হলিউডি 'ট্রাজেডি অফ ম্যাকবেথ' -এর রিলিজ ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২১ তারিখে। প্রায় আধা পৃথিবী, এই গল্পের আগা-পাশ-তলা সব জানা সত্ত্বেও আবার দেখার জন্য অধীর অপেক্ষায় রয়েছে। কেন? আসলে বিষয় 'ট্রাজেডি'। তাও আবার শেক্সপিয়ারের। হলিনশেডের ক্রনিকলস যখন নিতান্ত গরীব শেক্সপিয়ারের হাতে গিয়ে পড়ল, উনি কি করলেন? -- ওই জানা গল্পগুলোকে এমন ‘কমার্শিয়াল’ করে পেশ করলেন যে লোকে আর না দেখে থাকতে পারলো না। সাধারণ প্রচলিত গল্প-কে এমন উচ্চতায় তুললেন, যাতে এক এমোঘ চৌম্বকীয় আকর্ষণ তৈরী হয় সেই জানা গল্পের অভূতপূর্ব প্রেজেন্টেশনের দিকে। শেক্সপীয়রের নাটক লেখার উদ্দেশ্য কিন্তু খুব বড় একজন সাহিত্যিক বা নাট্যকার হওয়া ছিল না। উদ্দেশ্য ছিল রুজি-রোজগার করে নিজের অস্তিত্ব টিঁকিয়ে রাখা। আর তা করতে গিয়ে মানুষের মন, দর্শক কি চায়, কি করলে, কিভাবে করলে, মানুষ নিজের জীবনের সঙ্গে নাটক-কে মিলিয়ে নিতে পারবে, কি করলে মনে হবে, “আরে এ তো আমারই গল্প, কেমনে ব্যাটা পেরেছে সেটা জানতে"। খাওয়া-পরার রেস্ত জোগাতে শেক্সপিয়ারের রচনা করলেন একের পর এক নাটক। এমন ডায়লগ দিলেন, এমন বাঁক এনে দিলেন ঘটনায়, এমন মোচড় ছোঁয়ালেন চরিত্রে, এমন অভ্যন্তরীন ও আভ্যন্তরীন মানসিক জটিলতার প্রকাশ ঘটালেন যে তা আজও লোকেরা চেটেপুটে খায়। সঙ্গে আছে ব্র্যাণ্ড। শেখ্যপীর --পীর ই বটে। কারণ এই সব পথ দেখানো তাঁর-ই হাত ধরে। আর সময়ের হাত ধরে সে সব চিরন্তন ফর্মূলা আর নাটকে আটকে থাকে নি। এমনই উনিভার্সাল সে সবের আপীল যে চলচ্চিত্রকাররাও এখনো সেই ছায়াকে কাটিয়ে উঠতে পারেন নি। শুধু সময়ের নিরিখে সে সবের বদল ঘটেছে। কিন্তু ব্র্যাণ্ড সেই একই জায়গায় ধ্রুবতারার মত স্থির ও চিরন্তন।
হলিনশেডের ক্রনিকল-কে যেভাবে দেখেছেন শেক্সপিয়র, শেক্সপিয়রের ‘ম্যাকবেথ’-কে প্রায় একই রকম ভাবে দেখেছেন অনির্বান ভট্টাচার্য। মাথায় এসেছে ‘মন্দার’। নামিয়ে দিয়েছেন, স্থান-কাল-পাত্র-সংস্কৃতি-ভাষা ভেদে, শেক্সপিরিয়াণ ব্র্যাণ্ড ভাঙিয়ে, যাতে লোকে খায়। ব্র্যাণ্ডের কথা যখন এলই, কিছুদিন বাদেই আমরা দেখব অনীক দত্ত পরিচালিত সত্যজিত রায়ের বায়পিক ‘অপরাজিত রে’।
শেক্সপিয়র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-সত্যজিৎ রায় এই সমস্ত নাম
যেভাবে আজও বাজারে কাটে তাতে সেই মহান ব্যক্তিরা আর নেহাত সাহিত্যিক বা
চিত্রপরিচালকের স্তরে নেই। এরা উন্নীত হয়েছেন ব্র্যাণ্ডে। এনাদের নেমট্যাগ-ই
অর্ধেক ব্র্যাণ্ডিং এর কাজ করে। সঙ্গে হাতে থাকে পরিচালক, ক্যামেরাম্যান, ও শুরু
থেকে শেষ, বড় থেকে ছোট সব অভিনেতাদের অভিনয়। আসলে হয়েছে কি, শেক্সপিয়র থেকে
সত্যজিৎ যা করে গেছেন সেই ছায়ার বাইরে গিয়ে কোন কিছু সৃষ্টি করা বেশ অসম্ভব কাজ
হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখনো পর্যন্ত তাঁদের ছায়াকে ফেলে দিয়ে নতুন কিছু তৈরি করা
সম্ভব হচ্ছে না। বলাই বাহুল্য, এরকম চিরকালীন সত্যের মুখে দাঁড় করিয়ে দেওয়া্র
শুরুই হয়েছিল শেক্সপিয়রের হাত ধরে। যে কোনো গল্প, যে কোনো জীবন, শেক্সপিয়রের
প্রভাবমুক্ত হতে আরে না। প্রকট বা প্রচ্ছন্নভাবে মিল রয়েই যায়। আর সেটাই
অনির্বাণের 'মন্দার'-এর ব্যাঙের আধুলি।
'হইচই' ওটিটি প্ল্যাটফর্মে ‘মন্দার’-এর জন্য অপেক্ষায় ছিলাম। অনির্বাণ ভট্টাচার্য করেছেন এই দুঃসাহসিক কাজ। কেন এই অপেক্ষা? আমরা সবাই তো জানি ট্রাজিক হিরো কে, তার পতন কি ভাবে হবে, তার ট্র্যাজিক ফ্ল-টা ঠিক কি ছিল -- সব জানা সত্ত্বেও আমরা অপেক্ষায় থাকি সেই দুঃখ কষ্ট বেদনা যন্ত্রণা হতাশা যা কিছু আমাদের জীবনের চিরসঙ্গী সে গুলোকে বারবার দেখতে যাওয়ার, চেটেপুটে খাওয়ার। এই নিয়ে কোনো সন্দেহই নেই অনির্বাণের মত একজন দুর্দান্ত অভিনেতা কে প্রথম আমরা সিরিজ-পরিচালক হিসেবে পাচ্ছি এবং দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিঞ্জ করতে করতে একটাই উপলব্ধি হলো -- অনির্বাণ ভট্টাচার্য উঠে এসেছেন স্টেজ থেকে। শেষ দু'বার বার ওনার দাপট স্টেজে দেখেছি উৎপল দত্তের ‘তিতুমীর' আর পঞ্চম বৈদিকের 'কারুবাসনা'য়।সেই সব অভিজ্ঞতা অনবদ্যভাবে স্ক্রিনে মিশিয়েছেন নাটক থেকে তুলে এনে। স্টেজের ভিজুয়ালসকে চলচ্চিত্রে ভর করে দেখিয়ে দিয়েছেন কি করে তা বৃহত্তর বিশালত্বে ধরা যায়। দেখলেই বুঝতে পারা যায় যে এটা অনির্বাণের স্বপ্নের কাজ, যেখানে অভিনয় এবং ক্যামেরা-অ্যাঙ্গেল সবথেকে বেশি জরুরী হয়ে ওঠে। একটা চেনা গল্পকে ভিন্ন মোড়কে সাধারণ মানুষের কাছে রুদ্ধশ্বাস করে তোলা কিন্তু সহজ কাজ নয়। যেমন 'ফেলুদা', যেমন, 'ব্যোমকেশ'। মানুষের মধ্যে গেঁথে যাওয়া চরিত্র ও গল্প নিয়ে কাজ করা খুব বিপজ্জনক। মুষ্টিমেয় কিছু দুর্দান্ত মানুষ ছাড়া সে ঝুঁকি কেউ নিতে চান না। অনির্বাণ যে কাজ টা করলেন, যা নিয়ে করলেন, তা তাঁকে এক লাফে অনেকটা মাইল পার করে এগিয়ে দিল। তবে সিনেমা হোক বা থিয়েটার, সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ গল্পের বাঁধন আর অভিনয়। শেক্সপিয়রকে বুদ্ধি দিয়ে আত্মসাৎ করে অনুসরণ ও অনুকরণ করলে গল্পের বাঁধন নিয়ে চিন্তার কিছু থাকে না। তখন পড়ে থাকে অভিনয়শৈলী ও কিভাবে তা তুলে ধরা হচ্ছে দর্শকদের কাছে, সে টুকুই। ঘটনাপ্রবাহ এইরকম নয় যে শেক্সপিয়ারের 'ম্যাকবেথ' এর সঙ্গে ‘মন্দার’-এর হুবহু বা খুব মিল আছে। আসলে অনির্বাণ দেখাতে চেয়েছেন যে স্থান-কাল-পাত্র নির্বিশেষে আমাদের জীবনের গল্পগুলো আমাদের মত করে চলতে থাকে বটে। তবে তার মাস্টার স্ট্রোক সেই কোন কালে এমন ভাবে শেক্সপিয়র হিট করে গিয়েছেন যে জীবনের গতি তাঁর পূর্বনির্ধারিত পথেই কোথাও না কোথাও কোনো না কোনো ভাবে পরিচালিত হয়। আমাদের জীবনের আশেপাশে বাস্তবে যতগুলো চরিত্র ঘুরে বেড়াচ্ছে, সবার সাথেই কোনো-না-কোনোভাবে শেক্সপিয়ারের তৈরি করার কোনো না কোনো চরিত্রের কিছু না কিছু মিল পাওয়া যায়। সেখানে দেশ-কাল-ভাষা-সংস্কৃতির পার্থক্য সব ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যায়। পড়ে থাকে শুধু নির্মম ও বাস্তব সত্য গুলো।
‘মন্দার'-এর আসল বিষয়বস্তু কি? শেক্সপিয়ারের চারটে সবথেকে বিখ্যাত ট্র্যাজিক হিরো-র মধ্যে ম্যাকবেথের ট্রাজিক ফ্ল ছিল অ্যামবিশন বা উচ্চাকাঙ্ক্ষা -- যে উচ্চাকাঙ্ক্ষা তার পতনের কারণ। সে প্রথমে কখনই উচ্চাকাঙ্ক্ষী ছিলই না। তার মনের মধ্যে ছিলই না এসব। দিব্বি চলছিল সব।
হটাৎ ঝড়ের মত পারিপার্শ্বিক পরিবেশ এবং নারী চরিত্রের উস্কানি সেই সুপ্ত উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে জাগিয়ে তুলল এবং তা ধরে রাখতে গিয়েই জন্ম নিল ভয়। সেই ভয়ই তার জীবনের কাল হয়ে দাঁড়ায়। আমরা 'ভয়' নয়, 'উচ্চাকাঙ্ক্ষা-কে দায়ী করি কারণ এই ভয়ের মূলে আছে উচ্চাকাঙ্ক্ষা। শেক্সপিয়রদেখিয়ে গিয়েছেন তাঁর নাটকের ডাইনিরা যা বলছে তার ওপর নির্ভর করে ম্যাকবেথ দেখতে পাচ্ছে তার ভবিষ্যৎ এবং সেই ভবিষ্যতের উচ্চাকাঙ্ক্ষার সাথে নিজের বাস্তব জীবনকে মিলিয়ে দেওয়ার অন্ধ তাগিদ তাকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে। ডাইনিরা তার মনের মধ্যে পুঁতে দিচ্ছে হারানোর ভয়ের বীজ। কিন্তু সে তো আর হারতে চায় না। যাদের কাছে হেরে যাওয়ার ভয়, নিজের পাপের প্রকাশ পেয়ে যাওয়ার ভয়, একের পর এক নির্দ্বিধায় সরিয়ে দিচ্ছে তাদের। একটি পাপ ঢাকতে তৈরী হচ্ছে একের পর এক পাপের বোঝা।
অনির্বাণের
বক্তব্য, ম্যাকবেথ না হয় রয়্যাল, রাজকীয়। কিন্তু এরকম চরিত্র পৃথিবীতে অনেক আছে,
যেমন মন্দার। সাধারণের সঙ্গে রয়্যাল -- কোথাও গিয়ে মিলে যাচ্ছে, একই রকম ভাবে।
প্যারালাল নয়,কনভার্জিং। দুটো গল্পেই
কিন্তু দেখানো হচ্ছে ভবিষ্যৎবাণী বাস্তবে মোটেই সত্যি হয় না। তাহলে ভবিষ্যৎ-বাণী
অনুসারে ম্যাকবেথ মারা যাওয়ার পরে যার রাজা হওয়ার কথা ছিল, সে রাজা হতো। কিন্তু
হল না। মন্দার-এও হল না।
শেক্সপিয়ারের
ম্যাকবেথ-এ যা ছিল না তা হল সেই লিবিডো । মন্দারের গল্পের খাপে খাপে সেক্স আপীল,
যৌন ঈর্ষা, চাহিদা, মর্ষকাম, ধর্ষকাম - এসবের ছড়াছড়ি মনে হলেও সেই সমস্ত প্রাইমর্ডিয়াল
ভাইসকে খুব সূক্ষ্মভাবে ছোঁয়ার চেষ্টা করেছেন পরিচালক। লেডি ম্যাকবেথ
শেক্সপিয়ারের নাটকের গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন বটে কিন্তু মন্দার-এ যেভাবে লাইলি-কে
গুরুত্ব দেয়া হয়েছে ততটা নয়। গল্পের নাম ‘মন্দার’ হলেও কোথাও কোথাও মনে হয়েছে
যে গল্পে যেন মন্দারের থেকে লাইলির ভাগটাই বেশি। তার হাতেই সবকিছুর চাবিকাঠি।
মন্দার সেখানে একটি ক্যাটালিস্ট মাত্র, যাকে দিয়ে শুধু করিয়ে নেওয়া হয়। গল্পের
শুরু ও শেষ ম্যাকবেথের ধাঁচে হলেও মাঝে যা ঘটে যায় সেখানে লাইলি নজরকাড়া -- সে
তার শরীরের ভরন্ত উথলে-পড়া যৌবনই হোক বা তার মনের মধ্যে সুপ্ত যৌন ইচ্ছেই হোক বা ্সন্তান
পাওয়ার আকাঙ্ক্ষাই হোক অথবা পাপবোধ থেকে মানসিক রোগী তে পরিণত হওয়াই হোক।
মন্দারের গল্পের আসল সুতো টেনে ধরা আছে এই নারী চরিত্রে। মন্দারের কনফ্লিক্ট আপাত।
তার স্ত্রী-এর কনফ্লিক্ট অনেক বেশি জটিল ও গভীর এবং সে জন্য অনেক বেশি উপভোগ্য। এক
নারীই আর এক নারীর পরম শত্রু - এটা ম্যাকবেথে ছিল না। ডব্লিউ ভাইয়ের স্ত্রী এর
সঙ্গে লাইলির কনফ্লিক্ট ও রাইভ্যালরি -- মন্দারে তা সুচারু রূপে ধরেছেন অনির্বাণ
এবং সেই অভূতপূর্ব দিক টিকে আসল গল্পের টেক্সচারে এমন ভাবে মিশিয়েছেন যে আলাদা করে
ধরাই যায় না যে মন্দারের থেকে লাইলি কিন্তু ধীরে ধীরে অজগরের মত গিলে নিচ্ছে নায়ক
মন্দারের ফুটেজ।
আগেই
বলেছি অনির্বাণের উত্থান স্টেজ থেকে এবং তাঁর মাথায় যে ক্রিয়েটিভ জিনিয়াস আছে, তা
স্টেজমুক্ত হতে পারেনি স্ক্রীনে এসে। মন্দারের যত্রতত্র ছড়িয়ে রেখেছেন সিম্বলিজম।
সে প্রথম দ্শ্যে ছটফটানো মাছকে বল্লমে গেঁথে পুরো গল্পটা তিন মিনিটে বলে দেওয়াই
হোক বা মন্দারের লাল রোদচশমা কিনে পরে ফেলে দেখিয়ে দেওয়াই হোক যে তার ইনার সেলফ
রক্তরঞ্জিত, রক্তাক্ত। আর, কালো বেড়ালের আদ্যোপান্ত ওমিনাস আপিল ভোলার নয়। আর অবশ্যই এই ওমিনাস আপিল জোরালো হয়েছে
ব্যাকগ্রাউণ্ড স্কোরের হাত ধরে। নাহলে এই অস্বাভাবিক দিকটা ঠিক উচ্চতা পেত না।
অভিনয়ের
দিক থেকে ডব্লু-ভাই-এর ভূমিকায় দেবেশ রায় চৌধুরী এবং এবং লাইলি-র ভূমিকায় সোহিনী
সরকার রীতিমতো একাডেমি অ্যাওয়ার্ড পাওয়ার যোগ্যতা রাখেন। বাকি সবাই দুর্দান্ত
হলেও আমার চোখে এনারা সবাইকে ছাপিয়ে গিয়েছেন। দুর্ভাগ্য আমাদের ইন্টারন্যাশনাল
এক্সপোজার-টা নেই এবং এটি সিনেমা নয়, সিরিজ। তবে, পুরো সিরিজ-টা একনাগাড়ে দেখতে
দেখতে মাঝেমধ্যে মনে হয়েছে ড্রোন-শট এর আধিক্য না থাকলেই হয়তো ভাল হত। আসলে
বাকিটা ‘ম্যাকবেথ’-- এর মত এতটাই রুদ্ধশ্বাস, যে সে সব ভুলে শেষ পর্যন্ত শুধু
দেখে যেতে হয়, একটানা। মাঝখানে ছাড়লে মন দিয়ে কাজ-কম্মো করা মুশকিলের, কারণ মন
পড়ে থাকবে সেখানেই, দেখে শেষ না করা পর্যন্ত। জানা গল্প, তবু এই টান। এটা কিন্তু
এক্কেবারে শেক্সপিরিয়ান ম্যাজিক আর অনির্বাণের তা নিজের মত ফলো করার কৌশলের সার্থক
ফল।
বাংলা থিয়েটারে ম্যাকবেথের শেষ অভিনয় দেখেছি কৌশিক সেনের স্বপ্নসন্ধানীর। বাংলা সিনেমার জগতে এই ম্যাগনামিটি নিয়ে ম্যাকবেথের ছায়ায় কিছু আদৌ আছে কিনা আমার জানা নেই। ‘হইচই’ আর অনির্বাণ ভট্টাচার্যের কাছ থেকে দর্শকদের আশা অনেকটাই বেড়ে গেল বৈ কি।
বিতর্ক
উস্কে দিয়ে লেখা শেষ করি, তাহলে লেখা হিট করবে বেশি -- তাহলে রক্ষণশীল বাঙালীদের
মধ্যে এমন অনেকেই আছেন যাঁরা ‘মন্দার’ ওয়েব সিরিজ দেখতে দেখতে চোখ-কান খোলা রাখবেন বটে,
কিন্তু ভান করবেন যে, গেল রে, সব গেল!! কালচার বলে কিছু রইল না...এটা কি!!! সকলের
সঙ্গে বসে দেখা যায়!!! ‘ম্যাকবেথ’ নিয়ে ছেলেখেলা!! সফট-পর্ণ বানিয়ে ছেড়ে দিল, ছি ছিঃ!!! চোখে
কানে ছেটানোর জন্য গঙ্গাজল খুঁজতেই পারেন। আর একান্ত না পেলে ক্ষতি নেই,
অন্তরশুদ্ধির মন্ত্র তো আছেই -- ওই যেটা সব পুষ্পাঞ্জলীর আগে আওড়াতে হয় -- মনে
করানোর জন্য প্রথম ক’টি শব্দ বলে দিই, বাকিটা ফ্লো তে নেমে যাবে – “ওঁ অপবিত্র পবিত্রবা” (মেয়েরা 'ওঁ' এর বদলে 'নমঃ' বলবেন) মুখে এসব যা-ই বলেন না কেন
মনের মধ্যে উচ্চাকাঙ্ক্ষা 'মন্দার'-এর বাকিটা লুকিয়ে দেখা। আর সেটা দেখতে
হলে মোবাইলে নিয়ে নিন ‘হইচই’ ওটিটি...অফার চলছে, সবার জন্য...গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি,
আপনার জীবনে এই অভিজ্ঞতা পাথেয় হতে পারে, কিন্তু ট্রাজিক ফ্ল হবে না।
--আর্য
চ্যাটার্জী












