The problem with us now is that we all see, hear and even react to things without trying to understand them.
সবার আগে যেটা মাথায় রাখতে হবে যে, সারা ভারতে তথা যে কোনো রাজ্যে শিক্ষার স্থান কে যে সরকার-ই খোঁড়া করার চেষ্টা করবেন, তাঁদের জনমানসে ভাবমূর্তি ধরে রাখা অসম্ভব। সরকার, বিশেষত: প্রায় বিরোধী-বিহীন সরকার, যে যথেচ্ছাচার করবেন (ইতিহাস তা-ই বলে), এটাই স্বাভাবিক। কারণ, ক্ষমতায় থাকা রাজনৈতিক দলের পক্ষে চিরকালই উচ্চশিক্ষিত মানুষদের অন্ধ আনুগত্য ও চাটুকারিতা তাঁদের এক অলিখিত সামাজিক শংসাপত্র দেয় যে, তাঁরা যা করছেন, ঠিক করছেন। মানুষ না হলে কি আর তাঁদের পাশে থাকত! রাজনীতির অলিন্দে 'বিবেকবোধ'-এর আশা না করাই যুক্তিযুক্ত। কিন্তু মানবিকতা ব্যতিরেকে রাজনীতি হল স্বৈরাচারী রাজতন্ত্রের সমান। সেখানে যখন আবার আত্মম্ভরীতা এসে বাসা বাঁধে, তখন সে রাজতন্ত্র একনায়কতন্ত্রে পরিণত হয়। এগুলো বোধহয় সবাই জানে।
এ-ও সবাই জানে যে ডাক্তারের সন্তান ডাক্তার হবে, এঞ্জিনিয়রের সন্তান, এঞ্জিনিয়র, ব্যবসায়ীর সন্তান, ব্যবসায়ী এবং আরও কত কি। কিন্তু যাঁরা গুণ্ডা, ক্রিমিন্যাল, তাঁদের সন্তান? শিক্ষক হিসেবে আমার অভিজ্ঞতা বলে যে তাঁরা যত বড় ক্ষমতার অধিকারী-ই হোন না কেন, তাঁরাও কিন্তু চান যে তাঁদের পরের প্রজন্মের মানুষরা যেন তাঁদের মত না হয়...তারা যেন শিক্ষিত হয়, ভাল মানুষ হয়, স্বাভাবিক জীবন স্বচ্ছল ভাবে যাপন করে। ধরুন, ডাকসাইটে মফিয়ার মেয়ে সম্পূর্ণ নিজের যোগ্যতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর হল, সেখানে কি সেই মাফিয়া গর্ব বোধ করবেন না!
কিন্তু সমস্যা হল, এগুলো যাতে না হয়, সেই ব্যবস্থায় নেমেছে আমাদের সরকার। কারণ তারা জানেন যে অশিক্ষাই আজ রাজনীতির একমাত্র ধারক ও বাহক। যত অশিক্ষা থাকবে, তত ক্যাডার পাওয়া যাবে। আর দেশের আইনের মত, শিক্ষাও শুধু বড়লোকের জন্য তোল থাকুক।
বুকে হাত দিয়ে কেউ বলুক, যা বললাম, ভুল। জানি প্রশ্নের বাণ ছুটে আসবে ৷ উদাহরন তুলে তুলে দেখানো হবে - কবে কবে, কোন কোন লোক কি কি খারাপ কাজ করেছিল। প্রমাণিত হবে আমি যা বললাম সব ভুল। সে ই ভুল প্রমাণ করে খুশি হবে কত লোক। কত লোক বলবে, 'এত বোঝেন্, আর এটুকু বোঝেন না!' কিন্তু মনে মনে জানেন শিক্ষার নামে যা চলছে, তা সত্যই গ্রহনযোগ্য নয়। আর সত্যিই খারাপটা কি কোনো উদাহরণ হতে পারে? একটা বাড়ি দেখাক কেউ, যেখানে সন্তান ভাল ফল না করার ফলে, তাকে বোঝানো হয়েছে যে, কে কে আরো খারাপ করেছে! অন্য কেউ যদি তা বোঝাতে চায় তাকে কি করা হবে?
কিন্তু রাজনীতি এমন বিষয়, যে সেখানে এ সব প্রশ্ন চলে না। কেউ প্রশ্ন করে না যে এত বছর তো নিজেদের প্রমাণ করার সুযোগ পেলে, তুমি কেন সর্বশ্রেষ্ঠ হয়ে উঠতে পারলে না? পাব্লিক তোমায় কি দেয় নি, ভোট ছাড়াও? অনেক আশা ছিল যে তার, তোমাকে নিয়ে....!!!
'শিক্ষা' এমন একটি ব্যবস্থা যার প্রতি সবার অন্ধ আস্থা ও বিশ্বাস। যুগে যুগে। রাষ্ট্রের উন্নয়ণের নামে কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ যদি তা নিয়ে ব্যবসা করার উদ্দেশ্যে কোনো ভাবে যুক্ত হয়ে পড়েন, তাহলে কেউ তাদের ক্ষমা করবে না। তাদের পোষা কুকুর-রাও নয়।
যা লিখলাম, একজন অতি সাধারণ মানুষ হিসেবে, একজন শিক্ষক হিসেবে। সমাজ আমাকে সে জন্য সম্মান করবে, না, করবে না, সেটা সমাজের বাকি সাধারণ মানুষদের চেতনা ও শুভ এবং সুবুদ্ধির ওপর নির্ভর করে।
-- আর্য
দারিদ্র, দুর্নীতি এবং সমাজ
অরবিন্দ ঘোষ
(Relevant extracts in relation to Education)
দেশের সুশৃঙ্খল সামজিক নিয়ম বা রীতি, যা হয়তো বা দেশের কড়া আইন ও তার যথোপযুক্ত প্রয়োগের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, শাস্তি পাওয়ার ভয় না থাকলেও মানুষকে দুর্নীতিমূলক কাজ থেকে বিরত রাখে। কেউ নিজেকে দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত করবে কি না, এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে চার পাশে তাকিয়ে দেখে বোঝার চেষ্টা করে অন্যরা কী ভাবছে। এই প্রসঙ্গে অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসুর ‘টিচার ট্রুয়্যান্সি ইন ইন্ডিয়া— দ্য রোল অব কালচার, নর্মস অ্যান্ড ইকনমিক ইনসেনটিভস' গবেষণাপত্রটি বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য।
অধ্যাপক বসু ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে শিক্ষকদের কর্তব্যচ্যুতি ও না বলেকয়ে কামাই করার ক্ষেত্রে সামাজিক নীতি ও রীতির প্রভাবের কথা আলোচনা করেছেন। ২০০৪ সালে ভারতে শিক্ষকদের অনুপস্থিতির হার সর্বোচ্চ ছিল ঝাড়খণ্ডে (৪১.৯%) আর সবচেয়ে কম মহারাষ্ট্রে (১৪.৬%)। দুই রাজ্যে এই সময়ে শিক্ষকদের বেতন ও আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধার হার, এবং কর্তব্যচ্যুতির শাস্তি ছিল সমতুল, ফলে সে যুক্তিতে শিক্ষকদের আচরণের পার্থক্য ব্যাখ্যা করা যাবে না। দুই রাজ্যে শিক্ষকদের কর্তব্যচ্যুতির হারে ফারাকের মূল কারণ হল, শিক্ষকদের কাজে ফাঁকি দেওয়ার ক্ষেত্রে দুই রাজ্যে দু'ধরনের সামাজিক মনোভাব। যে রাজ্যে এই দায়িত্বজ্ঞানহীনতায় সামাজিক অনুমোদন যত কম, সেই রাজ্যে এমন ফাঁকিবাজি সামাজিক ভাবে ততই ‘ব্যয়সাপেক্ষ'। মহারাষ্ট্রে অনুমোদনের মাত্রা ঝাড়খণ্ডের তুলনায় কম, ফলে ফাঁকিও কম ছিল।
সাম্প্রতিক কালে পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যাপক দুর্নীতির যে আভাস মিলেছে, সামাজিক স্তরে তাকে অত্যন্ত ঘৃণ্য কাজ বলে প্রতিষ্ঠা করা খুবই জরুরি। সাম্প্রতিক পারিবারিক স্বাস্থ্য সমীক্ষার পরিসংখ্যান বলছে, এ রাজ্যে বহুমাত্রিক দারিদ্রের হার ১৫.৩%, যা সর্বভারতীয় গড় ১৬.৪ শতাংশের চেয়ে সামান্যই কম। গ্রামীণ বাংলায় এই হার ২০%, পুরুলিয়া জেলার (৩৬.৯%) অবস্থা আরও খারাপ। দারিদ্র, দুর্নীতি ও সামাজিক রীতির দুষ্টচক্রের কথা মাথায় রেখে এখনই দুর্নীতির বিরুদ্ধে সামাজিক সচেতনতা ও প্রতিরোধ গড়ে তোলা দরকার, না-হলে বড় দেরি হয়ে যাবে।
No comments:
Post a Comment