Sunday, 9 December 2018

পড়বে, কিন্তু ক্লাস করবে না...


প্রাথমিক স্তর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় -- আধুনিক পাঠ্যক্রমে সারা ভারতবর্ষ জুড়ে যে তুলকালাম চলেছে, তা যে আজকের ব্যাপার তা নয়। লেখাপড়ার পাঠ্যক্রম-ও একটা ‘কম্প্রিহেনসিভ’ ও ‘কন্টিনিউয়াস’ ইভ্যাল্যুয়েশনের মধ্যে পড়ে। কলেজ স্তরে ছাত্র-ছাত্রীদের ন্যূনতম উপস্থিতি নিয়ে বিতর্ক এবং তা থেকে হাতাহাতি-মারপিঠ-শিক্ষক ঘেরাও- শিক্ষক হেনস্থা, সবই একটা যেন চিরাচরিত আন্দোলন। এর থেকে বেরোনোর  রাস্তা কিন্তু কেউ জানে না। সমাজবিদ্যায় ‘পরম’ বলে কিছু নেই যে! যত ভালই হোক না কেন, তার খারাপ খুঁজে নিতে কতক্ষণ। তাই অনেক ব্যয় ও শ্রমের মাধ্যমে অর্জিত গভীর উপলব্ধির বাস্তবায়ন কখনই ইউটোপিয়া হয়ে উঠতে পারছে না, আর পারবেও না।

পড়বে, কিন্তু ক্লাস করবে না – এই কথাটার অনেক রকমের অর্থ আছে। যে যার মত করে সুবিধা বুঝে এর দিংনির্দেশ করতে পারেন, নিজের ব্যক্তিগত মতকেই সাধারণ বলে চালিত করে। যেমন একটা উদাহরণ দিই – উচ্চমাধ্যমিক স্তরে, দেখা যায় যে বেশিরভাগ ছাত্রছাত্রী ও তাদের অভিভাবক-রা এই চিন্তার শিকার যে এই স্তরে নিজের পড়ার সময়কে বাড়াতে হবে, তাই স্কুল যত কম যাওয়া যায়, ততই ভাল। অনুপস্থিতি মেনে নিতে যে স্কুল যত উদার, সেই স্কুলে এই স্তরে ভর্তি করাই বাঞ্ছনীয়। অথচ মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত ওই ছাত্রছাত্রী এবং অভিভাবকরা খুঁজে এসেছেন এমন এক স্কুল আর তার নিয়মানুবর্তিতা, যা একজন ছাত্র বা ছাত্রীর স্বভাবিক জীবনযাত্রা কে নষ্ট করে দেয়। আর সবথেকে বড় কথা, উচ্চ-মাধ্যমিক স্তরের ঠিক আগে পর্যন্ত এই দম-বন্ধ-করা জীবন-ই ছিল অত্যন্ত গর্বের বিষয়।

গতকাল-ই একটি সুন্দর সন্ধ্যায় একটি ক্লাস সেভেন-এর ছেলের সঙ্গে সময় কাটালাম। গিটার তার প্রাণ। তার বাবা, একজন নামকরা ডাক্তার। তাঁর কাছে শুনলাম, যিনি তাকে শেখাতে আসেন, তিনিও মাঝে মাঝে পালিয়ে যান তাঁর ছাত্রের কাছ থেকে, কারণ কানে শুনে আর দেখে, কোনো টেকনিক্যাল কচকচিতে না গিয়ে, ছাত্র থিওরীর বেড়াজালে আটকে না পড়ে, সব টপকে ‘অ্যাপ্লিকেশন’-এ পৌঁছে গিয়েছে। শিক্ষক তাকে যদি কাজ দেন, নিয়মিত, যেখানে তার ‘ভিশন’-ই উন্মুক্ত, অবারিত নেই কোনো শৃংখল , সেখানে ফল স্বরূপ কি আর অবধারিত হতে পারে? ছাত্রের স্বয়ংক্রিয় জানার তৃষ্ণা নষ্ট হয়ে গিয়ে, তার প্রতিভা একখণ্ড পাথরে পরিত হবে।
সেই পাথরের বোঝা বইবে কে?







1 comment:

Unknown said...

Prasongik o sundor