Friday, 1 July 2011

অঞ্জনের রঞ্জনা...

পেলিং থেকে ফেরার পথে হঠাৎ ই অঞ্জন দত্ত-র সঙ্গে দেখা। সদলবলে ফিরছেন কোথাও থেকে। পকেটে লেখা সেই বিখ্যাত গানের লাইনঃ "রঞ্জনা আমি আর আসব না।" আমার বাড়ির অন্যান্যরা ওঁকে দেখে বেশ উৎসাহী হয়ে পড়লেও, আমার কিন্তু কোন বিকার নেই। স্টার এ রা আমার কাছে প্রফেসানালস্। আমি শিক্ষকতা করে উপার্জন করি, ওঁরা স্টারডমশিপ্ বেচে। যার যে রকম উপার্জ্জনের পদ্ধতি। এতে অত হাদেক্লাপনার কি আছে কে জানে! তবে তাঁরা যে গুণের জন্য 'স্টার', সেটাকে শ্রদ্ধা না করে পারি না।সেজন্যেই তো কৌশিক গাঙ্গুলি, অঞ্জন দত্ত এঁরা আমার মনে অনেক আশা জাগান। খুব আহত হয়েছিলাম, ব্যোমকেশ রিলিজ হওয়ার পর। যাই হোক। সেই অঞ্জন দত্ত যখন আমার পিছনে এসে বোর্ডিং পাস নিতে দাঁড়ালেন, জিজ্ঞেস না করে পারলাম না, "কি ব্যাপার, এদিকে?" বললেন, "একটা সিডি রিলিজ ছিল, দার্জিলিং-এ"। বুকে সাঁটানো ব্যাজ টা দেখিয়ে বললাম, "এটাই কি তার নাম?" এক গাল হেসে বললেন, "না না, এটা আমার একটা ছবি, শুটিং শেষ। জুন-জুলাই নাগাদ রিলিজ হবে।"

"Madly বাঙ্গালী" নিয়েও আমি খুব আশাবাদী ছিলাম। কিন্তু কোথায় যেন তাল কেটে গিয়েছিল ছবিটার। সকলের অসাধারণ অভিনয় ও ধরে রাখতে পারেনি ছবির প্রবাহকে।

পিকাসো-র গীটার
আজ কিন্তু পুরো পয়সা উসুল। পাবলো পিকাসো বারে বারে ঘুরে ফিরে এসেছে মাথায়, অঞ্জনের রঞ্জনা দেখতে গিয়ে। সেই power, passion, eccentricity, womanizing, addiction, nose for the right talent and art, infinite creativity, honesty only to the art form- just সব, সবকিছু নিয়ে এক অসাধারন চরিত্রে ফাটিয়ে অভিনয় করেছেন অঞ্জন।অবলীলায় মিশিয়েছেন বাঙ্গালীকে সঙ্গীতের মহাজাগতিকতার সঙ্গে। স্বীকার করেছেন কবীর সুমনের কাছে হারঃ "তোমার মত গান লিখতে পারলাম কই!" সুমন ও নিজের জীবনের মোক্ষ কোথায় তা পরিস্কার বুঝিয়ে দিয়েছেন।

বাংলা গানের দিন বদলের দিনে যে দুজন কে ধরে বাঁক নিয়েছিল শ্রোতাদের কান, তাঁরা যে সত্যি সবার ঊর্ধে শিল্পী, তাঁদের আর কোনো জাত নেই,  তার প্রমাণ সেলুলয়েডেও বলিষ্ঠ ভাবে রেখে গেলেন।

অঞ্জন কে সেদিন ধন্যবাদ জানানো হয় নি। আজ জানালাম।



No comments: