Saturday, 2 November 2019

২০শে আক্টোবর, ২০১৯ -- অন্তিম গর্ভাঙ্ক


২০শে অক্টোবর ২০১৯ অন্তিম গর্ভাঙ্ক

·         অংশ ১
-        --  আস্পদ্দার কতা দেখ দেখি! মদ খেয়ে পীড়া হয় বলে মদ ত্যাগ কত্তে হবে!-- পীড়া হয় প্রতিকার কর।মেডিকল সায়ান্স হয়েচে কি জন্যে? পীড়া আরাম করে আবার খা।বিচ্ছেদ-মিলনের সুখ পাবি – 

Rich the treasure
Sweet the pleasure
Sweet is the plasure after pain

·         অংশ ২
-“ভাদ্রমাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে শ্রী কৃষ্ণ দৈবকীর গর্ভে জন্মগ্রহণ করিলেন
বাবা! এ তোমার হলপ পড়া নয়, এতে বিদ্যা চাই।
-আই ডু ক্যান। স্যর, ডু স্যর? সান-ইন-ল। ডু স্যর?
-করতো জামাইবাবু, তুমি যদি ঠিক কত্তে পার, তবে তোমাকে আমাই ডেপুটি বাবু করে দেব --ভাদ্রমাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে শ্রী কৃষ্ণ দৈবকীর গর্ভে জন্মগ্রহণ কল্যেন
- ইন দি মানথ অফ অগস্টো স্যর
-তুই যদি স্যর বলবি, তবে তোকে আমি ঘটিরাম করব।
-ইন দি মানথো আগস্টো, আন দি ব্ল্যাক এইট ডেজ,কিষেণজি টেক বার্থ ইন দি বেলী আফ  দৈবকী।

·         অংশ ৩
“Wine is the fountain of thought
The more we drink, the more we think”




এরকম অজস্র, অগুন্তি স্যাটায়ার আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে নাটকের ছত্রে ছত্রে। যিনি নাটক বেঁধেছেন, তিনি জিনিয়াস জিনিষ (alliteration-এর স্বার্থে) দীনবন্ধু মিত্র। তৎকালীন চরমপন্থী স্বাধীনতা সংগ্রামীরা বোমা-বন্দুক দিয়ে যা করতে পারেন নি, ইনি একা কলমের খোঁচায় এমন নীলদর্পন লিখলেন, সায়েবরা সেই ঝটকাতেই কুপোকাত। বিস্ফোরণ পারমানবিক বোমার সমতুল।

সধবার একাদশী’  নামকরণের মধ্যে সে স্যাটায়ার লুকিয়ে আছে, তা নাটকে আদ্যোপান্ত বয়ে নিয়ে যাওয়া খুব দুরূহ কাজ। কিন্তু নিখুঁতভাবে তা সম্পন্ন হয়েছে।

সোহন বন্দ্যোপাধায়-কে অনেক ধন্যবাদ, যে এরকম পিরিয়ড নাটক তো আর হয় না সচরাচর। হলেও তা অন্য আঙ্গিকে। সেই এত পুরোনো নাটকটিকেই  অনুসরন ও অনুকরণ করে অনুরণন তৈরী করতে রীতিমত সাহস লাগে। আর তা দেখিয়েছেন।

নাটকের শুরুতে, ছোট ভূমিকা, যা মূল নাটকে ছিল না, বা মাঝে মাঝে বার্নাড শ এর মত বেশ খানিকটা বর্ণনা, নাটককে আরো অনেকটাই ঋদ্ধ করেছে। সেগুলো-তে দীনবন্ধু মিত্রের কোনো কৃতীত্ব নেই। সবটাই সোহন বাবুর প্রাপ্য।

ঘটনা, বর্ণনা বা ঘটনাস্থল দেখানোর জন্য মঞ্চের পিছনে প্রোজেকশন ব্যবহার করাটা ভালই হয়েছে। কিন্তু শেষের দিকে ব্যাপারটা একটু একঘেয়ে মনে হয়েছে আমাদের দুজনের।

সবথেকে বড় ত্রুটি বলে মনে হয়েছে, আবার-ও আগের নাটকটির মতো শেষে একটা মর‍্যাল প্রিচিং। না বললেই চলত না! আজকের সামাজিক চিত্রপটেও এই নাটকটি যে কালজয়ী, সেটা আলাদা করে না বললেই ভাল হত। দর্শক-দের স্বাধীন ভাবনা-চিন্তার ওপর এভাবে্ ছুরি-কাঁচি চালানো একপ্রকার নৃশংসতা ও একবারেই অনভিপ্রেত!

তবে বুঝতে পারি নি, বুমের-ও এরকম নাটক ভাল লেগে যাবে। শুরুতে একটু কিন্তু কিন্তু ছিল মনে। কিন্তু নিজেই যখন ফিসফিসিয়ে জিজ্ঞেস করল, আমার কেমন লাগছে,আর আমি একটা  লাইভ স্মাইলী ওকে বিনিময়ে দিলাম, তখন বুঝতে বাকি রইল না যে ওর ভাল লাগছে বলেই প্রশ্নটা আমাকে করেছে। বাকিটা সময় তন্ময় হয়েই দেখল নাটকটা। এমনকি ব্রেকে বাইরেও গেল না একবারও। উলটে সেই সময়ে লক্ষ্য করল যে মাঝামাঝি জায়গায় কোন কোন আসন খালি পড়ে আছে, যাতে আমরা আরো একটু ভাল করে দেখতে পাই। তবে শেষ পর্যন্ত আর সে ঝুঁকি নিতেই হল না, কারণ আমাদের বুদ্ধি চুরি করে আমাদের সামনের দর্শকরা অন্য আসনে চলে গিয়েছেন। আর আমাদের দৃষ্টিপথে কোনো বাধাই নেই।

যত চরিত্র আছে, ছোটো-বড়-মেজো-সেজো-ন, সবাই তুখোড় অভিনয় করলেন। স্যাটায়ার-কে যথার্থ ভাবে ফুটিয়ে তোলার অভিঘাত এতটাই, যে দর্শক অত মনোগ্রাহী ডায়ালগে কোনো রকমে হাসির তোড়জোড় করলেও, হাততালি দেওয়ার উপক্রম হলেও, সেই ডায়ালগের পিছনে যে অন্ধকার-কে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে,তা এতই crude grotesque, সেই হাসি আর হাততালি-ও সিঁটিয়ে গিয়েছে।।ফেটে পড়তে পারে নি।আড়াই ঘণ্টা, চোখ সরলো না। যা সকলের অভিনয়, তাতে শুধু কাঞ্চন-এর চরিত্রে যিনি সেদিন ছিলেন, তিনি কোথাও কোথাও একটু কম। হয়তো সেদিনের জন্য কোনো এক অজ্ঞাত কারনে উনি একটু স্তিমিত ছিলেন। পরে আর এরকম হবে না। মহিলা চরিত্রে কুমুদিনী মন কেড়ে নেন। অটল-এর অভিনয় অসামান্য। সোহন বাবুর মত দাপুটে অভিনেতার সঙ্গে সমানে পাল্লা দিয়ে ওই মাপের অভিনয় করে যাওয়া চাড্ডিখানি কথা নয়। ভোলার চরিত্রে অভিনয় দেবাঞ্জনের। সে আমার আর বুমের ব্যক্তিগত স্তরে এতটাই ভাললাগার পাত্র যে আমরা তার অভিনয়ে অভিভূত, আপ্লুত। বোধহয় ওর প্রতি আমাদের দূর্বলতার দরুন একটু বেশি-ই প্রশংসা করে ফেললাম, কিন্তু কোনো মিথ্যে নেই। আচ্ছা, বরং সমতা বিধান করে দিই।  'ভোলা' চরিত্রে অভিনয় অনাড়ম্বর হলেও বেশ মনোগ্রাহী। দীনবন্ধু শেক্ষপীরের (Shakespeare)  নাটকের অনুকরনে ভাঁড় বা jester’ element  বা instrument-টিকে আমাদের সামাজিক প্রেক্ষাপটে ফেলে কি সুন্দর করে ব্যবহার করেছেন, তা সত্যি-ই উপভোগ্য।

নিমচাঁদ দত্ত নিমে দত্ত মধুসূদন দত্তের নকলে  বাবু সমাজ, মধুসূদনের wasted talent  তাঁর অসম্ভব উন্নাসিকতা লিখে তো ফেলেছিলেন দীনবন্ধু মিত্র, ফুটিয়ে তো তুলেছিলেন কলমের ডগা দিয়ে খোঁচা দিয়ে হৃদয়ে রক্তপাত ঘটাতে, কিন্তু দীনবন্ধু যাঁকে যা কল্পনা করে লিখেছিলেন, তা স্টেজে ফুটিয়ে তোলা বেশ কষ্টসাধ্য। আমি তো আর দীনবন্ধু মিত্রের সময়ে গিয়ে এই নাটকের অভিনয় কোনোদিন দেখি নি, তবে সোহন বাবু যা করলেন, নিমে দত্তের ভূমিকায়, তা ঠিক বর্ননা করার জন্য যথার্থ শব্দ খুঁজে পাচ্ছি না। অনেকটা লিখব ভেবেছিলাম। কিন্তু এত ভাল, ভাল নয়। শেষে তাই ভাল-র তোড়ে খেই হারিয়ে গেল।

বুম তো ভেবেই পেল না, মানুষ-টা কি করে পর দু-টো নাটকে, দু-রকম মুডে, দুটো এক্কেবারে ভিন্ন চরিত্রে এ-রকম দাপটে অনায়াসে নির্ভূল ভাবে অভিনয় করে গেলেন! কি করে।

বেরিয়ে শুধু বলল,নিজের মনে মনেই, বিড়বিড় করে rigorous rehearsal  লাগে। তারপর সারা রাস্তা দু-জনের মধ্যে আর কোনো বাক্যবিনিময় হয় নি।

মৌনতা ভেঙ্গেছিল সেদিন ডিনারে চিকেন বিরিয়ানী আহারে