সমাপতন...

পাঁচ-ফুট ন’ইঞ্চি উচ্চতা। সালকিয়ার বাইরের ঘরের দেওয়ালের গায়ে তাঁর আপাদমস্তক live-size পোস্টার, পৃথিবী কাঁপানো ‘bad’ এর পোশাক আঁটা। বাড়িতে যে-ই আসত, ঢুকেই উল্টোদিকের দেওয়ালের আমার greatest possession দেখে চমকে যেত। সারা দেওয়ালে নানান ক্লিপিং আর পোস্টারের মধ্য এটাই ছিল আমার সবথেকে মূল্যবান ‘ব্যাঙের আধুলি’। আমাদের রক্ষণশীল বাড়িতে, আমি সেই সামাজিকভাবে গেঁজে যাওয়া কুলাঙ্গার, যে ‘Thriller’, ‘Beat it’, ‘Bad’, ‘Bille Jean’, ‘In the Closet’, ‘The way you make me feel’ – এই সব কে সঙ্গীতের মূল মার্গ বলে ধরে চলেছিলাম। যখন কমপ্ল্যান খাওয়ার কথা, তখন গুলে খাচ্ছিলাম, একজন অত্যন্ত খারাপ দেখতে কালো আফ্রো-আমেরিকান পাঁচ বছর বয়েস থেকে কি করে একা নিজের স্টেজ প্রেজেন্স দিয়ে লাইমলাইট শুষে নিতে পারেন, আর সারা পৃথিবী কেঁপে ওঠে তাঁর নিত্য নতুন ভঙ্গীমায়। স্মার্টনেস আর স্টাইল কাকে বলে শেখার, একটা গান গাইতে গাইতে অভিনয় কাকে বলে, শেখার।

সাহস ছিল কারো, একটা হাতে গ্লাভ পরে স্টেজে নেমে পড়ার, বা ফিতে ছাড়া পা গলানো বুট পরে ফেলার, বা ট্রাউজারের নিচেটা গোড়ালীর ওপরে করে ইচ্ছে করে ছোট করে কাটানোর, যাতে সাদা মোজা-দুটো দেখা যায়? দেখেছে আগে কেউ কোনোদিন হাওয়ায় index finger ছোঁড়ার আগে সেটাকে কেমন করে পাকিয়ে ঘুরিয়ে ছুঁড়তে হয়?

...তাও আবার যাতে মিস না হয়ে যায়, তাই তার মাথায় অকারণে একটা লিঊকোপ্লাস্টের ব্যান্ডেজ বাঁধা। পাগলামী কি করে পাগল করে, শেখার।

ছেলেদের মধ্যে জামা খুলে শরীর দেখানোর প্রচলন কিছু নতুন নয়। কিন্তু তার উদ্দেশ্য একটাই, নিজের পেশী প্রদর্শন। কিন্তু এনার হাড়-পাঁজরা ছাড়া কিছুই নেই। তবু দেখাতেন। স্টেজে জামা ছিঁড়ে। তাতে যা পাওয়ার আর স্টাইল, সেটা করতে  খান-ভাইদের, হৃত্বিক রোশন-কে বা টাইগার শ্রফ-কে এখনো বেশ কয়েকবার জন্ম নিতে হবে। সাতচল্লিশ কেজির ফেদার ওয়েট সুপার স্টার ব্রুস-লি ছাড়া আমি ওই দর্প আর কারোর মধ্যে দেখি নি। ব্রুস-লির চেহারাও কিন্তু দেখনীয় ছিল, কারণ ওই প্যাংলা শরীরেই ‘মন্দিরের অনেক কাজ’। কিন্তু এনার বুকের রিব কেজ হারমোনিয়ামের রিডের মত, অনায়াসে গোনা যায়। তা নিয়ে গান গাইতে গাইতে স্ট্রিপ আর ওই মুখভঙ্গী করে কি করে একজন অত্যন্ত স্বাস্থ্যবান ও রূপবান পুরুষের পৌরুষে আঘাত হেনে তার হিংসার কারণ হওয়া যায়, সব আলো-কে নিজের ওপর কেন্দ্রিভূত করিয়ে, শেখার। 

সময় করে একবার দেখবেন, Dirty Diana আর Come Together. বাজি ধরে বলতে পারি, যে লুকিয়ে লুকিয়ে একবার হলেও আপনি চেষ্টা করবেনই। স্বীকার না করলে আলাদা কথা! স্টেজ কে প্রাণ দিয়ে ভাল না বাসলে, গানের প্রতিটি শব্দ এবং এমন কি শব্দের মাঝে পড়ে থাকা স্পেস কে উপলব্ধি না করলে,  ও জিনিস বেরোয় না। ইভ টিজিং আসলে কি, সেই পাঠ ও আমি প্রথম পাই ‘The Way You Make Me Feel’ দেখে। ‘Beat It’ এর ভিডিও তে আনা হল আমেরিকার রাস্তার আসল গ্যাংস্টার-দের। ‘Bad’-এও তাই। কেউ কোনোদিন ভেবেছিল? এভাবে?

 ‘নাম কেনো বলছেন, বোদনাম বলুন... সোত্তি কোথা করুন... নাম হলে বোদনাম ভি হোয়’।

তাই এনাকে নিয়ে অনেক ‘ডিস্পুট’ – ছেলে ছিলেন না মেয়ে, সেস্ক চেঞ্জ করেছিলেন কি না, হঠাৎ ফসসা হলেন কি করে, হোমো ছিলেন কি না, বিলিয়ন ডলারের সাম্রাজ্যে ছোটদের ভালবাসতে গিয়ে child abuse স্ক্যাণ্ডেলে জড়িয়ে পড়া, ইত্যাদি অনেক কেচ্ছা-কেলেংকারী। 

অথচ আমেরিকার প্রেসিডেন্ট, যিনি যখন হয়েছেন, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে রয়্যাল ফ্যামিলি, ফ্রান্সের তাবড় তাবড় মানুষ তাঁর  সঙ্গে দেখা করতে পাগল। লিজ টেলরের মত দাপুটে অভিনেত্রী, আর ্লেডি ডায়ানা তাঁর পরম বন্ধু। জেলে দেখা করতে গেলেন বিদ্রোহী নেলসন ম্যাণ্ডেলার সঙ্গে। ্ম্যাণ্ডেলা ছাড়া পেয়ে দেখা করতে এলেন তাঁর  সঙ্গে। 

শুনেছি মারা যাবার পর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শবদেহ থেকে তাঁর অনুগামীরা চুল-দাড়ি উপড়ে নেয়, স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে রেখে দেবে বলে। আমেরিকা সেই ভ্রান্ত পথে হাঁটেনি। সিএন এন দেখালো একটা টোটাল ফ্রেঞ্জিড আম জনতা সারা আমেরিকা জুড়ে, তাঁর  অকস্মাৎ মৃত্যুতে। হেলিকপ্টারে এ-ওয়ান সিকিওরিটি দিতেই হল তাঁকে, মৃত্যুর পরেও। কি এমন করতেন তিনি? নাচতেন আর গাইতেন। মিঠুন, প্রভুদেবা, হৃত্বিক, জাস্টিন টিম্বারলেক বা গোবিন্দা, কেউই তাঁর সেই বেসিক প্যাটার্ন ভেঙে নতুন কিছু আজও দেখাতে পারেন নি। তাঁরা ওই ভাঙিয়েই চালাচ্ছেন, স্টারডমের অনেকটাই। 

 আমার না হয় রুচী বড় ‘কু’। কিন্তু পৃথিবী শুদ্দু সব্বাই মেনে নিয়েছিলেন যে পৃথিবীর মাটিতে দাঁড়িয়ে চাঁদে হাঁটা (moonwalk) এক তিনিই প্রথম করে দেখালেন ও শেখালেন (Billy Jean, Motown Video)। প্রথম যাঁরা চাঁদে জমি কিনলেন, এই ব্যক্তি তাঁদের মধ্যে একজন। তাঁর 

Single LP ‘Thriller’ এক দিনে যা বিক্রি হল, বা সেই আলবামের আজ পর্যন্ত মোট বিক্রির সংখ্যা, কোনো রেকর্ডই আজ-ও কেউ ভাঙতে পারেন নি। জীবনে একটা গ্র্যামী পেলে একজনের সারা জীবন বর্তে যায়। সেখানে একরাতে একসাথে ‘Thriller’(Best Pop) ‘Billi Jean’ (Best RnB) ‘Beat It’( Best Rock) পেল আট আটখানা গ্র্যামী। সে রেকর্ড ভাঙার সাধ্যও আজও কারো হল না। 

 সমাজের হেন স্তর ছিল না, যেখানে এই ব্যক্তিটির নাম গিয়ে পৌঁছায়-নি। কেন, তা আমি বলতে পারব না। তিন দিন আগে এক অদ্ভুত সমাপতন থেকে নিজেকে এড়িয়ে, নিজের অনুভূতি-কে অনেকটা ছাঁকনি-তে ছেঁকে তবে জর্জ মাইকেল-এর মত একজন মনের মানুষের জন্মদিনের উদ্দেশ্যে একটা ব্লগ না লিখে থাকতে পারি নি। কিন্তু যাঁর থেকে সেদিন নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে, নিজের ওপর অনেকটা নিয়ন্ত্রণ টেনে এনে আজ এই ছড়ানো ছেটানো লেখা টা লিখলাম, এবং যার ফলে আমার musical taste নিয়ে অনেকের-ই মনে প্রশ্ন-চিহ্ন জাগবে, তিনি কিন্তু খাতায় কলমে সারা দুনিয়ার কাছে এক ম্যাজিকাল কিংবদন্তী।  আমার মনের কাছেও...মাইকেল জোসেফ জ্যাকসন।

জর্জ মাইকেলের জন্মদিন, মাইকেল জ্যাকসনের মৃত্যুদিন-ও বটে। ২৫শে জুন।

 

Happy Birthday George Michael...

“…Charity is a coat you wear, twice a year” –what lines! I marvelled and thought all the day….

I was in Class IX in 1990. My birthday that year had been preceded by an event to remember that my fashion icon come English singer had released his solo album ‘Listen without Prejudice’ on 9^th of September. It was not available in Kolkata.

With the new advent of Jhanker Beats in the realm of Bollywood music cassettes, the shops selling cassettes had been much focused on that only, because it took sales to the highest levels ever. Western music in the city of Howarh was not much a thing to be taken care of. The only cassette shop beside Parijat Cinema Hall used to keep my requests personally and only through him and my bosom friend Rana-Da (Sanjib Mitra) I had the immense pleasure to savour up the Western pop and rock music on a regular basis. At school I had no one whom I would share my kind of music with. The dampened walls of my room at the ground floor of our ancestral house at Salkia were full of posters and clippings of the contemporary pop and rock stars. Hindi music never attracted me much until A.R. Rahman came and changed it all. Peopel hardly knwe the the different genres of Pop and Rock and Hard Rock and Sentimetal and RnB and Reggae. For Bengali music I was much taken only to Ajay Chakraborty (much before he turned in to a Pundit) and Manna Dey. For my parents my developing taste for music was rather disappointing, as during the study breaks I really enjoyed watching M-TV and weekly I used to listen to the BBC Top 20 Charts every Thursday at 5:30 pm IST on radio. For keeping a record of the charts status I had a series of diaries. After 9^th September, 1990 ‘Praying for Time’ of George Michael from his latest release ‘Listen without Prejudice’ had been topping the charts for consecutive three weeks straight and I was getting more desperate and exasperated to get it straight. The only hub where I could get it from was Free School Street in Kolkata, the very gold mine of off-beat music sources ever. I wanted a ‘Peacock’ version of the album in the cassette form. ‘Peacock’ was a brand that was damp proof with high fidelity sound quality. It was available only on the streets at Free School Street. The brand was of quality that ‘Symphony’ at Esplanade had never heard of even. Even veteran Sen-da there could not help me in anyway with my expectations. As visiting Kolkata had been an occasion those days, I could get it after two months of wait.

1996. My final year of grduation from Maulana Azad College. Six Years had passed in between. Things had changed a lot. Symphony had satarted keeping the original Virgin Record cassettes with 'Epic' collaboration. But when George Michael came up with an overhauling change in his album ‘Older’, merging pop-philosophy-rock-n-roll-blues together, we were all overwhelmed. None of his songs from the album was banned worldwide and despite its terribly slow rhythmic pattern, when everyone in the world was turning to Disk-kind of music, the score 'Jesus to a Child' turned out to be one of the masterpieces ever. It took the world by storm straightaway.  On 14^th of May, 1996, ‘Older’ was released. I went to Symphony to avail it three days later. Sadly, I came to know, for the first time Virgin Records would not export it to India as from the US Dreamworks records had taken up that deal of export. Things went long and winding. I had to stick to the BBC top charts and Top MTV video slots for under-quality occasional listening to the track without any prejudice, before Symphony at Esplanade provided me that album three weeks later.

I can remember the day in sweating June. Sen-da from Symphony Esplanade had told me that the cassette would be available on a Thursday there. When I reached the shop, that moroning, it was just up with its shutters. I had to kill time for the entire day around the place without food until I could get that at around 7pm in the evening. I knew my friends who are waiting for me to serve them this piece of music would surely treat me to the top-of –the-world. I felt I was carrying  the cassette home “through a throng of foes” around  (allusive phrsasl courtesy James Joyce).

Next day I carried the cover of the cassette to the local barbar-salon as I wanted a prototype ‘V’  as him on my fore-head. When everyone laughed, for that rustic hairstyle prevalent in India I had craved for, I, deeply conceited, laughed within myself, “Forgive them George, because they will take another decade to understand the way you do things, with that looming ‘v’ on your fore-head….”

'V'-ing you, George, on your birthday.....

   

https://www.youtube.com/watch?v=zNBj4EV_hAo

পথ ভাবে, "আমি দেব", রথ ভাবে "আমি".....

আগের দিন থেকে তোড়জোড়। আগের বারের রথ টা মোটেও ভাল ছিল না। একে একতলা, তায় আবার দু-দুটো চাকা ভেঙ্গেই গেল। এবারে প্ল্যান তিনতলা রথের। বাবা অনেক করে বোঝালেন আমাকে, তিনতলা রথের কিন্তু ব্যালেন্সে সমস্যা হবে, উলটে পড়ে যেতে পারে, টানতে গিয়ে। কিন্তু কে কার কথা শোনে। রথ যখন নতুন, জগন্নাথের সেট-ও নতুন চাই। ওই একচালার জগন্নাথ-ও চলবে না। আলাদা আলাদা চাই। তিন থাকে তিনজন বসবেন। 

রথের দিন সকাল বেলায় রথ কিনতে যাওয়া মানে বোকামো। আগের দিন ভাল গুলো বিক্রি হয়ে যায়। পড়ে থাকে সব ডিফেকটিভ পিস গুলো। ফুটপাথের দোকানদার গছিয়ে দিয়ে খালাস। আর তার টিকির দেখা পাওয়া যাবে না, কয়েক ঘন্টা পরেই। তাই আগের দিন সন্ধ্যেবেলাতেই সব সারা হল। তখন ছাঁটা মিছরির (যা এখন মৌরীর সঙ্গে মিশিয়ে মাউথ-ফ্রেশনার হিসেবে আজকাল দেওয়া হয়) এত চল ছিল না। বাতাসা, (গুড়ের বা চিনির), এমনি ভাঙ্গা মিছরি বা নকুলদানা, এই ছিল প্রসাদ। মুড়কী-ও রাখত কেউ কেউ।আমরা মিছরি দিতাম। কেনা হল, রথ, জগন্নাথের সেট, রঙ বেরঙ্-এর মার্বেল পেপার, গঁদের আঠা, ডেণড্রাইট আঠা। আমার মনে খুব আনন্দ প্রথম তিনতলা রথ পেয়েছি, সামনে আবার দুটো সাদা ঘোড়া লাগানো, পাতলা টিনের পাত দিয়ে। রথ চললেই সেই ঘড়ঘড়ানীতে ঘোড়াগুলো এমন কেঁপে কেঁপে উঠছে, যেন তাদের-ও প্রাণ আছে। বাজার থেকে ফিরতে একটু বেশি-ই সন্ধ্যে হয়ে গেল। রথের দিন হাফ ছুটি। তাই ইস্কুলেও যেতে হবে। পড়াশোনা করতে বসতে তাই বাধ্য। পড়তে বসলেও মন কি আর বসে। খালি নানা ছুতোয় উঠে শোয়ার ঘরের এক কোনে থাকা রথটাকে একবার করে দেখে আসা, আর কল্পনা করা, কাল কি কি দিয়ে কিভাবে সেই রথ কে সাজিয়ে, বাকি সবার রথের থেকে বেশি সুন্দর করে তুলতে পারা যায়। মা আমার বারংবার ওঠা দেখে রেগে গিয়ে বলল, বেশি বাড়াবাড়ি করলে কাল আর রথ টানতে দেওয়া হবে না। ভয়ের চোটে, সব পড়া খুব তাড়াতাড়ি শেষ করে খেয়ে দেয়ে শুয়ে পড়লাম। চোখ বুজে মটকা মেরে ছিলাম অনেকক্ষণ। আমার স্বপ্নরথ – সবাই হাততালি দিচ্ছে, এত সুন্দর সাজানো হয়েছে। কেউ প্রণামী হিসেবে চার-আনা, আট-আনা দিচ্ছে না। হয় একটাকা না হয় দু টাকা। বার বার মিছরি প্রসাদ শেষ হয়ে যাচ্ছে, আবার বাড়ি গিয়ে আনতে হচ্ছে। কখন আমার মটকা মারা স্বপ্নের সঙ্গে ঘুমের স্বপ্ন এক হয়ে গেল জানতে পারি নি। সকালে উঠে আবার পড়া। মন নেই। তবুও নম নম করে যতটা হয়। নতুন জগন্নাথ-দের খবরের কাগজে মোড়া। সেই যে বাজারে সন্ধ্যের আলো আঁধারী-তে একবার দেখতে পেয়েছিলাম, আর সুযোগ হয় নি। মা-কে বলতেই বলল, কোথায় ভেঙে-চুরে যাবে! একদম ইস্কুল থেকে ফিরে এসে খুলিস। 

বেলুড়ে আমরা যে বাড়িতে থাকতাম, তার পিছন দিকে একটা বড় বাগান ছিল। কলকে, টগর, জবা, বাহারে, লতানে অনেক রকমের গাছ ছিল। পাড়ায় অন্য কোথাও গাছ বলতে সেরকম কিছু ছিল না। সেই সবের ডাল-পাতা-ফুল দিয়ে আমি রথ সাজাতাম বাবার সাহায্যে। বাবাও ইস্কুল শিক্ষক। ছুটি নেই। আরোই যেতে হবে। মা-কে তাই বলে গেলাম, সেদিন যেন পাড়ার কেউ আমাদের বাড়ির গাছের ডাল-পাতা-ফুল কিছু যেন নিয়ে যেতে না পারে, লক্ষ্য রাখতে। 

ইস্কুলে সেদিন আর কিছুই হল না সেরকম। শুধু শুধু যাওয়া। ফেরার পথে বৃষ্টি শুরু হল, আকাশ কালো করে। উফ! ভগবান, আজই এত বৃষ্টি কোথা থেকে এল! থামিয়ে দাও! দেখ, তোমারি আমার নতুন কেনা রথে চাপা হবে না! বিশ্বকর্মা পুজোর দিন-ও তুমি এরকম করেছিলে। একডজন ঘুড়ি আর দু সপ্তাহ ধরে কাচ গুঁড়িয়ে হাজার মাঞ্জা দিয়ে, সারাদিন বসেই থাকতে হল, গালে হাত দিয়ে। যতটুকু বৃষ্টি থেমেছিল, একফোঁটা হাওয়া ছিল না কোনো দিকে। ঠুনকি মেরে হাতে ব্যাথা হয়ে গেলেও ঘুড়ি আর বাড়াই গেল না। তে-দিয়ে সোজা কলকাঠি ধনুক হয়ে গেলেও চিত খেয়ে খেয়ে পড়ে গেল। সেরকম করে রথযাত্রা টা দয়া করে পণ্ড কোরো না! – এই সব বলতে বলতে বাড়ি পৌঁছে গেলাম।

মা বাগানের গাছপালা থেকে যা যা সম্ভব, রথ সাজাতে সবই যোগাড় করে রেখেছে। বাবার আসতে তখনো দেরী আছে। কোনোমতে নাকে মুখে গুঁজে আঠা আর মার্বেল পেপার নিয়ে বসলাম। এবারে এমন ঘেরা ঘিরব যে পাশ থেকে কেউ দেখতেই পাবে না! কাগজ লাগানো তখন প্রায় শেষের দিকে। বাবা এসে হাজির। সাদা ক্রচেট সুতো (আসল উচ্চারণ ‘ক্রশে’) দিয়ে ডাল-পালা-ফুল বেঁধে রথের চারিদিক সাজানো হল। বেশ বাহারে হয়েছে কিন্তু। কিন্তু বাবা খুব বিরক্ত হলেন। এমন কাগজ দিয়ে চারিদিক মোড়া হয়েছে যে দেবতারা অন্ধকারের মধ্যে। দেখাই যাচ্ছে না। বেশি সামনে আনলে আবার মূর্তি উলটে যাওয়ার ভয়। কিন্তু কি করা যায়! তখন তো কোথায় সহজলভ্য এল-ই-ডি! বাবা তখন সব মূর্তির কোমরে সুতো পেঁচিয়ে সামনের দুপাশের থামের সঙ্গে শক্ত করে বেঁধে দিলেন। এর পড়ে যাওয়ার ভয় রইল না। অত গাছ গাছালির ভারে টানার সময়ে রথ যাতে নিজেই না উলটে যায়, তাই ঘুড়ির কল খাটানোর মত তে-কোনা করে দড়ি বাঁধা হল। বার বার মনে করিয়ে দেওয়া হল, যে কোনো অবস্থাতেই যেন রথের দড়ি মাটিতে না পড়ে। সে বড় অমঙ্গলে কান্ড। বিশ্রামের সময়ে দড়ি কে আলতো করে পেঁচিয়ে যেন রথের ওপর রাখা হয়। প্রসাদের বাটি হল পিতলের। পুরী থেকেই আনা। মাঝখানে শ্রী বিষ্ণুর পদযুগল খোদাই করা। তাতে দেওয়া হল মিছরি। উফ! আমি ভাবতেই পারছিলাম না যে ওটা আমার রথ। বাইরে বেরোলে, হৈ হৈ রৈ রৈ পড়ে যাবে। সবার কেমন লাগল তার প্রতিফলন হবে মিছরি প্রসাদ কত তাড়াতাড়ি শেষ হয়।

বৃষ্টি থেমে গিয়েছে। আকাশ যেন শরৎ-কাল। রাস্তায় নামল রথ, অনেকের রথের সঙ্গে। মামু বলে আমাদের বন্ধুদের এক মামা প্রত্যেকবারে ইয়াবড় এক রথ নিয়ে চোখ ধাঁধিয়ে দেন সবার। আর গোল্ডির রথ ছিল লোহার, চাকা ছিল সাইকেলের বিয়ারং এর। ওদের নিজেদের লোহার কারখানা। আমি জানতাম এই দুজন-কে টেক্কা আমার রথ দিতে পারবে না। শুধু আগের বারের মত রথের চাকা ভেঙে না যায়। আর ঠাকুর-রা যেন অনেক প্রণামী পান। ওই প্রণামী যত উঠবে সব আট-আনায় ভাঙ্গিয়ে কাল সকালে ইস্কুলে যাওয়ার সময়ে কালি মন্দিরের সামনে বসা সব ভিখিরীকে যেন বিলিয়ে দিতে পারি। হে ভগবান, এবার যেন সবাই পায়, কেউ যেন বাদ না যায়!

Movie Classics & Aritificial Intelligence

গেল, গেল, গেল, সব গেল রে! বাপ-ঠাকুদ্দার বানানো ভিটে, কেউ রঙ করে! তাহলে আর ওই প্রাসাদোপম পুরোনো বাড়ির Vintage Value রইল কোথায়। এমন classic সম্পদ কেউ রঙ চাপিয়ে নষ্ট করে!

Mr. Rakib Rana, a learned professor from Bengal base working in the US with his astounding proceedings in the realm of Artificial Intelligence and Robotics, has experimentally put some clips of the unforgettable classic movies of his favourite directors like Stayajit Ray, Rittwik Ghatak, Akira Kurosawa and Charles Spencer Chaplin keeping Ray in the frontline. Mr. Rana has endeavouerd to show that how AI can work as perfect as human mind in replicating black and white movies with colours, frame to frame. Mr. Rakib’s outstanding proclivity to Bengali movie classics has driven him to choose frames from the directors he loves the most. He never expected a boomerang of protests from the fundamentalists in his venture of using the movie clippings as mere samples of an experiment having no realtion to film making or anything related to films.

The fundamentalists who know less about the cult of ‘cinema’ and shout much are reacting like the allusion in the very beginning. Their thoughts are very puritan in nature. They do not protest when all time favourites like The Lion King and Sholey turn into 3D. However, they think that the doomsday has arrived when the BnW classics are artificially added pallor of colour just for the sake of experiment of something of other kind. Mr. Rana is never wrong with his premonition that a day will come when these classics will be turned into 3Ds. 

Mr. Rana's experiment was never with the effort to succeed in finding ready formulae for transformation of the classics from BnW to colour. He was keen looking for some perfect sample to experiment on with his findings of AI which works with a prefect prototypicality of human mind. We have a notion that AI is not able to reach the levels of human perceptions and imagination. Mr. Rana with the use of these samples has proved the notion all wrong. He never proposed to challenge or dared overriding the eternal value of the classics in BnW as he believes that just adding colours and 3Ds to the classics can never tarnish neither the films in original nor the names of their directors. In fact, I believe, this conversion may attract many of the common youth who have no interest in the classics just because they are too classical, outdated and drab, badly lacking the vigour and vibrance of the modern-age movies. 

The puritan fundamentalists are hard on their nostalgia with these movies rather than seeing what advent has been made in the realm of AI. Changing the visual medium of the movies is not the objective here. Moreover, they are failing to understand that experimenting on the basics never kills the basics. In turn, the basics are rejuvenated with a whole new spirit to explore the minds of the people to whom it was all unforeseen. Though little far-fetched, it is like Kishore Kumar singing Rabindrasangeet without following the strict protocol of notations as had been laid down by Rabindranath Tagore himself. Kishore Kumar's single album on Rabindrasangeet turned popular among the mass and still retains its popularity and more people, who have hardly any connection with the classic culture, from the base level had come to know about the full lyrics of the songs sung by him along with the knowledge that those were Rabindrasangeets. Kishore's album had hardly any effect on the veterans of Rabindrasangeet like Suchitra Mitra, Debabrata Biswas or Sagar Sen. Lately, various Bangla Bands and contemporary singers are trying their new compositions with Rabindrasangeets. Does that kill either Rabindranath and his creations in the minds of the people at large?

Thus, out-of-the-objective of Mr. Rana, even if the classics in BnW are transformed into Colours, what's the harm done if even some thousands of more people come to know about Ray and Ghatak and Chaplin and Kurosawa and take some interest in them! Does that make anyone insecure? If so, it is that very person who lacks the qualities to survive.  Ray or Ghatak or Chaplin or Kurosawa et al never has this crises in them that their works may die too young just because a professor added AI colours to their films to show us all the future of robotics. 

Thanks to you all who are about to kill Mr. Rana for this two-and-half-minute video he has created to show the world how marvellous is the AI, for making Ray, Ghatak, Chaplin and Kurosawa bringing back to life.

I believe most of them, who watch this clip shall revert back to the originals to see and discover or re-discover, what masterpieces those works had been and the Gen Y would come to know under whose shadows the world of cinema is running still and whom do the directors of modern cinema follow and salute, and without studying whom any course in film-making remains incomplete. 

Watch the clip:

https://youtu.be/syifZ2Ry-tU