Monday, 8 September 2025

কেলেংকারিয়াস- পুলুদা ভার্সাস বাবু (via মাণিক বাবু)

(চরিত্রলিপি:

বাবু: সন্দীপ রায়

মাণিকদা: সত্যজিৎ রায়

লিখছেন: সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় তাঁর ডায়েরী-তে)

 ৮. ১.৯০

 আমাকে মার্টিন যা বলেছে তাতে জেনেছি বাবু 'শাখা প্রশাখা'র জন্য আড়াই লাখ টাকা নিচ্ছে। অন্যান্য টেকনিশিয়ানদের সঙ্গে কথা বলে, তাদের খণ্ড খণ্ড গল্প জোড়া দিয়ে যা দাঁড়াচ্ছে যে তারা যা পায় তার তিনগুণ হিসেবে টাকা নিচ্ছে। (অবশ্য তাতেও বাবুর আড়াই লাখ হয় না)। এও জানলাম, এই বাজেট দিতে মাণিকদাকে তিনদিন ধরে Persuade করতে হয়েছে।

মাণিকদা আমাকে যা বলেছিলেন তা হল দেপাদু মাণিকদাকে অফার দিয়েছিল, মাণিকদা যে বাজেটে ছবি করেন, সেই বাজেটে একটা ছবি করে দিতে এবং এ জন্য মাণিকদা equal partner হবেন। এই বাজেট বাংলা ভাষায় তোলা ছবির জন্যে অস্বাভাবিক ভাবে inflatedঅন্যায়টা হচ্ছে আমাকে বিদেশি ছবির ক্ষেত্রে যা fair তা না দিয়ে অনেক কম টাকা দিচ্ছে। আমি 'লা নুই'তে দশ হাজার টাকা per day নিয়েছিলাম। বাংলা ছবিতেই আমার রেট 5000 per dayএরা যা তাতে দাঁড়ায় 7000 per dayআমার টোটাল টাকা স্থির হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। স্থির কিন্তু French Co করেনি। স্থির করেছে বাবু, যে নিজে ২১/২ লাখ ও যার স্ত্রী ১/২ লাখ নিচ্ছে। যাদের কেউ চেনে না, অন্তত আমার চেয়ে বেশি চেনে না। এখন মাণিকদার ছবি আমি পয়সা না দিলেও করব। কিন্তু এত exploitation- এবং তাও মাণিকদা নয়।

মাণিকদা বাবুকে দাঁড় করানোর জন্যে কী না করছেন। গুপী বাঘা 3rd part লিখে দিলেন, তার গানও music করে দিলেন- costume করে দিলেন, Set এর sketch ও বোধহয় করেছেন। অন্তত Active help তো নিশ্চয়ই করেছেন। এর পরে ওর লোকজন মন্ত্রীকে ধরে ২৮ লাখ টাকা পাইয়ে দিয়েছে ছবি করার জন্যে। এসব সুবিধে অন্য কোনও director-ই পায় না, মাণিকদাও পাননি। এতে করে বাবু শুধু খঞ্জই হচ্ছে না, বাবুর চরিত্রে ক্ষুদ্রতার দোষ লাগছে- কোন প্রায়শ্চিত্তে তা কাটবে জানি না। 

আমার remuneration নিয়ে আমি দু'-একটা কথা Production-এর লোকদের জানানোর পর থেকে বাবু, বুনি, বউদি এমনকী মাণিকদারও ব্যবহার বদলে গেছে আমার সম্বন্ধে। কেউই বুঝতে দিচ্ছেন না, মাণিকদা তো নয়ই। কিন্তু অন্য তিনজনের ব্যবহারে যেন বোঝা যাচ্ছে।

 হয়তো আমার observation ভুল। ভুল হলে খুশি হব। সত্যি হলেও কিছু করার নেই। আমি দুর্ব্যবহার করে ছোট হতে যাব না। মন একটু ছোট হয়ে যা-ছোট মনের মানুষ দেখলে, এই যা। আর মাণিকদার সঙ্গে কাজ করার যে আনন্দ, তার যেটুকু shot-এর বাইরেও উচ্ছ্বসিত হয়- সেটুকুও শুকিয়ে যায়। নিরানন্দের মধ্যে মন চলে যায়।

 Collcted from the diary of Soumitra Chattopadhyay

Collected by: Amit Ranjan Biswas

Published on 07.09.2025 Robbar (Sambad Pratidin)



 

No comments: