শিবাজী ভার্সাস শম্ভাজী: দ্বিতীয় পর্ব Shivaji Vs Sambhaji: Part II

Here is an interesting timeline for your kind perusal:

1657: Birth of Shambhaji (Purandar Fort)

1757: Battle of Plassey

1857: Sepoy Mutiny

1947: Independence of India

Does this not appear that even History is premeditated?

What coincidences! Delineation of History can never be planned. But what is quite remarkable here is that what important events have occurred exactly at an interval of hundred years, till the independence of India from the British rule in 1947!

If you observe closely, you can easily understand that the statement that the British ruled India for 200 years is also wrong. We are informing this to the younger generations, without telling them the facts. Mind it, that the difference in time from the Battle of Plassey to India's independence is 190 years. And again, in the Battle of Plassey in 1757, not the whole of India, but only Bengal came under the control of the East India Company. A foreign private company, who do business in this country, occupied a small province of a country, Bengal. How does that really mean that the British Empire occupied the whole of India through this?

And then comes the great Nawab of Bengal, Siraj Ud Daulla. Everyone knows that he lost the battle of Plassey because everyone betrayed him. What a shock for all of us! What sympathy and sorrow for Siraj! But what kind of person was Nawab Siraj? Why did all the great generals and friends betray him like that?

It never comes to the surface that the tyranny and misrule of Nawab Siraj were unmatched!

I can say one thing, Siraj Ud Daulla, the Nawab of Bengal, was not Julius Caesar of Rome. Siraj did not do a single good deed as did Caesar. Yet he is unnecessarily glorified and sympathised because he was the last Nawab of Bengal. Of all the notorious tyrannical kings in history, Siraj is a forerunner. The only way to destroy his power and prestige was to take the help of the British, just like Netaji Subhash Chandra Bose went to tie up with Hitler to remove the British from India.

However, we are talking about the conflict between Shambhaji and Shivaji. Why was Shambhaji so very against his father, Shivaji? What I am telling you is not just a breathless story, but a real story from history.

Shivaji's escape from the Agra Fort in 1666 with Shambhaji, putting dust in the eyes of the Mughal Emperor Aurangzeb, is an unparalleled event in the history of India. Aurangzeb quickly spread the word throughout India that no one should give shelter to any fugitive father and son in his kingdom. Anyone doing so will not be spared. 

After some time, two brothers of that family risked their lives and returned Shambhaji to his father. Shivaji's family remained eternally indebted to this Brahmin family.

As mentioned earlier, Shivaji died in 1680.

Sairabai always wanted her son Rajaram to be the heir to the throne, so she brought many Maratha nobles to her side.

Still, Shambhaji could not be stopped. Sairabai defeated all her resistance and seized the Maratha throne.

But Sairabai was not one to sit quietly. This time, she wanted to kill Sambhaji. But the conspiracy was discovered. As a result, Sairabai was also sentenced to death along with the other conspirators in the trial. This incident happened in the year following Shivaji's death, in 1681.

Shambhaji became the Chhatrapati.

Hearing this, Aurangzeb woke up. Because, Shambhaji was a hero who killed a tiger with his bare hands. That story is famous all over India. That person returned from him to his father. He clearly understood that Alamgir was using him not out of affection but politically. So, he looked him in the eye and said that no matter what happened to his father-son realtionship, he would leave the seat of the Mughal Empire, shaken. When Alamgir thought that after Shivaji's death he would conquering the Deccan would be just a cake walk, then Shambhaji emerged as out of the blues and took after his father,  Shivaji. After Shivaji's death, it was quite beyong the wildest nightmare of Alamgir that Shambhaji would return in a different form, altogther. The Mughal emperor, like him, spent the last 25 years of his life just to consolidate his possessions in the Deccan. But he could do nothing.

Shambhaji started enmity with Auragzeb by plundering Burhanpur. Burhanpur was one of the most prosperous cities of the Mughal period. The money collected from the Jizya tax in the entire South used to be collected there. Shambhaji attacked Burhanpur, looted it and demolished the city to dust. .

Famous Maratha commanders

Hambirrao Mohite

Shantaji Ghorpade

Dhanaji Yadav

Ramchandra Amatya

continued to inflict great damage on the Mughals at various places. As a result, the combined force of Shambhaji and his commanders completely disoriented the formidable Mughal soldiers. Having no previous experience of fighting the Mughal army in the various rugged regions of Maharashtra, which is full of water, jungle and mountains, the Marathas were able to easily defeat the Mughal soldiers who were many hundred times more in numbers than the maratha force, through guerrilla warfare.

Such a miserable situation for the moughal Badshah Aurangzeb existed for about eight years after Shivaji's death.

Although Aurangzeb himself was there in the Deccan in person, most of the Mughal soldiers wanted to return home in the North. 

At such a time when the Mughals were finding it absolutely impossible to suppress the Marathas, Shambhaji was captured by Arangdab in an unprecedented situation.

The time was1689 AD.

(To be continued)

************

একটা ইন্টারেস্টিং টাইমলাইন দিচ্ছি

মনে রাখার সুবিধার্থে:

১৬৫৭: শম্ভাজীর জন্ম (পুরন্দর দুর্গ)

১৭৫৭: পলাশীর যুদ্ধ

১৮৫৭: সিপাহী বিদ্রৌহ

১৯৪৭: ভারতের স্বাধীনতা

কী সব কাকতালীয় ব্যাপার! ইতিহাস তো আর প্ল্যান করে হয় নি। কিন্তু ঠিক একশো বছর পর পর কি সব গুরুত্ৱপূর্ণ কাণ্ড ঘটে গি‍য়েছে। লক্ষ্য করলে অনায়াসে বোঝা যায়, যে ইংরেজরা ভারতে যে ২০০ বছর ধরে শাসন করেছিল, তাও ভুল। আমরা ছোটদের বলার জন্য বলি বটে, কিন্তু পলাশীর যুদ্ধ থেকে আর ভারতের স্ৱাধীনতার সময়ের পার্থক্য হল ১৯০ বছর। তাও আবার ১৭৫৭-র পলাশীর যুদ্ধে সারা ভারত নয়, সে যুদ্ধে শুধুমাত্র বাংলা ইস্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানির কব্জা‍য় আসে। একটা বিদেশী প্রাইভেট কোম্পানি, যারা এ দেশে ব্যবসা করে, তারা একটা দেশের সামান্য ভূখণ্ড, বাংলা দখল করল। তাতে কি সত্যি-ই বৃটিশ রাজত্ৱের সারা ভারতবর্ষ দখল করা হয়ে যা‍য়?

একটা বলার জন্য বলে দিলেই হল, বলে আমার মনে হ‍য়।

আর রইল পড়ে বাংলার নবাব সিরাজদ্দৌল্লা। তিনি পলাশীর যুদ্ধে হেরে গেলেন, কারণ তাঁর সাথে সবাই বিশ্ৱাসঘাতকতা করল। তা নিয়ে আমাদের সবার কি হা-হুতাশ! সবার সিরাজের প্রতি কি সমবেদনা, কি দু:খ! কিন্তু নবাব সিরাজ কেমন লোক ছিলেন, কেন সব কʼজন তাবড় সেনাপতি তাঁর সাথে এমন বিশ্ৱাসঘাতকতা করল?

অত্যাচার ও অপশাসনের কোন স্তরে সিরাজ পৌঁছেছিলেন, তার খবর কে রাখে!

একটা কথা বলতে পারি, বাংলার নবাব সিরাজ কিন্তু রোমের সীজার ছিলেন না। কোনো একটা ভাল কাজ তিনি করে যান নি। তবু তিনি unnecessarily glorified and sympathised because he was the last Nawbab of Bengal. ইতিহাসে যত কুখ্যাত অত্যাচারী রাজা ছিলেন, সিরাজ ছিলেন তাঁদের মধ্যে অগ্রগন্য। তাঁর ক্ষমতা ও প্রতিপত্তি-কে নস্যাৎ করার জন্য একমাত্র উপায় ছিল, ইংরেজদের সাহায্য নেও‍য়া, ঠিক যেমন নেতাজী সুভাষচন্দ্র ভারত থেকে ইংরেজ -দের সরানোর জন্য হিট‍লারের সাথে গাঁটছড়া বাঁধতে গিয়েছিলেন।

যাক গি‍য়ে, আমাদের গপ্প তো শম্ভাজী ভার্সাস শিবাজী - এই নিয়ে। শম্ভাজী কেন নিজের বাবা শিবাজীর প্রতি এত বীতশ্রদ্ধ ছিলেন? যা বলছি তা রূদ্ধশ্ৱাস কাহিনী নয়, বাস্তব, ইতিহাস।

শিবাজী শম্ভাজীকে নি‍য়ে ১৬৬৬ সালে আগ্রা দুর্গ থেকে মোগল বাদশা আওরঙজেবের চোখে ধুলো দিয়ে যে পালালেন, তা ভারতের ইতিহাসে এক অনবদ্য ঘটনা। আওরঙজেব তড়িঘড়ি সারা ভারতে প্র্চার করে দিলেন, তাঁর রাজত্ৱে কোনো পলাতক পিতা-পুত্রকে কেউ যেন আশ্রয় না দেয়। দিলে ফল কিন্তু মারাত্মক। নানান ছদ্ম্বেশে শিবাজী নʼ বছরের শম্ভাজী-কে নিয়ে পৌঁছালেন বেনারসে। সেখানে এক মারাঠী ব্রাহ্মনের পরিবারের  কাছে শম্ভাজীকে রেখে ফিরে এলেন নিজের রাজত্বে। 

এর বেশ কিছুদিন পরে ঐ পরিবারের দুই ভাই খুব পথ ধরে প্রানের ঝুঁকি নিয়ে শম্ভাজী কে তাঁর পিতার কাছে ফিরৎ দিয়ে গেলেন। এই ব্রাক্ষন পরিবারের কাছে শিবাজীর পরিবার চিরঋণী হয়ে রইলেন। 

আগেই বলা হয়েছে ১৬৮০ সালে শিবাজীর মৃত্যু হয়।

সয়রাবাই আগাগোড়াই চাইতেন যে তাঁর পুত্র রাজারাম সিংহাসনের উত্তরাধীকারি হোক সেকারণে তিনি বহু মারাঠা অভিজাতদের সপক্ষে নিয়ে এলেন | 

তবুও শম্ভাজীকে আটকানো গেল না। সয়রাবাঈ এর যাবতীয়   প্রতিরোধ ব্যর্থ করে দিয়ে তিনি মারাঠা সিংহাসন দখল করলেন।

কিন্তু সয়রাবাঈও চুপ করে বসে থাকার পাত্রী নন। তিনি এবারে  স শম্ভাজীকে হত্যা করতে চাইলেন। কিন্তু সেই ষড়যন্ত্র ধরা পড়ে গেল। এর ফলে বিচারে অন্যান্য ষড়যন্ত্রীদের সাথে সয়রাবাইও মৃত্যুদণ্ডে দন্ডিত হলেন।এ ঘটনা ঘটল শিবাজীর মৃত্যুর ঠিক পরের বছরে, ১৬৮১ সালে।

শম্ভাজী ছত্রপতি হলেন।

এ শুনেই ঘুম উড়ে গেল আওরঙ্গজেবের। কারণ, শম্ভাজী কিন্তু খালি হাতে বাঘ মারা বীর। সে উপাখ্যান সারা ভারতে বিখ্যাত। সে হেন ব্যক্তি তাঁর কাছ থেকে নিজের পিতার কাছে ফিরে গিয়েছেন। পরিষ্কার বুঝেছেন যে আলমগীর তাঁকে স্নেহ নয়, রাজনৈতিক ভাবে ব্যবহার করছেন। তাই তাঁর চোখে চোখ রেখে বলে গিয়েছেন, তাঁর বাবার সঙ্গে যাই হোক না কেন, মোগল সাম্রাজ্যের আসন তিনি টলিয়ে ছাড়বেন। আলমগীর যখন ভাবছেন শিবাজীর মৃত্যুর পর তিনি নিষ্কণ্টক ভাবে দাক্ষিনাত্য দখল করবেন, তখন শম্ভাজী উদয় হলেন ঠিক যেন শিবাজীর প্রতিভূ

শিবাজী মারা যাবার পর, শম্ভাজী যে ভিন্ন রূপে প্রত্যাবর্তন করবেন এ আলমগীর ভাবতেও পারেন নি। তাঁর মত দুঁদে মোগল সম্রাট নিজের জীবনের শেষ ২৫ বছর শুধু কাটিয়ে দিলেন দাক্ষিণাত্যে দখল জমাতে। কিন্তু কিছুতেই পারছেন না। 

শম্ভাজী আওর গপুরর সাথে শত্রুতা শুরু করলেন। বুরহানপুর লুট করার মাধ্যমে সেই সময় বুরহানপুর মোগল আমলের সমৃদ্ধশালী শহরগুলির মধ্যে অগ্রগণ্য ছিল | এখানেই সারা দাক্ষিনাত্যে জিজিয়া কর থেকে সংগৃহিত অর্থ একত্ৰিত হত | শম্ভাজী বুরহানপুর আক্রমন করে শহরটিকে ধ্বংস করে দেন |

হাম্বিররাও মোহিতে

শান্তাজি ঘোরপাড়ে

ধনাজি যাদব

রামচন্দ্র অমাত্য 

প্রমুখ বিখ্যাত মারাঠা সেনাপতিরা মোগলদের বিভিন্ন স্থানে দারুণভাবে বিধ্বস্ত করতে থাকলেন। ফলে সামগ্রিকভাবে শম্ভহী ও তাঁর সেনাপতিদের মিলিত তাণ্ডবে দুদ্ধর্ষ মোগল সৈন্যরা একেবারে দিশেহারা হয়ে পড়ছিল | জল-জঙ্গলকীর্ন পর্বতসঙ্কুল মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন দুর্গম অঞ্চলে মোগল ফৌজে যুদ্ধ করার কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকায় মারাঠারা গেরিলা যুদ্ধের মাধ্যমে তার চেয়ে সংখ্যায় বহু শুন বেশি মোগল সৈন্যদের সহজেই পরাজিত করতে পারছিল | 

শিবাজীর মৃত্যুর পর প্রয় আটবছর এইরকম দুর্দশাময় অবস্থা ছিল | 

স্বয়ং আওরঙ্গজেব সেখানে ব্যক্তিগতভাবে ত থাকলেও বেশিরভাগ মোগল সৈন্যই দিল্লী ফিরে আসতে  চাইছিল | ঠিক এই সময়ে, যখন মোগলরা মারাঠাদের দমন করা একেবারেই অসম্ভব মনে করছিল,  এক অভূতপূর্ব পরিস্থিতিতে শম্ভাজী আরঙ্গদবের হাতে বন্দী হলেন। 

সময়কাল ১৬৮৯ খ্রীষ্টাব্দ| 

(চলবে)

আমি বেলফুল ফিরি করি পাড়া‍য় পাড়া‍য়

 

১৮৫৩ সাল। একদিকে গিরীশ চন্দ্র ঘোষ, আর একদিকে, অমৃত লাল বসু। অমৃত লাল বসু ছিলেন 'রসরাজ' | তাঁর স্যাটায়ারের জন্য এই উপাধি ওনার নামের সাথে জুড়ে গিয়েছিল। সঙ্গে ছিলেন দুর্দান্ত অভিনেতা | গিরীশ ঘোষ আর রসরাজ একজায়গায় হলেন। গঠন করলেন গ্রেট ন্যাশনাল থিয়েটার। মালিক হলেন অমৃত লাল বসু স্ৱয়ং।

শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব নিয়মিত সেখানে আসছেন গিরীশের "থ্যাটার" দেখতে | ওই স্টেজেই নামল , "নীল দর্পণ"। শুধু অভিন‍‍য় দিয়ে ব্রিটিশ সরকারকে আঘাত করলেন। অর্ধেন্দু শেখর মুস্তাফি হলেন Mr. Rogue, the villain, আর অমৃত লাল বসু সাজলেন 'সৈরিন্ধ্রী', নারী চরিত্রে | নাটক সুপার ডুপার হিট! কিন্তু এই ত্রহ্যস্পর্শের ভার ইতিহাসের সইল না। বৃটিশ সরকারের ঘুম উড়ে গেল। গ্রেট ন্যাশনাল থি‍য়েটারের মালিক হিসেবে বৃটিশ সরকার অমৃত লাল বসু-কে বন্দী করলেন।

১৮৮৮ সালে যখন গ্রেট ন্যাশনাল থিয়েটার ভেঙে যা‍য়, তখন অমৃত লাল স্টার থিয়েটারে যোগদান করেন। তার পরের পঁচিশ বছর, তাঁর কাজ স্টার থিয়েটারের ইতিহাসে চিরকালের সর্বশ্রেষ্ঠ অভিনয় ও পরিচালনা হিসেবে অমর হয়ে থাকবে। তখন যখন "নীল দর্পণ" অভিনীত হত, তিনি আর 'সৈরিন্ধ্রী' চরিত্রে নয়, 'Mr. Wood'-এর চরিত্রে অভিনয় করতেন।

উল্লেখ্য যে, উনি বন্দী হওয়ার পর গিরীশ ঘোষের সাথে ঘটনাচক্রে আর এক থাকা যায় নি। গিরীশ ঘোষ তাঁর মত কাজ করে চললেন। অমৃত লালও তাই। নাট্য সমালোচক হিসেবে গিরীশ ঘোষের কাজের ভূয়সী প্রশংসা করে চললেন অমৃত লাল।

নাটক, গান, অভিন‍য় ও সমালোচনার কাজ করার জন্য আসলে উনি অনেক কিছু ছেড়ে এসেছেন, অবলীলা‍য়। নিজের ভাললাগাকে ধরে রাখার জন্য নিশ্চিত আরামের জীবন ছেড়ে যে ঝুঁকি উনি নি‍য়ে ছিলেন তার সাথে মিল পাওয়া যায় ফরাসী চিত্রকর পল গগ্যান (Paul Gauguin) এর সাথে। পল শুধু ছবি আঁকবেন বলে সব ত্যাগ করে অজানা তাহিতি দ্ৱীপে পাড়ি দিয়েছিলেন।

যোগাযোগ শুনলে অবাক হতে হয়,

অমৃতলাল ছিলেন ওরিয়েন্টাল সেমিনারী স্কুলের ছাত্র। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও ওই একই স্কুলে কিছুদিনের জন্য গিয়েছিলেন। প্রসঙ্গত, বলে রাখা ভাল, রবীন্দ্রনাথ যে এক্কেবারে কোনোদিনই স্কুলে যান নি, তা সত্যি কথা নয়। গিয়েছিলেন। কিন্তু ভাল লাগে নি বলে কিছুদিন পরেই ছেড়ে দেন।

(ওরিয়েন্টাল সেমিনারী এখনও আছে | ভগ্নদশা | ছাত্র সংখ্যার অভাবে প্রায় ভেন্টিলেশনে)।

হ্যাঁ, তা যা বলছিলাম। ওই অভিনয়ের নেশায় অমৃত লাল বসু ডাক্তারী পড়া সম্পূর্ণ না করে দু' বছর পরেই ছেড়ে দেন। তারপর বেশ কিছুদিন হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা করেন, সাফল্যের সঙ্গে।

কিন্তু মন মানে না। স্টেজের নেশা অন্য জিনিস ! উনি তাই হোমিওপ্যাথি চিকিৎসাও ছাড়লেন, স্টেজকে আরও বেশি সময় দেবেন বলে।

নাটক লেখার বাইরে গিয়ে উনি বেশ কিছু স্যাটায়ারধর্মী গান লিখে গিয়েছেন, যা অবশ্যই সমসাময়িক সময়ের দর্পণ। "কলকেতার বাবুগিরি"-কে এত কাছ থেকে দেখেছেন যে তা নিয়ে তিনি বেশ কিছু গান না লিখে থাকতে পারেন নি। সে সব মণি-মুক্তো-রা আজ বড় অবহেলিত। কেউ খুব এ সব নি‍য়ে কথা বলেন না।

"আমি বেল ফুল ফিরি করি পাড়া‍‍য় পাড়ায়", ওনার লেখা গান। এখানে স্যাটায়ার খুব সিম্বলিক। ফলে আপাত ভাবে একটু ভোঁতা বা স্ৱাদ-হীন লাগলেও, সুর ও তাল, দারুণ মনোগ্রাহী।

গ্রীষ্মের প্রচণ্ড দাবদাহে, বেলফুলের গন্ধ কিন্তু the sweetest perfumes of Arabia- কেও হার মানা‍য়।

-- তথ্য সংকলন ও অনুলিখন

আর্য চট্টোপাধ্যায়

link to the song "Belphool"

Amrita Lal Bose. Amrita Lal Bose was polpularly known as 'Rasaraj'. This title was attached to his name for his infamous edge of satire. He was a great actor, too. Girish Ghosh and Rasaraj came together. They formed the Great National Theatre. Amrita Lal Bose himself became the owner. They dared stage the play “Neel Darpan” there only.

Sri Ramakrishna Paramhansadeva regularly came there to see Girish's "theater".  "Neel Darpan" did hit the British government on its knees with just Amrita Lal’s  acting skill. Ardhendu Shekhar Mustafi played the role of Mr. Rogue, the villain, and Amrit Lal Bose dressed up as 'Sairindhri', the female character. The play was a super duper hit! But history did not bear the burden of this triad. The British government turned insomniac. The British Government imprisoned Amrita Lal Bose as legally he was the owner of the “Great National Theatre”.

When the Great National Theatre was dissolved in 1888, Amrita Lal joined the Star Theatre. His works there for the next twenty-five years, will forever be immortalized in the history of the Star Theatre as the greatest acting and directions on stage. Then, when "Neel Darpan" used to be performed, he no longer played the roleof 'Sairindhri', but of 'Mr. Wood'.

It is worth mentioning here that after his imprisonment, he could not remain with Girish Ghosh the same way. Girish Ghosh continued to work in his own way. So did Amrita Lal. As a theatre critic, Amrita Lal continued to highly praise Girish Ghosh's works.

In fact, he left a lot to pursue his dreams with drama, songs, acting and criticism. The risk he took in leaving a life of assured comfort to pursue his love is similar to that of the French painter Paul Gauguin. Paul left everything and sailed to theunknown island of Tahiti just to paint.

It is surprising to hear the connection,

Amrita Lal was a student of the Oriental Seminary School. Rabindranath Tagore also went to the same school for a few days. Incidentally, it is worth mentioning that it is not true that Rabindranath never went to school. He went there. But he did not like it and left it after a few days.

(The Oriental Seminary still exists in a dilapidated state, almost on ventilation, due to lack of students).

Yes,  what I was saying. Amrita Lal Basu, addicted to acting, left his medical studies after two years without completing them. Then he practiced homeopathy for sometime, with success.

But his mind would not listen. The addiction to the stage is something irresitable! That's why he gave up practising homeopathy also, saying that he would give more time to the stage.

Apart from writing plays, he has written several satirical songs, which are certainly a mirror of the contemporary age and culture. He has seen "Kolkata's Babugiri" from such close perspectives that he could not help but write several songs about it. All those gems are very neglected today. No one talks about them much.

"Ami Bel Phool Phiri Kari Paday Paday", is a song written by him. The satire here is very subtly symbolic. As a result, although it may seem a little dull or tasteless, onnthe surface, the melody and rhythm are very attractive.

In the intense heat of summer, the smell of 'bel phool' is even better than the 'sweetest perfumes of Arabia'.

-- Compilation and transcription of information

Arya Chatterjee

Click Here to Listen to the song "Belphool"

 

শিবাজী ভার্সাস শম্ভাজী: প্রথম পর্ব : The True Story from History

 

-     মারাঠা ছত্রপতি শিবাজিপুত্র শম্ভাজী হঠাৎ কোনো এক কারণে আমাদের সামনে উঠে এসেছেন। তাঁর সম্পর্কে যা কিছু শুনছি, দেখছি বা পড়ছি, তা কি সত্যি? মানে তিনি কি তাঁর পিতা ছত্রপতি শিবাজীকে ছাপিয়ে যাবার মত একজন মানুষ ছিলেন? আদৌ?  ইতিহাস কি বলে?

-  সবার আগে বলতে গেলে বলতে হয় যে ছত্রপতি শিবাজীর সৎ চরিত্রের ছিটেফোঁটাও শম্ভাজী কিন্তু পাননি। নি:সন্দেহে তিনি বীর ছিলেন। যুদ্ধে পটু ছিলেন। সঙ্গে ছিলেন দারুণ সাহসী ও হঠকারী। কিন্তু ছত্রপতি শিবাজীর চরিত্রের সঙ্গে শম্ভাজী একেবারেই বেমানান। সকলের জানা দরকার যে ছত্রপতি শিবাজী মারা যাওয়ার আগে শিবাজী নিজে ওনাকে পানহালা দুর্গে বন্দী করে রেখেছিলেন।  ভেবে দেখতে হবে যে, বাবা ছেলেকে পানহালা দুর্গে বন্দি করে রেখে দিয়েছেন, যখন শিবাজী মৃতপ্রায়। কোথায় শিবাজী শেষ সময়ে নিজের প্রিয়জনদের পাশে পাওয়ার চেষ্টা করবেন, তা না করে নিজের ছেলেকে কেল্লায় বন্দী!!  কি ছিল শম্ভাজীর অপরাধ?

-       কি এমন অপরাধ করেছিলেন শম্ভাজী?

-      অপরাধ কহতব্য নয় | পুরো মারাঠা জাতির মুখে চুনকালি লেপে দেওয়ার মত। শম্ভাজী এক ব্রাহ্মণ নারীর বলপূর্বক সতীত্ব হরণ করেছিলেন। তবে সেই সময়ে নারী ধর্ষণ মারাঠা সেনাদের কাছে জলভাত ছিল। সুতরাং শম্ভাজীর ক্ষেত্রে তার অন্যথা হয় নি। কিন্তু গোল তো অন্য জায়গায়। একদিকে শম্ভাজীর বাবা ছত্রপতি শিবাজী মারাঠাদের এই কুৎসিত অভ্যাসে লাগাম দি‍য়ে সমাজ সংস্কারের চেষ্টা করছেন, আর অন্যদিকে তাঁর নাকের ডগায় বসে তাঁর-ই জ্যেষ্ঠ পুত্র শম্ভাজী ওই হীন কাজ করে তাঁর-ই নাক কাটছেন। ছত্রপতি শিবাজীর রাজত্বে এ ব্যাপারে আইন ছিল খুব কড়া। এই ধরনের হীন কাজকর্মকে প্রশ্রয় দেওয়া তো দুরস্ত, এই ধরনের অপরাধের একমাত্র শাস্তি ছিল মৃত্যুদণ্ড। নেহাৎ নিজের ছেলে বলে শম্ভাজীকে শিবাজী এরকম হীন অপরাধ করা সত্ত্বেও প্রাণদণ্ডে দণ্ডিত করতে পারেন নি। তাই ওই পানহালা দুর্গে শম্ভাজীকে বন্দী করে রেখেছিলেন।

সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে, শিবাজী অন্ততঃ যে ছেলেকে মৃত্যুর আগে  বন্দি করে রেখেছিলেন, তাঁকে তিনি নিশ্চয়ই নিজের মৃত্যুর পরে সিংহাসন দিয়ে যাবেন না। শিবাজীর এরকম কোন অভিপ্রায় ছিল না যে তাঁর মারাঠা সাম্রাজ্যের উত্তরাধিকারী হবেন শম্ভাজী।

এটা বললেও কম বলা হয় না যে শম্ভাজীর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য আসলে তৎকালীন মারাঠাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলির প্রতিফলন মাত্র। ছত্রপতি শিবাজী বরং একেবারেই অন্য রকমের মানুষ ছিলেন। দৈত্যকুলে প্রহ্লাদের মত। যাই হোক, ছত্রপতি শিবাজী মারা গেলেন রক্ত আমাশয়ে, ৩রা এপ্রিল, ১৬৮০ সালে। অনেক চিকিৎসা সত্ত্বেও তিনি  সারলেন না | কথিত আছে যে কোনো একজন ফকিরের অভিশাপে তাঁর এই দশা হয়। মারাঠিরা ওই ফকিরের দরগাকে অপবিত্র করেছিলেন বলে তিনি রেগে গিয়ে ছত্রপতি শিবাজী কে অভিশাপ দিয়েছিলেন।  তার ফলেই শিবাজীর মৃত্যু হয় বলে লোকে বলে। মাত্র ৫৩ বছর বয়সে শিবাজী মারা যান। আর তাঁর অকালমৃত্যুতে কোনোমতেই শম্ভাজীর ছত্রপতি হওয়ার কথাই নয়, কারণ ছত্রপতি শিবাজী তা চান নি।

শিবাজী মারা যাওয়ার পর থেকে মারাঠারা আবার তাদের স্বরূপ ধারণ করে। তাদের এই গণধর্ষণ ও বলাৎকারের উদাহরণ পেতে গেলে বেশি দূর যেতে হবে না। বঙ্গদেশে লুঠতরাজ চালানো বর্গীরা আসলে কারা ছিল? ওই মারাঠারাই।বর্গীরা চৌথ  আদায়ের ছলে সমগ্র বাংলা সুবা একদম তছনছ করে দিয়েছিল। তখন ওই মারাঠাদের হাতে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে নারীরা ভীষণ রকম অত্যাচারিত হয়েছিল। ইতিহাসে রয়েছে যে এক একজন নারীকে চার-পাঁচজন মারাঠা সৈনিক মিলে অত্যাচার করত। অত্যাচার এমন পর্যায়ে হত যে শুনলে বুক কেঁপে উঠবে।  যেমন, ভোগ করার পর নারীদের স্তন কেটে ফেলে দেওয়া  বা নারীদের যৌনাঙ্গে বল্লম ঢুকিয়ে দেওয়া - এ সমস্ত কার্যকলাপ কিন্তু মারাঠা সেনারা বাংলার বুকে নির্বিবাদে করে গিয়েছে। খুন, লুঠতরাজ ও অগ্নিসংযোগ তো করেছেই, সঙ্গে আবালবৃদ্ধবনিতা কাউকে ছাড় দেয়নি। তবে তাদের হাতে সব থেকে বেশি অত্যাচারিত হয়েছে নারীরা। বর্গীর হাঙ্গামার দরুণ বাংলার গ্রামগুলি একেবারে ধ্ৱংসপ্রাপ্ত হয়েছিল। সারা বাংলা ও উত্তর ভারতে তারা এমন অত্যাচার চালিয়েছিল যে এর ফলে মারাঠারা সারা ভারতবর্ষ জুড়ে কুখ্যাত ও ঘৃণিত হয়ে ওঠে। ছত্রপতি শিবাজীর পরবর্তী সময়ে তাই দেখা গেল ১৭৬১ সালে তৃতী‍য় পানিপথের যুদ্ধে উত্তর ভারত থেকে মারাঠাদের পক্ষে দাঁড়াতে কোন রাজপুত বা জাঠেরা রাজি হল না। সে সময়ে উত্তর ভারতে মারাঠা বাহিনী একেবারে বন্ধুশূন্য হয়ে পড়েছিল। মারাঠা সেনাদের ওপর সাধারণ মানুষের ক্ষোভ ও ক্রোধ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে পানিপথের যুদ্ধক্ষেত্র থেকে হেরে গিয়ে পালিয়ে যাওয়া সৈনিকদের অধিকাংশ-ই পথিমধ্যে উন্মত্ত জনতার হাতে নিহত হ‍য়, বিভিন্ন স্থানে। পেশোয়ার বাহিনীর যে কʼজন সেনা জীবিত ছিল, তারা জাঠ রাজ সুরজ্মলের রাণি কিশোরীর অনুগ্রহে বেঁচে যায় এবং পরে তারা মহারাষ্ট্রে নিরাপদে ফেরৎ আসে।

এ প্রসঙ্গে বাংলা কাব্যের আকারে গুরুত্ৱপূর্ণ ঐতিহাসিক দলিল হল আলিবর্দী খাঁ-র সমসাময়িক কবি গঙ্গারাম রচিত ‘মহারাষ্ট্র পুরাণ’। তার কিছু গুরুত্ৱপূর্ণ অংশ  তুলে ধরা হল:

"ছোট বড় গ্রামে যত লোক ছিল

বর্গীর ভয়ে সব পলাইল

চারিদিকে লোক পলাই ঠাঁই ঠাঁই

ছত্রিশ বর্ণের লোক পলায়ে অন্ত নাই

এই মতে সব লোক পলাইয়া যাইতে

আচম্বিতে বর্গী ঘেরিলা আইসা সাথে

মাঠে ঘেরিয়া বর্গী দেয় তবে সাড়া

সোনারূপো লুঠে নেয় আর সব ছাড়া

কারুর হাত কাটে কারুর নাক কান

এক-ই চোটে কারো বধে পরাণ

ভাল ভাল স্ত্রী-লোক যত ধইরা লাইয়া যায়

অঙ্গুষ্ঠে দড়ি বাঁধি দেয় তার গলায়

এক্জনে ছাড়ে তারে আর জনা ধরে

রমণের ভরে ত্রাহি শব্দ করে

এই মত বর্গী কত পাপকর্ম কইরা

সেই সব স্ত্রী-লোকে যত দেয় সব ছাইড়া

তবে মাঠে লুটিয়া বর্গী গ্রামে সাঁধায়

বড় বড় ঘরে আইসা আগুণি লাগায়

বাংলা চৌয়াড়ি যত বিষ্ণু মণ্ডপ

ছোট বড় ঘর আদি পোড়াইল সব

এই মতে যত সব গ্রাম পোড়াইয়া

চতুর্দিকে বর্গী বেড়ায় লুটিয়া

কাউকে বাঁধি বর্গী দিয়া পিঠমোড়া

চিৎ কইরা মারে লাথি পায়ে জুতা চড়া

রুপি দেহ দেহ বলে বারে বারে

রুপি না পাইয়া তবে নাকে জল ভরে

কাহুকে ধইরা বর্গী পখৈরে ডুবায়

ফ়াকড় হইয়া তবে কারো প্রাণ যায়।"

-      বুঝলাম, কিন্তু শিবাজী- শম্ভাজীর মনোমালিন্যের কারণটা কি?

- শিবাজীর সঙ্গে শম্ভাজীর মনোমালিন্যের কারণ হিসেবে ইতিহাস যা বলে, তা হল, শিবাজী তাঁর নবগঠিত মারাঠা সাম্রাজ্যের ভার উত্তরাধিকার হিসেবে শম্ভাজীর হাতে তুলে দিতে চান নি। কিন্তু তার কারণ কি? কারণ, শিবাজী তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্রের চরিত্র সম্পর্কে সম্যকরূপে অবহিত ছিলেন। শিবাজী যে তাঁর অনুমানে কতটা সঠিক ছিলেন, তার প্রমাণ মিলল অচিরেই, পরবর্তি ঘটনাবলী থেকে। শম্ভাজী শিবাজীর সিংহাসনের উত্তরাধিকারী যে নন, তা জেনে পিতার প্রতি ক্রোধে উন্মত্ত হয়ে তিনি কি করলেন?

-       কি…..?

-       সোজা চলে গেলেন শিবাজীর চরম শত্রু মোগল সেনাপতি দিলির খাঁ-র শিবিরে।

-       সে কি!!!

-       হ্যাঁ সোজা একদম কোনরকম ভাবনা-চিন্তা না করে সোজা দিলির খাঁ-র  কাছে চলে গেলেন। এই সেই বিখ্যাত দিলির খাঁ, যিনি রাজা জয়সিংহের সাথে মিলে ১৬৬৫ সালে শিবাজীকে পুরন্দরের সন্ধি করতে বাধ্য করেছিলেন। শম্ভাজীর ছেলেবেলায় বাবার সাথে আগ্রা যাওয়ার সূত্রে  দুʼজনের পূর্বপরিচিতি তো ছিলই এতদিন পরে শম্ভাজীকে পেয়ে দিলির খাঁ সসম্মানে তাঁকে গ্রহণ করলেন এবং সম্রাট আওরংজেবের কাছে সমস্ত ঘটনার বিবরণ পাঠালেন। সম্রাট-ও সব জেনে অত্যন্ত খুশি হয়ে তক্ষুনি শম্ভাজীকে পাঁচ হাজারি মনসবদারী প্রদান করলেন। সম্রাট ভাবলেন, লোহা দিয়ে লোহা কাটার এই উপযুক্ত সময়। তার পরের ঘটনা আরো বিস্ময়কর।

-       এর পরেও আছে?

-  একদম, আছে। ২রা এপ্রিল, ১৬৭৯। দিলির খাঁর নেতৃত্বে শিবাজী অধিকৃত ভোপালগড় নামে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কেল্লা যখন আক্রমণ করা হল, তখন দিলির খাঁর সঙ্গে ছিলেন শম্ভাজি স্বয়ং। সুতরাং পিতার বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণও তিনি শেষ পর্যন্ত করেই ফেললেন। দিলির খাঁ এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্যেমে ভোপালগড় দুর্গ জয় করেন।

এখানেও আবার আর একটা গল্প আছে। 

ভোপালগড় দুর্গের দুর্গ-রক্ষক ছিলেন ফ়িরঙ্গজি নরশালা। এমন বীরত্বের সাথে মোগলদের বিরুদ্ধে তিনি লড়লেন, যে দিলির খাঁ স্বয়ং ফ়িরঙ্গজি নরশালাকে অস্ত্র ত্যাগ করে আওরঙজেবের পক্ষে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব দিলেন, বারংবার। ফ়িরঙ্গজি নরশালা সেই লোক নন। শিবাজীর ছেলে শিবাজীর সাথে চরম বিশ্ৱাসঘাতকতা করলেও, সব মারাঠারা শম্ভাজীর মত নয়।  ফ়িরঙ্গজি নরশালা হেসে দিলির খাঁর সে প্রস্তাব উড়িয়ে দিলেন এবং আরো বিক্রমে যুদ্ধ করতে লাগলেন। শেষ পর্যন্ত দিলির খাঁ-র হাতেই তিনি নিহত হলেন, দারুণ লড়াই করে। ইতিহাস সাক্ষী, যে একদিকে যেমন ফ়িরঙ্গজি নরশালা প্রভুভক্তির ঋণ নিজের রক্তে শোধ করে গেলেন, অপরদিকে সেই ছত্রপতি শিবাজীর জ্যেষ্ঠ পুত্র শম্ভাজী মারাঠদের চিরশত্রু আওরঙজেবের সঙ্গে মোগলদের পক্ষে যুদ্ধ করে নিজের জাতের রক্তে নিজের হাতকে রঞ্জিত করলেন।

কিন্তু আওরঙজেবের সাথে শম্ভাজীর এই বন্ধুত্ব বেশিদিন স্থা‍য়ী হল না। কিছুদিনের মধ্যেই দিলির খাঁ এর  সাথে মনোমালিন্যের জন্য শম্ভাজী আওরংজেবকে ত্যাগ করে আবার নির্লজ্জভাবে শিবাজীর কাছে ফেরত আসেন। শিবাজী কোন কথা বললেন না। শম্ভাজীকে গ্রহণ করলেন। কিন্তু শিবাজী নিজের ছেলেকে বিশ্বাস করার মতো জায়গায় আর ছিলেন না। কারণ শম্ভাজী ততদিনে তাঁর কাছে পরিবারের ও জাতির সবথেকে বড় বিশ্বাসঘাতক হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেছেন।

এরকম ছেলেকে কি ওই বিশাল মারাঠা সাম্রাজ্যের উত্তরাধিকার হিসেবে মেনে  নেওয়া যায়?

এর পরে পিতার কাছে ফিরেই শম্ভাজী আর এক মারাত্মক ঘটনা ঘটালেন –তিনি এক ব্রাহ্মণ কন্যাকে ধর্ষণ করে বসলেন।

যে অপরাধের শাস্তি নিশ্চিত মৃতুদণ্ড, শিবাজী তা আর নিজের সন্তানকে দিতে পারলেন না।

মৃত্যুশয‍্যা‍য় শিবাজী সব বুঝে ভগ্নহৃদয় হলেন। ভাবতে লাগলেন, নিজের হাতে গড়া এই বিশাল মারাঠা সাম্রাজ্যের ভবিষ্যৎ কি! 

(ক্রমশ:)

Shivaji vs. Sambhaji: Part 1: 

- Maratha Chhatrapati Shivaji's son Shambhaji has suddenly appeared before us for some reason. Is everything we hear, see or read about him true? I mean, was he a man who could surpass his father Chhatrapati Shivaji? At all? What does history say?

- First of all, it must be said that Shambhaji did not have even a drop of Chhatrapati Shivaji's honest character. Undoubtedly, he was a hero. He was skilled in war. He was also very brave and stubborn. But Shambhaji is completely incompatible with Chhatrapati Shivaji's character. Everyone needs to know that before Chhatrapati Shivaji died, Shivaji himself had imprisoned him in Panhala Fort. One has to think that the father had imprisoned his son in Panhala Fort, when Shivaji was dying. Where would Shivaji try to get his loved ones by his side in the last moments, instead of imprisoning his own son in the fort!! What was Shambhaji's crime?

- Did Shambhaji commit such a crime?

- The crime is unspeakable | It is like smearing lime on the face of the entire Maratha nation. Shambhaji forcibly took away the chastity of a Brahmin woman. However, at that time, rape of women was a common practice among the Maratha soldiers. So, it was no different in the case of Shambhaji. But the goal is somewhere else. On the one hand, Shambhaji's father Chhatrapati Shivaji is trying to reform the society by reining in this ugly habit of the Marathas, and on the other hand, his eldest son Shambhaji, sitting on the tip of his nose, is doing that vile act and cutting off his own nose. The law in this regard was very strict in the reign of Chhatrapati Shivaji. It is far from condoning such vile acts, the only punishment for such crimes was death penalty. Shivaji could not punish Shambhaji with death penalty even though he had committed such a vile crime, just because he was his own son. So he imprisoned Shambhaji in the Panhala fort.

So it is understood that Shivaji, at least the son whom he had imprisoned before his death, would definitely not give the throne to him after his death. Shivaji had no intention that Shambhaji would be the heir of his Maratha empire.

Even if it is said, it is not less to say that Shambhaji's character traits are actually a reflection of the character traits of the Marathas of that time. Chhatrapati Shivaji was a completely different kind of person. Like Prahlad in the Daityakula. However, Chhatrapati Shivaji died of bloody diarrhea on April 3, 1680. Despite many treatments, he did not recover. It is said that he got this condition due to the curse of a certain fakir. He got angry because the Marathas had defiled the dargah of that fakir and cursed Chhatrapati Shivaji. People say that Shivaji died as a result of that. Shivaji died at the age of just 53. And due to his untimely death, there was no way that Shambhaji would become Chhatrapati, because Chhatrapati Shivaji did not want it.

After Shivaji's death, the Marathas regained their form. One does not have to go far to find examples of their gang rape and rape. Who were the Bargis who plundered Bengal? Those Marathas. The Bargis completely destroyed the entire Bengal state under the pretext of collecting the Chauth. At that time, women, regardless of caste and religion, were terribly tortured by those Marathas. History has it that four or five Maratha soldiers would torture each woman together. The torture was to such a degree that it would make one's heart tremble if one heard it. For example, cutting off the breasts of women after consuming them or inserting spears into the genitals of women - all these activities were carried out by the Maratha soldiers without any doubt in the heart of Bengal. They not only committed murder, looting and arson, but they did not spare anyone, young or old. However, women were tortured the most at their hands. Due to the riots of the Bargis, the villages of Bengal were completely destroyed. They carried out such atrocities throughout Bengal and North India that the Marathas became notorious and hated throughout India. In the post-Chhatrapati Shivaji era, it was seen that no Rajput or Jats from North India agreed to stand by the Marathas in the Third Battle of Panipat in 1761. At that time, the Maratha army in North India was completely friendless. The anger and resentment of the common people against the Maratha army had reached such a level that most of the soldiers who fled the battlefield of Panipat after losing were killed by the maddened crowd on the way, at various places. The few soldiers of the Peshawar army who were alive were saved by the grace of the Jat king Surajmal's queen Kishori and later they returned safely to Maharashtra.

An important historical document in the form of Bengali poetry in this regard is the 'Maharashtra Purana' written by Gangaram, a contemporary of Alivardi Khan.

I understand, but what is the reason for the conflict between Shivaji and Shambhaji?

- What history says about the reason for the conflict between Shivaji and Shambhaji is that Shivaji did not want to hand over the reins of his newly formed Maratha Empire to Shambhaji as an inheritance. But what is the reason for that? Because Shivaji was well aware of the character of his eldest son. How right Shivaji was in his assumption was soon proven by subsequent events. What did he do when he knew that Shambhaji was not the heir to Shivaji's throne, and he became furious with his father?

- What…..?

- He went straight to the camp of Shivaji's arch enemy, the Mughal general Dili Khan.

- What is that!!!

- Yes, he went straight to Dili Khan without any thought at all. This is the famous Dili Khan, who, along with Raja Jaisingh, forced Shivaji to sign the Treaty of Purandar in 1665. The two had a previous acquaintance through Shambhaji's childhood visit to Agra with his father. After so long, Dili Khan received Shambhaji with respect and sent an account of all the events to Emperor Aurangzeb. The emperor was very happy to know everything and immediately gave Shambhaji a five thousand mansabdari. The emperor thought that this was the right time to cut iron with iron. The next incident was even more surprising.

- Is there more than that?

- Absolutely, there is. April 2, 1679. When a very important fort called Bhopalgarh, which was occupied by Shivaji, was attacked under the leadership of Dili Khan, Shambhaji himself was with Dili Khan. So he finally took up arms against his father. Dili Khan conquered Bhopalgarh Fort in a bloody battle.

Here too, there is another story.

The fort-keeper of Bhopalgarh Fort was Firangji Narshala. He fought against the Mughals with such valor that Dili Khan himself offered Firangji Narshala to lay down his arms and join Aurangzeb's side, repeatedly. Firangji Narshala was not that man. Although he was extremely disloyal to Shivaji's son, Shivaji, not all Marathas were like Shambhaji. Firangji Narshala laughed and rejected Dili Khan's offer and started fighting even more fiercely. In the end, he was killed by Dili Khan, after a great fight. History is a witness that on the one hand, just as Firangji Narshala paid off the debt of devotion with his own blood, on the other hand, Shambhaji, the eldest son of Chhatrapati Shivaji, fought against Aurangzeb, the eternal enemy of the Marathas, on behalf of the Mughals and stained his hands with the blood of his own race.

But this friendship of Shambhaji with Aurangzeb did not last long. Within a few days, Shambhaji left Aurangzeb due to a disagreement with Dili Khan and shamelessly returned to Shivaji. Shivaji did not say anything. He accepted Shambhaji. But Shivaji was no longer in a position to trust his son. Because Shambhaji had proven himself to him as the biggest traitor of the family and the nation by that time.

Can such a son be accepted as the heir to that vast Maratha empire?

After this, returning to his father, Shambhaji committed another terrible incident – he raped a Brahmin girl.

Shivaji could not give his son a crime for which the punishment was certain death.

On his deathbed, Shivaji understood everything and became heartbroken. He started wondering, what is the future of this vast Maratha empire that he had built with his own hands!

(To be continued)