ভরা কোটালে...আজ...
রামকৃষ্ণপুর ঘাট
হাওড়া
বিকেলঃ ৩ঃ৫০
কত বয়স হবে বলুন তো? কোথায় পড়ে...? কোন স্কুলে? (আমাদের ইস্কুলে Madhya Howrah Sikshalaya ছাত্র চেয়েও পাই না, সব শিক্ষকরা Toppers হওয়া সত্ত্বেও) আমি আমার ছেলে-কে কাল ই বলছিলাম, আমরা কোথাও না কোথাও খানিকটা হলেও privileged তো বটে...সে যা পাচ্ছে, না চাইতেই, তা ক'জন পায়...কিন্তু অবশ্যই তা অর্জন করতে হয়েছে, আমাদের...গাছ থেকে পড়ে হঠাৎ privileged হই নি আমি আর তার মা...শুরুতে ৫০০ টাকার কাজ করেছি মাস গেলে...শিখেছি অনেক কিছু...তার বিনিময়ে...কিন্তু সবাই তো চাইলেও সেটা পায় না...দাঁত কামড়ে পড়ে থাকলেও নয়...
আমার সামনে গঙ্গাজল তুলে দিল...২০ লিটারের জ্যারিকেন হাতে (হাতে হ্যারিকেন-ও বটে, এদের)...সায়েব বলল, (পাশে পার্কিং-এ ২০ টাকা দেবেন, ঘন্টা প্রতি, সে ৫ মিনিট-ই হোক বা এক ঘন্টা, যদিও মিউনিসিপ্যালিটির বাঁধা রেট ১০টাকা/প্রতি ঘন্টা),
"কি রে জল ঠাণ্ডা না গরম?"
"ঠাণ্ডা আছে বাবু! ই লিয়ে চার বার জলকে নামলাম।"
"কত টাকা নিবি? তোর থেকে তো এটা বেশি বড় লাগছে!"
(উনি নিজেই দিয়েছেন, ২০ লিটারের জ্যারিকেনে গঙ্গাজল ভরতে)
"বিশ রুপিয়া দে দিজিয়ে"!
" জল ভরতে বিশ রুপিয়া!" ( বাবু অজ্ঞান হয়ে যাবেন প্রায়! উনি নিজেই আর ১০ টা ধাপ নেমে এই কাজটা নিজে করতে পারতেন, পয়সা লাগত না, কিন্তু করেন নি। লাগিয়েছেন ১০ বছরের শিশু কে। ওনার বাড়ির একই বয়েসি শিশু এই একই সময়ে গাড়িতে বসে। এ.সি. চালানো। পেট্রোলের দাম ১০০ র কাছাকাছি, তা-ও। বাড়ির বাচ্চার ঘাম যেন না ঝরে!)
"শাল্লা! এই কাজে 'বিশ রুপিয়া'!!! ১০ টাকা দিলুম...এই অনেক! গাড়ির ডিকি তে তুলে দে!"
২০ লিটারের জার নিয়ে আরো একশো মিটার...নাক দিয়ে সর্দি বেরিয়ে যাচ্ছে...হলুদ....গরুর ঠ্যাঙের আকারে...
কাছে ডাকতে বলল,
"কাল বুখার ছিল বাবু! তবু জোলকে নামতে হোয়! কা করে বোলিয়ে!"
আমি ওর ছবি তুলছিলাম...তখন ওর বারো বছরের বোন এসে বলল,
"ফেসবুক মে মত ডালিয়ে..."
"কেন রে??"
" একটা বাবু হামার বড়া বহিন কে লিয়ে এরকম করেছিল, তো এক হপ্তা বাদ ওহ বিক গয়ি! পুরা লা পতা! হমকো ডর লগতা হ্যায় বাবু! মত কি জিয়ে!"
.
.
জানি না কেন, মনে হল গল্প-টা বলা দরকার...
No comments:
Post a Comment