার দায়, বাবার অকারণ ঋণের দায় মাথায় নিয়ে। আমি বেকার তো থাকব না! সেই ক্লাস এইট থেকে লোকের বাড়িতে অবসরে টিভির অ্যান্টেনা সারানো, অ্যামপ্লিফায়ার অ্যাসেম্বল করে, টিঊশন পড়িয়ে কোনো না কোনো ভাবে স্বনির্ভর হওয়ার চেষ্টা করা আমি, শেষে এভাবে বিক্রি হয়ে যাব? হতে পারে না।সপাটে সোজা ‘না’ বলে দিলাম। এ আমার দ্বারা সম্ভব নয়।

 তারপর এল পর পর ডাক। প্রথমটির কথা আগেই বলেছি। দ্বিতীয় ডাকের দিন, আমার ছোট মামাতো বোন শিউলির বিয়ে। তখন বিয়েবাড়ি ভাড়া করে বিয়ে হত না। বিয়ের তিন চার দিন আগে থেকেই আমরা সপরিবারে মামারবাড়িতে পাত পেতেছি। সাতসকাল বেলায় কিছু একটু মুখে দিয়ে এসে পৌঁছালাম লিলুয়ার একটি নামকরা ইস্কুলে। মামারবাড়ি বাখরাহাটে। সেখান থেকে ইস্কুলে পৌঁছাতেই প্রায় তিনঘন্টা লেগে গেল। তারপর সব কাগজ পত্র জমা দিয়ে হঠাৎ দেখি, আমাদের মোট চব্বিশ জনের মধ্যে একজন এক ধুতি-পাঞ্জাবী পরিহিত ব্যক্তির আবির্ভাবের সঙ্গে সঙ্গে তাঁর দুই চরণে প্রায় সাষ্টাঙ্গে সমাহিত। খোঁজ নিয়ে জানলাম, ওই ব্যক্তি ওই বিদ্যালয়ের সেক্রেটারী এবং রাজনৈতিক ভাবে বেশ প্রভাবশালী ব্যক্তি। পুর্ব অভিজ্ঞতা থেকে বুঝতে অসুবিধা হল না যে ম্যাচ ফিক্সড। ভালই হল। সিদ্ধান্ত নিলাম, যে সারাদিন নষ্ট করে এখানে পড়ে থাকার কোনো মানে হয় না। বরং বিয়েবাড়িতে তাড়াতাড়ি ফিরৎ গেলে সকলের সঙ্গে অনেকটা আনন্দ ভাগ করে নেওয়া যাবে। যাঁরা শুরু থেকে সরকারী কাগজপত্র দেখছিলেন, তাঁদের গিয়ে সোজা অনুরোধ করলাম যে আমি এই ইন্টারভিউ- এ থাকতে পারব না এবং তাঁরা যেন দয়া করে আমাকে উপস্থিত হিসেবে চিহ্নিত করেন, কারন প্রয়োজনীয় নথি আমি সবই জমা দিয়েছি যার ভিত্তিতে সত্তর শতাংশ বিচার হবে। ক্লাস-প্রেসেন্টেশন / ডেমোন্সট্রেশন আর পারসোনাল ইণ্টারভিউ-এ বাকি তিরিশ শতাংশ। বাকি তিরিশ শতাংশ-তেই ম্যাচ বাঁধা হয়ে গিয়েছে, আগেই। সিলেকশন কমিটির লোকজন তো হাতে চাঁদ পেলেন। তাঁরা সাগ্রহে এই প্রস্তাবে রাজী হলেন। একজনের ক্লিন ওয়াকওভার তাঁদের অনেকটাই স্বস্তি দিল। আমি বিয়েবাড়ি তে ফিরে প্রায় বিকেলবেলায় লাঞ্চ সেরে চলে গেলাম বর আনতে। চুটিয়ে আনন্দ করলাম আরো প্রায় চারদিন।

তারপর সেপ্টেম্বরে এই ডাক। একটাই ভরসা, টাইমস অফ ইন্ডিয়া-র চাকরীটা মোটামুটি পেকে এসেছে, আর মাস দু-একের অপেক্ষা। তবুও স্বাধীনতার স্বাদ পেতে একবার শেষ চেষ্টা করে দেখা যাক। সেদিন মোট ক্যাণ্ডিডেট আমাকে নিয়ে বাঈশ জন। বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক, নাম কালিবাবু, এসে সটান আমাকে বললেন,

-আপনার যা রেকর্ড দেখছি, তাতে আশেপাশে কেউ নেই। শুধু ক্লাস-প্রেসেন্টেশন / ডেমোন্সট্রেশন আর পারসোনাল ইণ্টারভিউ- দুটো যেন ভাল করে উতরে যায়, দেখবেন। মনে রাখবেন এখানে পুরোটাই কিন্তু ফেয়ার গেম। কোনো কারচুপি নেই।

 সত্যি-মিথ্যে গোবিন্দ জানে, কিন্তু সত্যি বলতে কি, ভরসা পেলাম। বাবা সবসময়েই শেখাতেন, যে কোনো সিস্টেমে খারাপ আছে বটে, কিন্তু সবটাই খারাপ, এটা হতেই পারে না। তাহলে কোনো সিস্টেম-ই চলে না। দেখি কি করতে পারি, মনে হল। মন থেকে সব মুছে ফেলে, একটাই অনুভুতি পড়ে রইল, বাকি একুশ-জনকে আজ ধুয়ে দেব।

 আমি শেষ ক্যান্ডিডেট। ক্লাস-প্রেসেন্টেশন –এ পুরো সিলেকশন কমিটি বসে আছেন পিছনের বেঞ্চে। ঘর ভর্তি ক্লাস এইটের ছাত্র। দু-এক জন ছাড়া সবাই বেশ পিছিয়ে পড়া ঘরের, দেখেই বোঝা গেল। শুরুতেই বলেছি, কেমন করে শুরু হল। পনেরো মিনিটের মধ্যে আমাকে প্রমান করতে হবে আমি আলাদা।

 পড়াতে শুরু করলাম, নিজের মত করে। তখন নিয়ম ছিল, ইংরেজী ক্লাসে ইংরেজী ছাড়া এর অন্য কোনো ভাষা বলা যাবে না, কিছুতেই। মানলাম না। বাংলা ও ইংরেজী দুটি ভাষাতেই পড়াতে লাগলাম, প্রচুর বোর্ড ওয়ার্ক সমেত। দুতিন মিনিট পর পর বিষয়-বিশেষজ্ঞ, সেক্রেটারী মহাশয় ও দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান, সকলেই বার বার আমাকে থামিয়ে বলে চলেছেন,

-আপনি মেথড ফলো করুন। হচ্ছে না…

আমি কোনো কথায় কর্ণপাত না করে আমার মেথডেই পড়িয়ে চললাম।

মিনিট দশেক পরে বলা হল,

-ঠিক আছে…আর দরকার নেই।

আমি খুব বিনয়ের সঙ্গে বললাম,

-         দশ মিনিট হয়েছে। আমি কি আমার জন্য বরাদ্দ পনেরো মিনিটের আর পাঁচ মিনিট পেতে পারি?

সবাই এ-ওর দিকে তাকিয়ে শেষে রাজি হলেন।

আমি ছেলেদের আমার পড়ানো অংশ থেকে প্রশ্ন করতে থাকলাম। সব্বাই ঠিক উত্তর দিল। দুটো এম-সি-কিউ লিখতে দিলাম। দু-তিন জন ছাড়া সকলেই ঠিক উত্তর ও লিখল।

আমার আগে যাঁরা অত্যন্ত সহজ পাঠ পড়িয়ে গিয়েছেন, সেখান থেকে প্রশ্ন করতে ক্লাসের ছাত্ররা একটি প্রশ্নের উত্তর-ও দিতে পারল না।

তখন আমি সিলেকশন কমিটিঢ় উদ্দেশ্যে বললাম,

-         আমি শিক্ষক। আমার লক্ষ্য সার্থক শিক্ষাদান। যে ছাত্ররা শিক্ষালাভের আশায় উন্মুখ হয়ে ক্লাস আলো করে আছে, তাদের আমি এমন ‘মেথড’-এ পড়াতে নারাজ, যে গোটা ক্লাসটাই অন্ধকারে ডুবে যায়। আমার আগে যাঁরা মেথড ফলো করে পড়িয়েছেন, আমার বিশ্বাস তাঁরা সাফল্যের সঙ্গে শিক্ষাদানে ব্যর্থ হয়েছেন, এবং তা আমি আপনাদের সামনে প্রমান করে দিলাম। শিক্ষক হিসেবে আমার প্রাথমিক কর্তব্য সফল শিক্ষাদান, তা সে যে মেথডেই হোক না কেন। ধন্যবাদ সকলকে আমাকে এই এক্সট্রা সময়টুকু দেওয়ার জন্য।

কালিবাবু আমাকে এসে বললেন,

-         তুমি আমার থেকে অনেক ছোট। তাই ‘তুমি’ করেই বলছি। এটা তুমি কি করলে। তুমি পুরো সিলেকশন কমিটি কে চটিয়ে কেন দিলে, এভাবে? তুমি কি সত্যি-ই চাকরীটা করতে চাও না!

-       না স্যার, অবশ্যই চাই। কিন্তু আমার যেটা ঠিক মনে হয়েছে আমি করেছি। এবার সবটাই ওনাদের হাতে। কি ঠিক কি ভুল ওনারা বিচার করুন।

পারসোনাল ইণ্টারভিউ-তেও তাই-ই হল। অনেক কিছু নিয়ে বিতর্ক। কিন্তু মাথা গিয়েছে চড়ে, দমবার পাত্র আমি নই।

সাংবাদিকতা আমাকে একটি বিষয়ে ভীষন অনুশীলিত করেছিল। অনেক তাবড়-তাবড় মানুষের সামনে নির্ভিয়ে কথা বলতে, তাদের বিরোধীতা করতে। তাদের কথার প্যাঁচেই তাদের ঘায়েল করতে। তাই বুক এর দুরুদুরু করে না, পা-ও কাঁপে না, তিনি যে তালেবর-ই হন না কেন। 

তাই লাগাতার চলল সেই রেশ…একনাগাড়ে।

এক্সপার্ট বললেন,

-এত অ্যারোগ্যান্স নিয়ে শিক্ষকতা করবেন কি করে?

-আমি ছাত্রদের পড়াব, শিক্ষকদের নয়। কারণ এখানে উপস্থিত সকল শিক্ষক আমার থেকেও অ্যারোগ্যান্ট, কারণ তাঁদের বিশ্বাস যে তাঁদের থেকে বেশি কেউ জানতে পারে না। তাই তাঁদের বিরোধীতা করলেই মনে হয় সেটা অ্যারোগ্যান্স। তাঁরা ওপেন মাঈন্ডেড নন কোনো স্বাস্থ্যকর আলোচনা বা বিতর্কের ক্ষেত্রে। ‘ইন্টারভিউ' শব্দের অর্থ ভাবের বিনিময়। আমি তাই-ই করার চেষ্টা করছি। ভুল বলে থাকলে মাফ করবেন। বলুন তো, এই কথাটা কেউ কোনো ক্যান্ডিডেট-কে জিজ্ঞেস করেন, “আচ্ছা আপনি চাকরীটা করবেন তো?” …আমরা এই বাইশজন আজ সব কাজ ছেড়ে এখানে  সারাটা দিন খরচ করে কি জন্য এসেছি?

-আমাদের জানতে হয়, সরকারী ভাবে যে ক্যান্ডিডেট 'উইলিং' না 'আনউইলিং'।

-সেটাই বলছি, কেউ আনউইলিং হলে আসতেন না। এটা জিজ্ঞেস করা মানে তাঁদের সবাইকে বেশ ঘুরিয়ে অপমান করা...বলতে বাধ্য হচ্ছি সেই বোধের খুব অভাব আছে তাহলে...উচ্চশিক্ষিত হয়েও..।।

যখন ঘর থেকে বেরোলাম, কালিবাবু আমাকে এই মারেন তো সেই মারেন। জানি না, একজন অপরিচিত ব্যক্তি হটাৎ সকাল থেকে কেন আমাকে এত স্নেহ করে চলেছেন। আমি সবথেকে জরুরী দু’টো জায়গায় বাকি একুশ জন কে ছাপিয়ে কিছু করলাম বটে, কিন্তু যা করলাম, তাতে কোনো আশা রইল না আর। একুশজনের আট-দশ জনের মুখে এক অব্যক্ত আনন্দ ফুটে বেরোচ্ছে। ওদের মধ্যে যে কোনো একজন পাবে বটে, চাকরীটা। কিন্তু ভাবে নি, আমি এইভাবে ওয়াক ওভার দেব।

তবে বেশ মনে মনে আনন্দ পেলাম, ওই একুশ জনের সঙ্গে আরো পাঁচজনকেও ধুয়ে এসেছি। চাকরীটা না পেলেও সারাজীবন এই ইন্টারভিউ তাঁদের মনে থাকবে…যেমন আমার আছে, আজও।

নভেম্বরের শুরুর দিকে হঠাৎ একদিন আমাদের সালকিয়ার বাড়িতে ওই ইস্কুলের প্রধান  শিক্ষক মহাশয় হাজির অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার নিয়ে। বললেন,

-ভারতীয় ডাক ব্যবস্থার যা অবস্থা তাতে সবটুকু ভরসা করতে পারলাম না। ডাকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। যদি দেরী হয়ে যায়, তাই তোমাকে হাতেও একটা পৌঁছে দিলাম।

ঠিক পরের দিনই অপ্রত্যাশিত ভাবে ‘টাইমস অফ ইন্ডিয়া’-র প্রোবেশানারী অফার লেটার এল, স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে। উত্তেজনা ও মোহ পাশে রেখে নীল রক্তের ডাকে সাড়া দিলাম। পেরিয়ে গেল তেইশ বছর, এই ইস্কুলেই।

বাবা ঠিকই শেখান…সিস্টেমের সব খারাপ, এটা কখনই হতে পারে না। লাল ফিতের বজ্র-আঁটুনিতে ফস্কা গেরো-ও রয়েছে বই কি!

 (চলবে)

 

 

 

Sunday, 27 September 2020

ম্যাস্টরমশাই: পর্ব ১

শিক্ষক হতে গেলে কি কি থাকা দরকার, এই নিয়ে একটি বহু প্রচলিত বাংলা দৈনিকের সাপ্তাহিক শিক্ষার পাতায় যখন লিখতে বসেছিলাম, বুঝেছিলাম যে সময় বদলে গিয়েছে। আমি নিজে পেশায় শিক্ষক, রাজ্য সরকার পোষিত অনামী এক বিদ্যালয়ের। আমার বাবা-ও তাই-ই ছিলেন। তবে সে সময় ছিল সত্যি-ই অন্য।শিক্ষকদের সমাজে এক অন্য সম্মান ছিল। এখন তা কোনো এক কারনে ক্ষয়ে গিয়েছে। পুরোনো মূল্যবোধের অবক্ষয় হয়ত তার একটা বড় কারণ। এখন যেমন শিক্ষকসমাজের ওপর কেমন যেন সবার একটা চাপা গাত্রদাহ – এত ছুটি কেন, কয়েক ঘন্টা পড়িয়ে এত বেতন, কেন? শিক্ষকদের কেন সমাজ সেবামূলক নানান কাজে যোগ করা হচ্ছে না, ওঁদের তো তেমন কোনো কাজ নেই, ইত্যাদি নানা রকমের ব্যাপার। সবটাই কিন্তু ওপর ওপর জানা। বলার কথা তাই বলা। শিক্ষকদের ছোট করে বেশ আনন্দ আছে। দুর্বল জাত, এসবের উত্তর দিতে তাঁদের রুচিতে বাধে। তাই মার- কাটারী, চুন চুন কে…।


যে কোনো সরকারী কর্মচারী বছরে বাহান্নটি শনিবার সমেত সারা বছরে যত অন্যান্য ছুটি আছে সব ভোগ করেন। আর্ণড লিভ আছে সঙ্গে ট্রাভেল লিভ আলাঊএন্স  ও পান অনেকেই। সমগ্র শিক্ষক–কুল প্রতি শনিবার নিজের কর্তব্যে অবিচলিত থাকেন। গ্রীষ্মাবকাশ, পুজোর ছুটি এবং অন্যান্য সব ছুটি মিলিয়ে সারা বছরে মোট পঁয়ষট্টি টি ছুটির বেশি কিছু নেই। পাঁচদিনের বেশি টানা বেড়াতে গেলে মিথ্যে কথা লিখে মেডিকেল লিভ নিতে হয়, কারণ অন্য কোনো রকম ছুটি, আমরা শিক্ষকরা, পাওয়ার যোগ্য বলে আইনে বা নিয়মে নেই।


 একটি ক্লাস সামলে পড়ানো, একেবারে কিচ্ছু না জানা ছাত্রছাত্রীদের, যারা নিজের নাম পর্যন্ত ঠিক করে লিখতে পারে না, পড়তে পারা তো দূর,  যথার্থ শিক্ষাদান খুব সহজ কাজ নয়। এরকম পর পর তিনটি ক্লাস করলে যে পরিমান শারীরিক ও মানসিক ক্ষমতা লাগে তা ঠিক বলে বোঝানো সম্ভব নয়। খুব যে আরাম-দায়ক মজার ব্যাপার, তা কিন্তু আদপেই নয়। গত তেইশ বছরে যাঁরা আমার সামনে এই কথা বলেছেন, তাঁদেরকে একদিন একঘন্টার জন্য কাজটা করে দেখাতে অনুরোধ করেছি। কেউ এগিয়ে আসেন নি, শুধু বলার কথা বলে গিয়েছেন যে শিক্ষকরা পড়ান না, বা ভুল পদ্ধতিতে পড়ান। তবুও প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ একসময়ে নিরক্ষর ছাত্রছাত্রীদের গড়ে নিয়ে এই শিক্ষকরা কি করে নানা বৈতরণী পার করে দিচ্ছেন, গাভীর  লেজ না ধরিয়েই, তা আশ্চর্যের ও অত্যন্ত গর্বের। হয়ত আমার সেই ‘ঠিক পদ্ধতি’  শিখতে চাওয়ার অনুরোধের ধরণে কোনো গোলমাল ছিল, তাই জ্ঞান দেওয়ার বাইরে গিয়ে কেউ-ই এগিয়ে আসেনি নি। খুব সন্দেহ আছে, এঁদের কতজন ‘ডিসলেক্সিয়া’ কথাটির সঙ্গে, ‘ফার্স্ট জেনারেশন লার্নার’ সম্পর্কে পরিচিত। যদিও বা পরিচিতি থেকে থাকে তা ‘তারে জমিন পর’- এর আমির খানের দয়ায়। কিন্তু ওই ডিসলেক্সিয়া ফার্স্ট জেনারেশন লার্নার-দের ক্ষেত্রে আমাদের দেশে হিমশৈলের শিখরের ভগ্নাংশ মাত্র। 


 শিক্ষকদের বেতনের ব্যাপারে আমাদের স্বয়ং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষই ভীষণ হিংসাকাতর। কিন্তু বিশ্বাস করুন, আমার চেনা পরিচিত কোনো শিক্ষক অন্য কাউকে এই চাকরী গ্রহণে বাধা দেন নি। তখন গ্ল্যামারাস চাকরী করতে চেয়ে সেই দিকে চলে গিয়েছেন। আমাদের বেতন কাঠামো-কে করুণার চোখে দেখেছেন। ‘লাইফ ইজ সো বোরিং’ বলে নাক সিঁটকিয়েছেন। কেন -- এর উত্তর তাঁরাই দিতে পারবেন, যাঁরা আজ শিক্ষককুলের ওপর নেহাত-ই অকারণে শ্রদ্ধা হারিয়ে খড়্গহস্ত হয়ে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। বিচ্ছিন্ন কিছু অবাঞ্ছনীয় ঘটনাকে সম্বল করে শিক্ষা-ব্যবস্থার মেরুদণ্ড-কে প্রতিনিয়ত আঘাত করলে সমগ্র জাতি কিন্তু একদিন পঙ্গু হয়ে পড়বেই পড়বে।


আমি যে সরকার পোষিত বিদ্যালয়ে গত তেইশ বছর ধরে শিক্ষা দিয়ে চলেছি, সেটি আজ ছাত্রশূন্য। উলটো দিকের গলির মধ্যে প্রাইভেট ইংরেজী মাধ্যম বিদ্যালয়টিতে ছাত্রছাত্রী উপচে পড়ছে। প্রায় তিন হাজারের কাছাকাছি। আমার মত দৈন্যদশাগ্রস্ত সরকার পোষিত বিদ্যালয় হাওড়া জেলার বুকে প্রায় বত্রিশ-টি। সরকারীভাবে কিছু চাইতে গেলে, কোনো রকম আলাদা উদ্যোগের বেশ অভাব লক্ষ্য করা যায়। আমি আমার চাকরী জীবনে কোনোদিন দেখলাম না যে কোনো স্তর থেকে এই বিদ্যালয় গুলিকে উন্নত করার জন্য কোনো আলোচনা হয়েছে, বা কেউ এসে বলেছেন, "কি দরকার বলুন। আমরা পাশে আছি"।

আম্ফানে ছাদ উড়ে চলে গিয়েছে, জানলা-দরজার পাল্লাও। সঙ্গে  করোনা আবহে সব ছবি তুলে এস্টিমেট দিতে দিন দশেক দেরী হওয়ায় আমাদের বিদ্যালয়ের নাম আম্ফানে অর্থসাহায্য পাওয়ার তালিকা থেকেই বাদ। যে সমস্ত বড় ও নামী ইস্কুল সময়ে জমাই দেন নি, তাঁদেরটা ব্যাকডেটে দিব্যি জমা করার জন্য অফিস থেকে ফোন করে জমা দেওয়ার জন্য তাগাদা দেওয়া হচ্ছে রীতিমত। আগে রাগ হত, এখন হাসি পায়। ‘তেলা মাথায় তেল দেওয়া মনুষ্য জাতির রোগ’  মনে হয়।


শিক্ষক হিসেবে কিছু সরকারী ন্যায্য প্রাপ্য চেয়ে বসলেও কেরানী থেকে আধিকারীক সবার সাহায্যের বদলে মেলে তির্যক মন্তব্য, যার জন্য কোনো শিক্ষক বা তাঁর বহু কষ্টে অর্জিত বিদ্যা, কোনোটিই দায়ী নয়। ডিস্ট্রিক্ট ইন্সপেক্টর সাহেবের অফিসে গেলে মনে হবে, এত লেখাপড়া করাটাই মস্ত ভুল হয়ে গিয়েছে।


উদাহরণস্বরূপ গল্প: 

চাকরী করে সান্ধ্যকালীন এম-এ কোর্স (রেগুলার) শেষ করেছিলাম। তার ন্যায্য প্রাপ্য আদায় করতে যে সব কাগজ পত্র লাগত, নানা জায়গা থেকে, সে সব জোগাড় করতেই বছর খানেক কেটে গেল। অবশেষে জোগাড় যন্ত্র করে বিদ্যালয়ে জমা দিলাম সব। তিন বছর পরে ফাইল খুলে দেখলাম, আমার নথি পড়েই আছে, জেলা পরিদর্শকের দপ্তরে জমা-ই হয় নি। কারণ জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক মহাশয় জানালেন, কোনো এক সিনিয়র শিক্ষক বলেছেন, আমাদের বিদ্যালয়ে অনেক এম-এ এবং এম-এস-সি আছেন।  আর এর থেকে বেশি দরকার নেই। সবে দু-দিনের ছোঁড়া, ও পাবে নাকি, স্কেল? অত্ত সোজা?


কোনো কথা না বাড়িয়ে সব আবার তৈরী করে প্রধান শিক্ষকের সহায়তায় নিজে নিজের ফাইল নিয়ে জমা করলাম জেলা পরিদর্শকের দপ্তরে। আবার মাস ছ’য়েক কেটে যাবার পর খোঁজ নিতে গিয়ে জানলাম, ফাইলে বেশ কিছু নথী নেই। আমার মনে আছে আমি জমা দিয়েছিলাম। আবার দিলাম, কিছু না বলে। আবার অন্য নথী, যা আগের বার ছিল, তা এবারে নেই। চলল এভাবে আরো ছ’মাস। রফা হল শেষে, আমি যা পাব তার পাঁচ শতাংশ দান দেব। একদিন জেলা পরিদর্শক সাহেব ডেকে পাঠালেন।


ওনার ঘরে ঢুকে দেখলাম উনি চার পাঁচজন ব্যাক্তির সঙ্গে চা-বিস্কুট সহযোগে রসালাপে ব্যস্ত। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে অধৈর্য হয়ে বললাম।


--বসতে পারি?

না তাকিয়েই হাত দেখিয়ে বসতে বললেন। সবাই থেমে আমার দিকে তাকালেন।

--বলুন কি ব্যাপার।

--এই এম-এ-র স্কেলটার জন্য এসেছিলাম। একটু যদি দয়া করে দেখে ছেড়ে দেন, বড় উপকার হয়। অনেক দিন থেকে ঘুরছি।

--কোন ইস্কুল?

নাম বলতেই, অন্য যাঁরা ছিলেন, তাঁদের মধ্যে একজন আমার দিকে আপাদ মস্তক তাকিয়ে বললেন,

--নতুন?

--না, বছর পাঁচেক হল।

--তোমাদের ইস্কুলে ক্লাস হয়? যত সব বাপে-তাড়ানো মায়ে-খেদানো ছেলে তো জোটে…আর কটাই বা ছাত্র যে এম –এ স্কেল চাইছ?

ডি-আই সাহেব ও মৃদু হেসে বললেন,

--বলুন এবার, কি বলবেন, চাইতে লজ্জা করে না?

আমি তখন আর পারলাম না, ধৈর্য রাখতে, যা হয় হোক। আত্মসম্মান রখহার তাগিদে হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হলাম। উনি হতে পারেন আধিকারিক, সরকারী চাকরী করেন। আর যিনি কপচাচ্ছিলেন উল্টোদিকের চেয়ারে বসে, তিনি আমার মতই একজন শিক্ষক মাত্র। আমি তো কোনো অন্যায় করি নি, যে অকারণে এত লেকচার শুনব!


--স্যার, বলতে বাধ্য হচ্ছি যে আমাদের বিদ্যালয়ে যে ধরণের ছেলেরা পড়তে আসে, তাতে তাদের কোনো মেধাবী ক্লাস এইটের ছাত্রই শিক্ষক হিসেবে যথেষ্ট। আমি লজ্জিত নই এই কারনে যে লজ্জা তাঁর হওয়া উচিত যিনি এই পদটিকে এম-এ পর্যন্ত অনুমোদন দান করে সরকারী টাকার অপব্যবহার করেছেন। অনেক এন-জি-ও আছে যাঁরা দশ জন পিছিয়ে পড়া ছাত্র দেখিয়ে লাখ-লাখ টাকা উপার্জন করছে। আমরা তো তবু শুধু মাইনে পাই। আমি গর্বিত যে এই সব খেদানো ছেলেদের ফি বছর কোনো প্রাইভেট টিউশন ছাড়াই আমাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা মাধ্যমিক পাশ করিয়ে দেন এক্কেরে বিনি পয়সায়। আর রইল পড়ে ক্লাসের কথা,ভবিষ্যতে কোনোদিন শিক্ষক নেতা হলে আমি নিশ্চই একদিন হলেও আপনার অফিসে বসে স্কুল আওয়ারে নিজের ক্লাস কামাই করে, আপনার পয়সায় চা বিস্কুট খেতে খেতে, অন্য কোনো জুনিয়র শিক্ষক কে ক্লাস নেওয়ার শিক্ষা দান করে যাব। এ-ও তো শিক্ষা, তাই না?  ঢেঁকি সগগে গিয়েও ধান ভাঙে!

সেই শিক্ষক নেতা চেয়ার ছেড়ে দাঁড়িয়ে বলে উঠলেন,

-- হাঊ ডেয়ার ইউ! তোমার সাহস তো কম নয় হে ছোঁড়া! আমাকে অপমান করলে তুমি? জান আমি কে?


-- ইয়েস স্যার আই ডেয়ার…আপনি-ই শেখালেন নির্ভীক হতে, লাইন ক্রস করতে। অপমান আমি করি নি, চাই ও নি। আপনি যেচে নিলেন। নিজের সম্মান নিজে ধরে রাখতে পারলেন না। আমি বরং আমারটা ধরে রাখি! আর আপনি কে? শিক্ষক-মাত্র। সরকার আমাকে আর আপনাকে একই ভাবে পোষে, কারণ আমার ও আপনার। দু জনের স্কুলই ‘সরকার পোষিত’।

ডি-আই সাহেব আমাকে ধমকে বললেন,

-- আপনি ওভাবে কথা বলতে পারেন না।

-- স্যার, মার্জনা করবেন, কিন্তু উনি  যখন প্রথম আমাকে বললেন, তখন কেন আমার সম্মান রক্ষার্থে এই কথাটা ওনাকে বলেন নি? ভেবে দেখবেন স্যার, একটু। ...আপনার অনুমোদন, এই  নথি-তে সাক্ষর…

কাগজটা বাড়িয়ে দিয়ে বললাম।

দ্বিরুক্তি না করে খসখসিয়ে সবুজ কালি দিয়ে ঝপাঝপ সাক্ষর।

-- আমার সীল-টা বাইরে ডেস্কে দিইয়ে নিন, আমি বলে দিচ্ছি। এই গনেশ……!!!!!

হাঁক পাড়লেন স্বয়ং ডি-আই সাহেব।

(চলবে)

Bengali Director Bags ‘Dadasaheb Phalke’ for ‘Tabeeb’

 


Link:

https://www.darpanpatrika.com/2020/09/dadasaheb-phalke-honour-for-tabeeb-arya.html?fbclid=IwAR0rf1hLFfDUoWDwdYNijRgwGnpNNTlJJdigndmmw2GBfHTUmtUmcdnQd7E

Arya Chatterjee

September 20, 2020



It has been almost a year the shoot of the short film ‘Tabeeb’ was complete. Post edit took few more months. And then, it created quite a wave with half a dozon of smooth entries to the prime short-film festivals including ‘Dada Saheb Phalke Short Film Festival: 2020’.

This ‘Six Sigma’ production had ‘Boombazz Creation’ in collaboration from its scratch till the end.  The producer- director of the short film, Mr. Tanmay Nag is a poet-turned-director and leaving his IT Education business behind, had set sail for Mumbai to try out his aesthetics to be expressed in a different genre. Perhaps his hunger for expression was not satiated through writing poems. He wanted to create poetry on screen, because according to him, “In films even silence speaks.” He also had his reasons to fall back onto the short films, Firstly because “I find it befitting to the genre of poetry, not epics.” And secondly, “because I have an acute fund crunch because there is no one to understand and fund my kind of films at this point of time. What I am making are not commercially acceptable to the Indian viewers. Thus this is the form now I may run self-sufficient for. I am ensuring that I do not lift a project that I cannot carry.”

With various nominations and honours for “Tabeeb” Tanmay regrets that he had to bend the actual structure of the entire movie which he had made in a ‘documentary’ genre to talk about fiction based on reality. The edge of ‘documentary’ ran parallel to real life bites to add to the story which we generally term as ‘a fiction’. Tanmay was hard on the success of making his dream come true when he aspired to break the tradition with a concept that the reality bites would juxtapose the fictional tale to tell the audience that “Truth is greater than fiction”.


However, this poetic composition was not accepted by the larger audience, though Tanmay reckons that “thousands of short films are made in India which have better merits than ‘Tabeeb’ …but this special composition was the only edge of the movie that would cut through and I think that the short was selected for the Dada Saheb Film Fest 2020 only for that unique perspective.”

The director regrets that youtube had a different view on this and he had to succumb to the average outlook and re-edit the entire film before getting it posted in the google video platform to attract more views. “Someday people would understand the relevance of the original format “Tabeeb” was based upon. May be someone else would make both ends, the reality and the fiction juxtaposed, meet, in a much more smooth manner which would meet the standards and expectations of the larger audience, in future. I would rather be happy if I myself am able to do that. But for now, my form is a jerk to the mind of the audience…I still cannot take that seventeen good minutes of the original forty-five-minute-short had to be pruned to be left to a nothingness. All the poetry in the entire composition is gone now. ”


“Tabeeb – The Physician”, is a short film on the eroding values of the doctors around. The god’s descendents, as believed to be, are split apart between two choices- values of human life and taking laws in to hands to save lives contrasted to the minting money out of that socially respected figure. The story is told in black n’white without much of symbolisms and full of cuts. Due to the reinforcement of the re-editing sometimes the cuts are abrupt and the background track remains unmatched without having any aesthetic progression. The prime actors are excellent, especially the protagonist, while the supporting actors are at bay. Rajvir has delineated the character of a dignified doctor with real sense of values and responsibilities quite  beautifully with less of dialogues and more of expressions. “All these anomalies, excepting the acting skills, are because of the new rendition to the entire short”, as claims the producer-director Tanmay Nag.


“I really am optimistic about making further movies in the genre I aspire for, and the faults in the previous ones will lead me to turn out to be a better story-teller in the shorts I create in poetic ways. My previous experiment ‘Kashak’ was a serious story-telling in all a silent manner and it also has its own progression, mounting and success in its own way. Unless and until we, the directors, show the audience something new, they will never have the urge to get adapted to the tastes of the new genres”, says Tanmay, a brave-heart in the midst of commercialization of everything.

It sounds like a new flavour of wine to get adapted to, to like it after quite some time. Adaptation in aesthetic taste happens over a period of time.

Exposures & Credentials:

·         10th Dada Saheb Phalke Film Festival, 2020

·         Best Medical Health Short: Model and Movie International Short Film Festival, 2019

·         Benaras Hindu University, Bengali Department, 2020

Link  to “Tabeeb”: https://www.youtube.com/watch?v=CFRCAyfA1Xo

Link to “Kashak”: https://www.youtube.com/watch?v=-kiIEqxcjPg

 

 

 

Tuesday, 15 September 2020

New Normal

 কেমন আছ? new normal -এ?

আরে এক্সাইডের মোড় তো আর excited হয় না...গ্রীন পুলিশে খেদায় না আর। তাদের কেই খেদিয়ে দেওয়ার জোগাড়! 

আমি লম্বা চুল রাখার চেষ্টায় আছি। সঙ্গে বুড়ো হব বলে রেখেছি Van Dyke...ঊনবিংশ শতকের শিল্পীর ধাঁচে....শিল্পী-রা বড় পাঁকাল মাছ...বাঁধতে চাইলেই হল, নাকি!...slippery when wet হয়েও...আমিও পাঁকেই ডুবে রইলাম...আঁশ তো নেই, ছাল আছে। কেউ যদি ছাড়িয়ে নেয়, সেই ভয়েই হয়তো!


হ্যাঁ...শিল্পী বলতে মনে পড়ল...এ বছর তো আর কুমোরটুলি যাওয়া হবে না...তোমার সঙ্গে...

আমি একাই গিয়েছিলাম একদিন। দেখে এলাম! জানো, কেমন সব ছেঁড়া...টুকরো টুকরো...পেটের তাগিদে ঠাকুরের মাপ-ও ছোটো হয়ে যায়। মনে পড়ে যায়, 


"...বল ভাই কি দাম দেবে/ পুতুল নেবে গো! পুতুল!"


পার্বতী ছিলে স্বপ্রকাশে। গুছিয়ে নিতে হঠাৎ  রাধা হলে। শিব বললেন, আরে আরে কর কি! আমার মুখোশ যখন তার বাঁশির সুরে খসালেই, তখন, বিসর্জন ভবিতব্য...পুলকে, আহিরীটোলা না বাঁধাঘাট? লঞ্চে সাতটাকা। কিন্তু সাঁতরালে আমি অজেয়...যদিও জানি না কোন ঘাটে উঠব। একটাই ভরসা, নদীতে পাঁক নেই। শুধুই পলি।


অবগাহনে তো মুখোশ পরতে হয় না। গঙ্গার জলের গন্ধ বদলে গিয়েছে। নেই সে সব বর্জ্য আজ আর, যেখানে হঠাৎ ভাসলে পচা গরুর পেটে জেগে ওঠে মাথা...সাঁতার কাটি নদীর বুক চিরে, আজ ও, অকারণে...


এতদিন ভরসা ছিল, তুমি নেই তো কি! কলাবৌ তো ছিল, পরম বিশ্বাসে, নিঃস্বাসে। ডোবাবো তোমাকে, সব নিয়ে...


New normal-এ আমিই ডুব-সাঁতার...জলসাঘরে...জল-সাগরে।

মহাভারতের লেখকের মত আজ আমারও সেই একটা দাঁত ভাঙ্গাই রয়ে গেল...চিরকালের পুরাণের মত....


এই সব যখন লিখে চলেছে আমার মনের গভীরের আমি, তখন কানের পাশে বাজছে, ক্যাকটাসের 'শিকড়ের গান', পটা-র গলায়। আমি যেন স্থির। পাশ দিয়ে চলে যাচ্ছে, কামিনী স্কুল লেনের বারোয়ারীতলা, সেই বটগাছ, পুকুর আর ঠিক 'জয় বাবা ফেলুনাথ'- এর আদলে তৈরী হতে থাকা ঠাকুর। ঢুকে পড়লাম, দুগগা দুগগা বলে। একই রকম আছে সব। শুধু পুকুর ঘাট বাঁধানো। বাঁধানো ঠাকুর দালান-ও। সেখানে চলছে কচিকাঁচাদের মহালয়ার শুটিং। খড়ের গায়ে মাটি পড়ে আবহ প্রায় শেষের পথে। বটগাছের ঝুরিগূলো বাড়তে বাড়তে শিকড় বেঁধে ফেলেছে। পাতার ফাঁক দিয়ে ওপরের দিয়ে তাকিয়ে গাছের ডগাটা দেখার চেষ্টা  করলাম। পেলাম না। শান বাঁধানো ঘাটের ওপর একটা ডাল এমন ভাবে নুয়ে পড়েছে যেন জল কে ছুঁলেই আদর পাবে, এই আশায়। এই সব ভাবতে ভাবতে কোথায় হারিয়ে গেলাম! বাড়িতে গরম হলেই, আমাদের লোহালক্কড় মার্কা শহরে, এই বটগাছের স্নিগ্ধ ছায়াতেই জুড়িয়েছি প্রাণ, সব বন্ধুরা মিলে। ফ্রেম টু ফ্রেম বেশ যাচ্ছিলাম। হঠাৎ 'কাট'। এই শর্ট ফিল্মটা প্যাক আপ হয়ে গেল। মনে পড়ে গেল, আমাকে যেন-তেন-প্রকারেণ মায়ের দু-পায়ের হাঁটুর ক্যাপ কিনে আনতেই হবে। না হলে চলা ফেরা করাটাই দায় হয়ে উঠেছে তাঁর পক্ষে। বাবা তো পা ভেঙে বসে আছে। জানি না, এর পর কি। তবু-ও এত কাব্য বের হয় কি করে! কেনই বা! 


অনেক হযবরল পাকাতে পাকাতে যখন চিন্তায় এমন জট পড়ে গেল, যে খুলতেই পারছি না, দেখলাম হিন্দু হস্টেলের সামনে দাঁড়িয়ে। হাতে 'মৌচাক'-এর পূজাসংখ্যার জন্য লেখা পাণ্ডুলিপি। 

পাণ্ডুলিপির মতই পানসে মুখে গ্যারেজ করা অনেকগুলো হাতে টানা রিক্সা গাড়ি, কলকেতা শহরের অন্যতম পুরোনো ঐতিহ্য, ট্রামের থেকেও পুরোনো, প্রায় পালকির সমসাময়িক। প্রথম যখন চড়েছিলাম, মনে আছে, ভেবেছিলাম উল্টোদিলে পড়েই যাব। রিক্সা ওয়ালার খালি পা, আর হাতের আঙুলে পাকানো পিতলের ঘন্টি। প্রথম অভিজ্ঞতার দিক থেকে বলতে পারি, বিমানে চড়ার থেকেও অনেক বেশি সাংঘাতিক। অনেকটা লালমোহনবাবু ওরফে জটায়ূ নামক 'বড়ীয়াঁ পাকষী, জেটায়ূ'-র প্রথম উটের পিঠে চড়ার মত।

অনেক বুকে কান্না নিয়ে সবাই এমন ভাবে দাঁড়িয়ে আছে যেন কবরের সারি, শতযুগ ধরে তাদের আত্মা ঘুরে বেড়াচ্ছে শহরের বুকে। তাদের মধ্যে একটি পাশের ট্রান্সফরমারে মুখ গুঁজে পড়ে আছে, যদি ইলেকট্রিক শকের তাড়সে নিস্তব্ধ স্নায়ুন্দ্রিয়ে উত্তেজনা প্রবাহের মাধ্যমে কোনক্রমে প্রাণের সঞ্চার ঘটে। 


কিছুদিন ধরেই উত্তমকুমারের বেশ কিছু সিনেমা দেখছিলাম। ক্যালকাটা মেডিকেল কলেজ আর ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালকাটা - দু-টির সামনের মোটা থামওয়ালা স্থাপত্যকর্ম বেশ ঘুরেফিরে আসে। সংস্কৃত কলেজের সামনের দিকটাও অনেকটাই এ রকম। ট্রামলাইন ধরে হাঁটতে হাঁটতে দেখলাম বেশ ভাল ফ্রেম। তুলে নিলাম ছবি। এটাও ধ্রুপদী, কিন্তু একসময়ের ঝুল নোংরা পড়া দৈন্যদশার বদল ঘটেছে। পাশাপাশি দেখতে পেলাম, শহর কি রাখতে চাইছে আর কি থেকে নিষ্কৃতি পেতে চাইছে, বিশ্ববিদ্যালয় আর হাতে টানা রিক্সা। সাম্যবাদের কথা যতই কপচাই না কেন, কিছু ব্যাপার রাখা আর না রাখার সিদ্ধান্তে কিন্তু 'প্রিভিলেজড সেকশন'-এর হাত থেকেই যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজন তাই চিরকালীন, কিন্তু শহরকে দূষণ থেকে বাঁচাতে হাতে টানা রিক্সার আর যুক্তিগত প্রয়োজন নেই। এম্বাসাডর কোম্পানী অবলুপ্ত হলেও সরকারী গাড়ি আর হলুদ ট্যাক্সি এর বিকল্প খুঁজে পায় নি। কিন্তু হাতে টানা রিক্সার বিকল্প পেয়ে গিয়েছে কলকাতা -- উবের আর ওলা ক্যাব। 


মা-এর জন্য হাঁটুর ক্যাপ সেন্ট্রাল এভিনিউ থেকে কিনে নিয়ে যতক্ষণে 'মৌচাক'-এর অফিসে গিয়ে পৌঁছালাম, ততক্ষণে মাস্কের মধ্যে দিয়ে বের হওয়া উষ্ণ কার্বণ-ডাই-অক্সাইড আমার চশমার কাচ কে স্মোকড গ্লাস করে দিয়েছে। 

-- বড় দেরী করে ফেললেন। শারদীয় সংখ্যায় জায়গা হবে কি না জানি না। প্রুফ রিডিং পর্যন্ত সমাপ্ত।

-- এই রে! যাক গিয়ে! আপনারা আজ পর্যন্ত আমাকে কোনোদিন নিরাশ করেন নি। দেখবেন যদি কিছু করে ঢোকানো যায়! না হলে তো পরের সংখ্যা আছেই। 

-- আপনি আমাকে ফোন করে মনে করিয়ে দেবেন একটু। 

-- নিশ্চয়ই।


ফোন করে মনে করিয়ে দেওয়ার কথায় মনে পড়ে গেল। আমার ডিজাইনার মিউজিক সিস্টেম টা যাঁকে সারাতে দিয়েছি, তিনিও বলেছিলেন, ফোন করে মনে করিয়ে দেওয়ার কথা। ভুলেই গিয়েছি। ডিজাইনার মিউজিক সিস্টেম শুনে অবাক হবেন না। কারণ এটি আমার এক বিশেষ বন্ধু প্রায় পনেরো বছর আগে নিজে হাতে বানিয়ে দিয়েছিল। পুরো টেইলর মেড। সারাতে নিয়ে গেলেই সবাই নাক কুঁচকে বলে, ধুর মশাই ফেলে দিন, এসব খুচরো কাজের যুগ আর নেই। মায়া করে ফেলতে পারি নি। অবশেষে এই ভদ্রলোক, অনেক পুরোনো রেডিও-র আর স্পিকারের মধ্যে বসে পুরু চশমার কাচের মধ্যে দিয়ে, বিড়ির ধোঁয়ায় মোহময় হয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বললেন, "রেখে যান, দেকচি!" আমি এই আশ্বাসেই ধন্য হলাম।... তাই মনে পড়ল, জিনিষটা যেদিন দিয়ে এসেছিলাম, বলেছিলেন, ফোন করে মাঝে মাঝে মনে করিয়ে দেবেন।"


এই বিশ্বব্যাপী পরিবর্তনের ফলে অনেক কিছু হারিয়েছি যেমন আবার এমন কিছু নিজের মধ্যে খুঁজে পেয়েছি যে সে সমস্ত দড়ি টানাটানির ফলিত বল শেষ পর্যন্ত সরণ বিন্দু-কে শূণ্যতেই এসে দাঁড় করিয়েছে। চেষ্টায় আছি এই শূণ্যকে পরমশূন্যতে টেনে নিয়ে গিয়ে অন্তরের মোক্ষলাভ করার....


facebook link of publication:

https://www.darpanpatrika.com/2020/09/blog-post_19.html

আদিরস

মাকড়সার রস গায়ে মাখলে কি 

নিয়ন আলো পিছলে

শৈশবের হ্যারিকেন হয়ে যায়?

শেষবারে ধিক্কার শুনেছিলাম। 

বাদামভাজার খোসা ভেলপুরী হয়ে 

গঙ্গার ঘাটে পার্কার কলম বেয়ে

মিথ্যে শব্দের মসি।


মহালয়ায় অবগাহন স্নানের তর্পনের কুশীতে

ঘেঁটে যাওয়া তিলের কাজলে আয়নার দাগ--

প্রতিবিম্বে তাজমহল।

শ্বেতপাথরের বিমূর্ত নিভৃত জঠরে

ভবিষ্যতের হত্যা-

চাদরের দাগে ফুটে ওঠে শ্রাঊড।

ঈশ্বরের দিকে তাকিয়ে,

ধর্মযুদ্ধের মত।


এখন ড্রাকুলা বা ভ্যাম্পায়ার।

যা কিছু সুন্দর, গলার ধমনী খুঁজি। 

ঊষ্ণ রক্তের স্বাদ বড় মধুর --

কয়েদখানার দেয়ালের গায়ে জমা 

কষা নোনতা হলুদ পেচ্ছাপের মত --

তেষ্টার জিভে, অমৃত! 


আকাশবানী কলকাতা,

 -- আগে পুরুষ হও!

বিক্ষিপ্ত নেশায়,

আগুনের হল্কায় সেঁকে নাও

অন্তরের বার্বি কিউ।

ক্ষাত্রধর্মে কোটি কোটি বদলার মাঝে

ব্রাহ্মনের মান্ধাতার একটি মাত্র ক্ষমা! 

দর কষাকষি হোক,"ক'য়ের পিঠে ক'য় নয়?

বেয়ারা! বেয়ারা! 

ব্যালেন্সশীট পাত!!

শুয়োরের মাংস রাখ! 

কাঁটা যেন গোলাপের হয়! লাল!"

হাতে ধরা পেন্সিলের বদলে

সুদর্শন চক্র --

 পৈতের ন'পাকে

সাইকেলের ফাটা চাকায়

জেগে থাকা শিরদাঁড়া।

তাই শকটে সওয়ার।

থার্ড গিয়ারে ত্রিশূল হয়ে নিঃশব্দে ফিশন,

গতির বিষ্ফোরণ!

কেঁপে উঠল ডি-এন-এ।


জন্ম-জন্মান্তরের বিশ্বাস,

একটাই--

তিরিশ ওয়াট বালবের নিচে

লেখণীর অনাবৃত দাঁত!


সুরাচ্ছন্ন পাণ্ডুলিপিতে তোমরা সবাই 

আর অভিশাপ দিও না, 

মৃত্যুর অভিশাপে মানুষ 

আজকাল বড্ড বেশি বাঁচে--

ভয় হয়, 

শেষে অমর না হয়ে যাই!


facebook link of publication:

 https://www.darpanpatrika.com/2020/09/blog-post_810.html

Friday, 4 September 2020

অবয়ব

আলপিন বড় ফিনফিনে নখে
খামচে ধরেছে রোদ্দুর
আতস কাঁচের তরতাজা চোখে
মানচিত্র আর ক'দ্দূর

দইফোঁটা চাঁদ বদন কপাল
ছাতির খাঁচায়  সিন্দুক
টিস্যুর বদলে মোছে দিকপাল
খবরেতে ছাপা নিন্দুক

আবডালে আমে ভেন্টিলেশন
ঝড় খুঁজে ফেরে নিঃশ্বাস
কথার প্যাঁচেতে সাতপাকে মন
গর্ভপাতে তে বিশ্বাস

উনুনের আঁচে ঢাকা পড়ে আছে
লালসুতো নীলসুতো
কস্তুরী মৃগ চৌরাস্তার কাছে
উৎকোচে বেলা দু'টো

পেয়ারাটা ডাঁশা সবুজ খোশায়
চুমকি বসিয়ে হ্যালোজেন
আলোকবর্ষে কামড় বসায়
ফুলস্টপে ঘেরা হাইফেন

নদীর চড়ায় বাক্য হেঁটেছে
ঢেউ গুনে চলে পাল্কি
জলস্রোতে বারুদ ফেটেছে
কফি হাউসেতে কাল কি....?